ইংল্যান্ডকে বাগে পেয়েও মঙ্গলবার হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। বুধবার অস্ট্রেলিয়াকে কোণঠাসা করেও জিততে পারল না পাকিস্তান। মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপের ম্যাচে সাত বারের বিশ্বজয়ীদের কাছে ফতিমা সানারা হারলেন ১০৭ রানে। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া করে ৯ উইকেটে ২২১। জবাবে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হল ৩৬.৩ ওভারে ১১৪ রানে। এ দিনের জয়ের ফলে তিন ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এল অস্ট্রেলিয়া।
টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাক অধিনায়ক। কলম্বোর ২২ গজে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বিপদে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। তবু তারা ৯ উইকেটে ২২১ রান তুলল বেথ মুনির ১০৯ এবং অ্যালানা কিংয়ের অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংসের সুবাদে। নবম উইকেটের জুটিতে মুনি-কিং তুললেন ১০৬ রান। এই জুটিই ব্যাকফুটে ঠেলে দিল এক সময় চালকের আসনে থাকা পাকিস্তানকে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দিকের ব্যাটারেরা দাঁড়াতে পারলেন না। কলম্বোর মন্থর ২২ গজে পাক বোলারদের সামলাতে সমস্যায় পড়েন অ্যালিসা হিলি (২০), ফোবে লিচফিল্ড (১০), এলিসে পেরি (৫), অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (১), অ্যাশলে গার্ডনার (১), তাহিলা ম্যাকগ্রা (৫), জর্জিয়া ওয়ারহ্যাম (শূন্য), কিম গার্থেরা (১১)। বেহাল দশা দেখে বিশ্বাস করাই কঠিন হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া মহিলাদের ক্রিকেটে সেরা দল। তারা কেন সেরা, সেটা প্রমাণ করে দল মুনি-কিং জুটি। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ২২ গজের এক প্রান্ত আগলে প্রায় অসহায়ের মতো দাঁড়িয়েছিলেন মুনি। কোনও সতীর্থেরই সঙ্গ পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নামা কিংকে সঙ্গী হিসাবে পান। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দেন তাঁরা। ব্যাটিং ধস আটকানোর পর ইনিংস গড়ার দিকে মন দেন। শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের রান পৌঁছে দেন ভদ্রস্থ জায়গায়। মুনি খেললেন ১১৪ বলে ১০৯ রানের ইনিংস। ১১টি চার দিয়ে নিজের ইনিংস সাজালেন। চাপের মুখে ঝুঁকিহীন ব্যাট করার চেষ্টা করেছেন। অন্য দিকে, কিংয়ের ব্যাট থেকে এল ৪৯ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৩টি করে চার এবং ছক্কা মারলেন। মূলত তাঁর ব্যাটেই স্বস্তি ফেরে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে।
পাকিস্তানের সফলতম বোলার নাশরা সান্ধু ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২৯ রানে ২ উইকেট রামিন শামিমের। ৪৯ রানে ২ উইকেট ফতিমার। অস্ট্রেলিয়ার শেষ ইনিংসে তিনি খরচ করলেন ২১ রান। ৩২ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন সাদিয়া ইকবাল। পাক বোলারদের দাপটের দিনেও হতাশ করলেন ডায়ানা বেগ। তিনি ১ উইকেট পেলেন ৭৪ রান খরচ করে।
জয়ের জন্য ২২২ রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যের মুখে পড়ল পাকিস্তানও। সিদরা আমিন ছাড়া কেউ ২২ গজে দাঁড়াতেই পারেননি। প্রথম থেকেই ধারাবাহিক ব্যবধানে উইকেট হারায় পাকিস্তান। সাদাফ শামস (৫), মুনিবা আলি (৩), সিদরা নওয়াজ় (৫), নাতালিয়া পারভেজ (১), ইমন ফতিমা (শূন্য), অধিনায়ক ফতিমা (১১), ডায়ানা (৭) পর পর সাজঘরে ফিরে যান। শুধু সিদরা করেন ৫২ বলে ৩৫ রান। ৫টি চার মারেন তিনি। ৩১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরই পাকিস্তানের জয়ের আশা এক রকম শেষ হয়ে যায়। ফতিমাদের বাকি লড়াইটা ছিল কেবল নিয়মরক্ষার। ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর শামিম (৬৪ বলে ১৫) এবং সান্ধু (৪১ বলে ১১) জেতার চেষ্টা ছেড়ে টেস্ট ক্রিকেটের মতো রক্ষণাত্মক ব্যাট করতে শুরু করেন। তাতে অস্ট্রেলিয়ার জয় পেতে কিছুটা দেরি হওয়ার বেশি ক্ষতি হয়নি। তাঁদের জুটিতে ওঠে ৬৮ বলে ২৫ রান।
অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার কিম গ্রাথ ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২৫ রানে ২ উইকেট মেগান শাটের। সাদারল্যআন্ড ২ উইকেট পেয়েছেন ১৫ রান খরচ করে। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন কিং, গার্ডনার, ওয়ারহ্যামের।