ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। তা না হলে আমেরিকার ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি লিখে এই আবেদন জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ১৯ জন সদস্য। তাঁদের মধ্যে একাধিক সিনিয়র ডেমোক্র্যাট নেতা রয়েছেন। তবে রিপাবলিকান কোনও নেতা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি।
ভারতের পণ্যের উপর সম্প্রতি ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে এই ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপ বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, ভারত তেল কেনার কারণেই রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থের জোগান পাচ্ছে। ভারত এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে এবং নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের শুল্কে ধাক্কা খেয়েছে ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্ক। এত চড়া শুল্কে আমেরিকায় পণ্য রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা অনেকেই বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছেন। এতেই মার্কিন ব্যবসায়ীদের একাংশ বিপদ দেখছেন।
ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যেরা বলেছেন, ‘‘সেমিকন্ডাক্টর থেকে স্বাস্থ্য, শক্তি— বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমেরিকার উৎপাদনকারীরা ভারতের উপর নির্ভর করেন। ভারতের বাজার বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারগুলির মধ্যে অন্যতম। সেখানে বিনিয়োগ করে অনেক মার্কিন সংস্থা। এ ছাড়া, ভারতের বহু সংস্থাও আমেরিকায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তাতে এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে, নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।’’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘ভারতের উপর নির্বিচারে শুল্ক আরোপ করায় দুই দেশের সম্পর্ক প্রভাবিত হয়েছে। আমেরিকার বাজারে জিনিসের দাম বেড়েছে। মার্কিন সংস্থাগুলি বিশ্বের বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। তা ছাড়া, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতির কারণেই ভারত সরকার রাশিয়া এবং চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে, দাবি মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের। চিঠিতে বলা হয়েছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি।’’
ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যনীতি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনা চলছে। শুল্ক নিয়ে আকচাআকচির মধ্যেই চিনে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা আগের চেয়ে বেড়েছে। এই সাক্ষাতের পর ট্রাম্পও কিছুটা সুর নরম করেছেন। মোদীকে আবার ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে শুল্ক কমাননি।

