বিশ্বকাপের আগে জাপানের কাছে হার ব্রাজিলের! চিন্তা বাড়ছে নেমারের চোট নিয়ে

০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও ব্রাজিলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দিল জাপান। টোকিয়োয় আয়োজিত প্রীতি ম্যাচে পাঁচ বারের বিশ্বজয়ীদের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিল এশীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা শক্তি।

ম্যাচের শুরু থেকে দাপট ছিল ব্রাজিলেরই। মাঝমাঠের দখল নিয়ে নেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রেরা। জাপানের ফুটবলারেরা খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। জাপান মূলত প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলছিল। ঝাঁজ ছিল ব্রাজিলেরই বেশি। একের পর এক আক্রমণ তৈরি করছিলেন ব্রাজিলীয়েরা। গোলের জন্যও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁদের। ২৬ মিনিটে পাওলো হেনরিকের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ব্রুনো গুইমারেসের কাছ থেকে জাপানের বক্সের মধ্যে বল পান হেনরিক। জাপানের ডিফেন্ডারের বাধা কাটিয়ে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। ৩২ মিনিটে ব্রাজিলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটে জাপানের গোলরক্ষক সুজুকিকে পরাস্ত করেন তিনি। প্রথমার্ধে বিক্ষিপ্ত ভাবে গোলের একাধিক সুযোগ পেয়েছিল জাপানও। কিন্তু আয়োজকেরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।

পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি জাপান। বরং দ্বিতীয়ার্ধে নতুন উদ্যমে আগ্রাসী ফুটবল খেলতে শুরু করেন জাপানের ফুটবলারেরা। ৫২ মিনিটে ব্রাজিলের ডিফেন্সের ভুল কাজে লাগিয়ে জাপানের হয়ে ব্যবধান কমান টাকুমি মিনামিনো। এই গোল লড়াইয়ে ফেরায় জাপানকে। অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলতে শুরু করেন জাপানি ফুটবলারেরা। জাপানকে রুখতে ৫৮ মিনিটে এক সঙ্গে তিন জন ফুটবলার বদল করেন ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলোত্তি। তাতে অবশ্য লাভ কিছু হয়নি। জাপানের আগ্রাসী ফুটবল রুখতে পারেননি তিনি। ৬৩ মিনিটে জাপানকে সমতায় ফেরায় কেইটো নাকামুরা। ডান দিক থেকে আসা ক্রস ব্রাজিলের বক্সের মধ্যে পান নাকামুরা। ব্রাজিলের ডিফেন্ডার ফ্যাব্রিসিয়ো ব্রুনো তাঁকে ট্যাকল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সফল হননি। সমতায় ফেরার পর জাপানের ফুটবলারেরা আরও মরিয়া হয়ে ওঠেন। এর মধ্যেই ৬৮ মিনিটে ব্রাজিলের গোল করার সেরা সুযোগটি নষ্ট করেন লুই হেনরিক। ৭১ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে জাপানের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন আয়াসে উয়েদা। তৃতীয় গোলের পর উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন জাপানের ফুটবলারেরা। ৮৯ মিনিটে ব্রাজিল অবশ্য সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। এই নিয়ে টানা ২০টি ম্যাচে ঘরের মাঠে অপরাজিত রইল ‘সামুরাই ব্লু’রা।

জাপানের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে ব্রাজিল কোচকে জাতীয় দলে নেমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আনচেলোত্তির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁর ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় নেমার রয়েছেন কিনা। জবাবে আনচেলোত্তি বলেছেন, ‘‘নেমার অবশ্যই আমাদের বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় রয়েছে। তবে জাতীয় দলে ফেরার আগে ওকে ফিটনেস প্রমাণ করতে হবে। ফর্মে থাকলে ব্রাজিল দলে যে কোনও সময় ঢুকে পড়তে পারে নেমার। ফিটনসে ঠিক থাকলে শুধু ব্রাজিল নয়, বিশ্বের যে কোনও দলের হয়ে খেলার যোগ্যতা রয়েছে নেমারের।’’ তিনি চান, ব্রাজিল দৃষ্টিনন্দন ফুটবল খেলুক। কারণ ব্রাজিলের ফুটবলারদের সেই দক্ষতা রয়েছে। শুধু সুন্দর ফুটবলই যে সব নয়, সে কথাও বলেছেন আনচেলোত্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.