সৌদি আরবের জন্য বিরাট খবর। দেশের পবিত্র শহর মক্কার আসপাশের ১২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাওয়া গিয়েছে সেনার সন্ধান। এমনিতেই দেশটি তেলের উপরে ভাসছে। তার পরেও ওই সোনার ভান্ডারকে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রিজার্ভ বলে মনে করা হচ্ছে।
সৌদি সরকারি খনিজ অনুসন্ধান সংস্থা মাদেন(Maaden) জানিয়েছে, মানসুরা-মাসারাহ খনির দক্ষিণাংশে খনন করে মাটিতে উচ্চমাত্রার সোনার উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। পরীক্ষাগারে নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতি টন মাটিতে সর্বোচ্চ ২০.৬ গ্রাম পর্যন্ত সোনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানে অত্যন্ত সমৃদ্ধ হিসেবে গণ্য হয়।
মাদেন-এর প্রধান বলেন, ‘এই আবিষ্কার মক্কাকে বিশ্ব সোনার মানচিত্রে নতুনভাবে তুলে ধরবে। এটি সৌদি অর্থনীতির জন্য যেমন বড় খবর। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আবিষ্কার মক্কায় একটি বিশ্বমানের ‘গোল্ড বেল্ট’ তৈরিতে সহায়ক হবে। তাদের মতে, এই অঞ্চলজুড়ে আন্তর্জাতিক মানের সোনার পট্টি গড়ে উঠতে পারে, যা ভবিষ্যতে সৌদি আরবকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশে পরিণত করতে পারে।
বর্তমানে মানসুরা-মাসারাহ খনিতে আনুমানিক ৭০ লাখ আউন্স সোনার মজুত রয়েছে এবং প্রতিবছর প্রায় ২.৫ লাখ আউন্স সোনা উত্তোলন করা হয়। সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ কৌশলের অংশ হল তেল নির্ভরতা কমানো। খনিজ, প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য শক্তিকে জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এই খনি থেকে হাজারো কর্মসংস্থান, বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এবং বৈশ্বিক সোনার বাজারে সৌদি আরবের প্রভাব আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই আবিষ্কার শুধু সৌদি আরবের জন্য নয়, বরং বিশ্ব সোনাবাজারেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। ইতোমধ্যে প্রতি ১০ গ্রামে সোনার মূল্য ১১১৫.৮৪ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ফলে নতুন এই খনি বৈশ্বিক সরবরাহ বাড়াতে এবং বাজার স্থিতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের মজুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে (৮,১৩৩ টন), এরপর রয়েছে জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও রাশিয়া। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সৌদির নতুন এই স্বর্ণভাণ্ডার বৈশ্বিক বাজারে নতুন প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।