ইংল্যান্ডকে বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও তীরে এসে তরী ডুবল নিরাগ সুলতানাদের। ইংল্যান্ডের মতো দক্ষিণ আফ্রিকারও ৭৮ রানে ৫ উইকেট ফেলে দিয়েও ম্যাচ বের করতে পারলেন না তাঁরা। বাংলাদেশের ৬ উইকেটে ২৩২ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯.৩ ওভারে ৭ উইকেটে তুলল ২৩৫ রান। একাধিক সহজ ক্যাচ ফেলে ম্যাচ হাতছাড়া করল বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট দল।
জয়ের জন্য বিশাখাপত্তনমের ২২ গজে ২৩৩ রান তাড়া করতে নেমে ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান ওপেনার তাজ়মিন ব্রিৎস (শূন্য)। অধিনায়ক লরা উলভার্ডের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিন নম্বরে নামা অ্যানিকি বশ। তাঁদের জুটি ওঠে ৫৫ রান। কিন্তু উলভার্ড ৫৬ বলে ৩১ রান করে আউট হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পর পর আউট হয়ে যান বশ (৩৫ বলে ২৮) এবং চার নম্বরে নামা অ্যানিরি ডার্কসেন (২)। দলকে ভরসা দিতে পারেনি ছ’নম্বরে নামা সিনালো জাফটা (৪)। ১ উইকেটে ৫৮ থেকে ৭.১ ওভারের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৭৮।
চাপের মুখে রুখে দাঁড়ান পাঁচ নম্বরে নামা মারিজ়ানে কাপ এবং সাত নম্বরে নামা ক্লো ট্রায়ন। তাঁদের জুটিতে ওঠে ৮৫ রান। তাঁদের জুটি লড়াইয়ে ফেরায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। একই সঙ্গে চাপে ফেলে দেয় ভাল জায়গায় থাকা বাংলাদেশকেও। কাপ করেন ৭১ বলে ৫৬। মারেন ৪টি চার এবং ১টি ছক্কা। ট্রায়নের ব্যাট থেকে এল ৬৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস। মারেন ৬টি চার এবং ১টি ছয়। দ্রুত খুচরো রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। শেষ দিকে লড়াই করলেন নাদিন ডে ক্লার্ক এবং মাসাবাটা ক্লাস। দু’জনে অপরাজিত থেকে তিন বল বাকি থাকতে জয় ছিনিয়ে নিলেন। ক্লার্ক ২৯ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকলেন। ক্লাস করলেন ১৩ বলে ১০। শেষ দিকে চাপ ধরে রাখতে পারলেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটারেরা। আলগা বোলিং এবং খারাপ ফিল্ডিং করলেন তাঁরা। একাধিক সহজ ক্যাচ ফেলার মাশুল দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারেরা। বাংলাদেশের সফলতম বোলার নাহিদা আক্তার ৪৪ রানে ২ উইকেট দিলেও দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ৪৮ এবং ৫০তম ওভারে প্রত্যাশা অনুযায়ী বল করতে পারলেন না।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সুলতানা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম পাঁচ ব্যাটারই রান পেলেন। ওপেনিং জুটিতে ফরজানা হক এবং রাবেয়া হায়দার তোলেন ৫৩ রান। তবে তাঁরা খরচ করে ফেলেন ১৬.১ ওভার। ফরজানা ৭৬ বলে করেন ৩০। রাবেয়া ২৫ রান করতে খরচ করেন ৫২ বল। তিন নম্বরে নামা শারমিন আখতার ৫০ রান করলেও ৭৭ বল নেন। তিনি ৬টি চার মারেন। রান তোলার গতি বাড়ান চার নম্বরে নামা সুলতানা এবং পাঁচ নম্বরে নামা স্বর্ণা আক্তার। সুলতানা ৫টি চারের সাহায্যে ৪২ বলে ৩২ রান করেন। তবে বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয় স্বর্ণার ৩৫ বলে ৫১ রানের আগ্রাসী ব্যাটিং। তাঁর অপরাজিত ইনিংসে রয়েছে ৩টি করে বাউন্ডারি এবং ওভার বাউন্ডারি। শেষ দিকে রীতু মনি ৮ বলে ১৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৩টি চারের সাহায্যে। দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার নুনকুলুলেকো এমলাবা ৪২ রানে ২ উইকেট নেন।
বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় বিশ্বকাপে চাপ বাড়ল ভারতেরও।৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইংল্যান্ড। ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবলের তৃতীয় স্থানে উঠে এল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে হরমনপ্রীত কৌররা। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন নিউ জ়িল্যান্ড। বাংলাদেশ রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। তাদের পয়েন্ট ৪ ম্যাচে ২। ৩ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে শ্রীলঙ্কা। সকলের শেষে রয়েছে পাকিস্তান। ৩ ম্যাচে কোনও পয়েন্ট পাননি ফতিমা সানারা।