আজ ১২ ই জানুয়ারি ২০২০, স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৭ তম জন্মদিনে এবং জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষ্যে ওনার চরণে বিনম্র শ্রদ্ধা এবং প্রনাম জানাই

স্বামী বিবেকানন্দের রচনাবলী আমি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে অনুশীলন করেছি এবং সেগুলি পাঠ করার পরে আমার দেশের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা হাজারগুণ হয়ে যায়” – মহাত্মা গান্ধী

“স্বামী বিবেকানন্দের‘ সম্পূর্ণ জীবন ও শিক্ষা আমার প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি তাঁর দেশাত্মবোধকে বহন করার জন্য তাঁর মহান আধ্যাত্মিকতা নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁর বার্তা কেবল ভারতে সীমাবদ্ধ ছিল না, পুরো বিশ্বজুড়ে ছিল। আমি তাঁর স্মরণে আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করি। ” — জওহরলাল নেহরু

ভারত যত জন বিখ্যাত ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে তার মধ্যে বিবেকানন্দ অন্যতম। যখন কেউ তার মনের সম্পূর্ণ ব্যাপ্তি দেখে‚ সে বিস্মিত হয়।” – ক্রিস্টোফার ইশেরউড, অ্যাংলো-আমেরিকান ঔপন্যাসিক

“বিবেকানন্দ মানুষটি কেবলমাত্র বাগ্মিতার জন্যই এক বিস্ময়। স্বামীজী হলেন মানবতার সম্মান -” উইলিয়াম জেমস, আমেরিকান দার্শনিক

স্বামী বিবেকানন্দ গীতার সমুদ্রকে মন্থন করে চারটি যোগের অমৃত বের করেছিলেন: রাজ যোগ, ভক্তি যোগ, কর্ম যোগ এবং জ্ঞান যোগ।

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন যে হিন্দু শব্দটি কোনও একটি ধর্মকে বোঝায় না, বর্গের এটি সিন্ধু নদীর এপারে বাসকারী সমস্ত লোকদের বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। সুতরাং, এই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা হিন্দু নামে পরিচিত হয়ে যায়।
.
তুমি নিজেকে যা ভাববে , তাই হয়ে যাবে। যদি নিজেকে দুর্বল মনে কতো তবে তুমি দুর্বল হবে; আর যদি নিজেকে শক্তিশালী মনে করো‚তবে শক্তিশালী হবে। “
– স্বামী বিবেকানন্দ
.
“সর্বোচ্চের সন্ধান করো, সেই সর্বোচ্চে লক্ষ্য তাক করো‚ তুমি সর্বোচ্চে পৌঁছে যাবে।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

“ওঠো! জাগো ! নিজের লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমোনা ”
– স্বামী বিবেকানন্দ

শিক্ষার অর্থ হলো ধর্মনিরপেক্ষ ভাবে শেখা যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরিত্র গঠন করে ও মানবিক মূল্যবোধকে অন্তর্ভুক্তি ঘটায়।
– স্বামী বিবেকানন্দ

স্বামী বিবেকানন্দ পরামর্শ দিয়েছিলেন যে শিক্ষাতে সৃজনশীলতা, মৌলিকতা এবং শ্রেষ্ঠত্বের উপর যথাযথ জোর দেওয়া উচিত এবং শিক্ষা এমন একটি মাধ্যম যা মানুষের সমস্ত গোপন ক্ষমতাকে উন্মোচিত করে।
.
ভারতকে জানতে চাইলে বিবেকানন্দকে জানো। তাঁর মধ্যে সবকিছুই ইতিবাচক‚ নেতিবাচক কিছুই নেই।
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিবেকানন্দের বাণীগুলি মানুষকে পরিপূর্ণভাবে জাগ্রত করে তুলেছিল এবং এই কারণেই এটি আমাদের যুবকদের কাজ ও ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীনতার বিভিন্ন পথে অনুপ্রাণিত করেছিল
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন পৌরুষসম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ মানুষ – তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে যোদ্ধা‚ সেইজন্যে তিনি ছিলেন শক্তির উপাসক। তাই তিনি দেশবাসীর উন্নতির জন্য বেদান্তের ব্যবহারিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন
– সুভাষ চন্দ্র বোস

মাথায় কতকগুলি তথ্য ঢুকানো হলো, সারাজীবন হজম হলোনা, অসম্বদ্ধভাবে সেগুলি মাথায় ঘুরতে লাগলো—একে শিক্ষা বলে না। বিভিন্ন ভাবকে এমনভাবে নিজের করে নিতে হবে, যাতে আমাদের জীবন গঠিত হয়, যাতে মানুষ তৈরী হয়, চরিত্র গঠিত হয়।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

স্বামী বিবেকানন্দ ভারতীয় জনগণের আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং পশ্চিমে বেদান্ত দর্শন প্রচারে এবং দরিদ্রদের সেবার উদ্দেশ্যে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

“মস্তিষ্ককে উচ্চ উচ্চ চিন্তায়—উচ্চ উচ্চ আদর্শে পূর্ণ কর, দিবারাত্র মনের সামনে সেগুলি স্থাপন কর, তাহলেই বড় বড় কার্য হবে।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

“যা কিছু তোমাকে শারীরিক‚মানসিক বা আধ্যাত্মিকভাবে দুর্বল করে ;তবে তাকে বিষবৎ পরিহার কর”
– স্বামী বিবেকানন্দ.

“যে ধর্ম জগৎকে চিরকাল পরমতসহিষ্ণুতা ও সর্ববিধ মত স্বীকার করার শিক্ষা দিয়া আসিতেছে, আমি সেই ধর্মভুক্ত বলিয়া নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি। আমরা শুধু সকল ধর্মকে সহ্য করি না, সকল ধর্মকেই আমরা সত্য বলিয়া বিশ্বাস করি। ”
– স্বামী বিবেকানন্দ

শিকাগো ধর্মের সংসদ সম্মেলন “আমি এমন একটি জাতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে গর্বিত, যে দেশটি নির্যাতিত ও সমস্ত ধর্ম এবং পৃথিবীর সমস্ত জাতির শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।”
– স্বামী বিবেকানন্দ, শিকাগো কনভেনশন পার্লামেন্ট অফ রিলিজিনস।
.
যে জাতি পৃথিবীর সকল ধর্মের ও সকল জাতির নিপীড়িত ও আশ্রয়প্রার্থী জনগণকে চিরকাল আশ্রয় দিয়া আসিয়াছে, আমি সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলিয়া নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি। ”
– স্বামী বিবেকানন্দ, শিকাগো কনভেনশন পার্লামেন্ট অফ রিলিজিনস।

শিকাগো সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দ যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তার ফলে তিনি “ঐশ্বরিক ক্ষমতাশালী বক্তা” এবং “পশ্চিমা বিশ্বে ভারতীয় জ্ঞানের বার্তাবাহক” হিসাবে পরিচিত হন।

“ধারণা করা হয়‚ যে স্বামী বিবেকানন্দের দর্শন এবং যে আদর্শ নিয়ে তিনি কাজ করেছেন তা ভারতীয় যুব সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার এক মহান উৎস হতে পারে।”
– ভারতের যোগাযোগ মন্ত্রকের

“ভারতের জগদগুরু হিসাবে আত্মপ্রকাশের জন্য আমাদের প্রয়োজন এমন কিছু পুরুষ ও মহিলা যারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, দক্ষ, আত্মবিশ্বাসী, দেশ ও নিঃস্বার্থতার প্রতি নিবিড় ভালবাসা রাখে।”
-স্বামী বিবেকানন্দ

“স্বামীজী প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের, ধর্ম ও বিজ্ঞানের, অতীত ও বর্তমানের সমন্বয় করেছিলেন। আর সেই জন্যই তিনি মহৎ। দেশবাসী তাঁর শিক্ষা থেকে অভূতপূর্ব আত্ম-সম্মান, স্বনির্ভরতা এবং আত্মপ্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। ”
– সুভাষ চন্দ্র বোস

১৮৯৩ সালে শিকাগোর বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দ তার বক্তব্যে পশ্চিমা পণ্ডিতদের আধুনিক বৌদ্ধিক গণনার বাইরেও ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থার অগ্রগতি মেনে নিতে বাধ্য করেছিলেন।

স্বামী বিবেকানন্দর সাথে জে জে এন টাটার আমেরিকার একটি জাহাজে বৈঠক হয়েছিলো। সেই কথোপকথনের ফলস্বরূপ ব্যাঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এবং বোম্বেতে ( অধুনা মুম্বাই) টাটা গ্রুপের দ্বারা টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

আমেরিকান সংবাদমাধ্যম বিবেকানন্দকে “ভারতের সাইক্লোনিক সন্ন্যাসী”, “ধর্ম সম্মেলনের মহত্তম ব্যক্তিত্ব” এবং “সম্মেলনে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ব্যক্তি” হিসাবে অভিহিত করেছিলো।

“এই ধর্মসম্মেলনের সময়, স্বামীজী তাঁর জাদুকরী বাগ্মিতার দ্বারা শ্রোতাদের মনমুগ্ধ করেছিলেন এবং আমেরিকার আধ্যাত্মিক বিকাশের উপর একটি অবিস্মরণীয় চিহ্ন রেখে গেছেন।” ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারী, স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন (Abroad in America‚Visitors to the new nation)
.
এটি ছিল বেদের প্রাচীন ঋষিদের কণ্ঠস্বর, যা ভালোবাসা ও সহনশীলতার সুন্দর কথা বলে।”
– ব্রুকলিন স্ট্যান্ডার্ড

“নিজেকে এবং প্রত্যেককে তার নিজের প্রকৃতি সম্পর্কে জানাও ‚ ঘুমন্ত আত্মাকে ডেকে তোলো এবং এটি কীভাবে জেগে ওঠে তা দেখো। শক্তি, ধার্মিকতা, বিশুদ্ধতা আসবে এবং যা কিছু সর্বোত্তম তা সবই আসবে, যখন এই ঘুমন্ত আত্মা আত্ম-সচেতন ক্রিয়াকলাপে জাগরিত হবে।”
-স্বামী বিবেকানন্দ

“প্রকৃত শিক্ষা হ’ল সেটাই যা একজন মানুষকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম করে।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

“যে শিক্ষা সাধারণ মানুষকে জীবন সংগ্রামের জন্য সাহায্য করে না, এবং চরিত্রের শক্তি, জনহিতের চেতনা এবং সিংহের সাহসকে সামনে এনে দেয় না – তাকে কি শিক্ষা বলা যায়?”
– স্বামী বিবেকানন্দ

“জনগণের মধ্যে মধ্যে শিক্ষা ও চেতনা যত ছড়িয়ে পড়বে‚ সেই জাতি ততই উন্নত হবে।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

“ভাল হওয়া এবং ভালো কাজ করা – এটাই ধর্মের সার কথা ।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

“আগামী শতাব্দীতে, স্বামী বিবেকানন্দকে আধুনিক বিশ্বের অন্যতম প্রধান রূপকার হিসাবে স্মরণ করা হবে।”
– এ এল বাশাম, ঐতিহাসিক

বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ও কূটনীতিক পান্নিকর স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে লিখেছেন, “এই নতুন শঙ্করাচার্যকে হিন্দু আদর্শের নেতৃত্ব হিসাবে দাবী করা যেতে পারে।“

হৃদয় এবং মস্তিষ্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব উপসেহলে‚ অবশ্যই হৃদয়ের কথা শুনবে।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

আধুনিক বিশ্বে স্বামী বিবেকানন্দের অবদান হ’ল সর্বোৎকৃষ্ট বাস্তবতার সর্বজনীন অভিজ্ঞতার নিরিখে হিসাবে ধর্মের ব্যাখ্যা দেওয়া।

আমি শুধুমাত্র প্রেম প্রচার করি এবং আমি মহাবিশ্বের আত্মার সাম্য এবং সর্বত্ববাদের বৈদান্তিক সত্যকে আমার শিক্ষার ভিত্তি করেছি।
– স্বামী বিবেকানন্দ.
.
একবারে একটি কাজ কর, এবং তা করার সময় অন্য সকল কাজ পরিত্যাগ করে ওতেই সমস্ত মন অর্পণ কর। “
– স্বামী বিবেকানন্দ

“স্বামী বিবেকানন্দের শক্তি ও সৌন্দর্য, তাঁর স্বর্গীয় চেহারা এবং মর্যাদা নিয়ে তার কতৃত্ত্বপূর্ণ আগমন এবং যে মূহুর্তে তিনি কথা বলতে শুরু করেছিলেন, সেই মুহূর্ত থেকেই ভারতের এই যোদ্ধার ভাবনাচিন্তা আমেরিকার উপর গভীর চিহ্ন রেখে গেছে”
– রোঁমা রোঁল্যা, ফরাসী ঔপন্যাসিক

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন হেনরি রাইট স্বামী বিবেকানন্দকে বলেছিলেন: “স্বামীজী‚আপনাকে শংসাপত্রের কথা জিজ্ঞাসা করা আর সূর্যকে তার আলো দেওয়ার অধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা একই ব্যাপার।”

স্বামী বিবেকানন্দের কথাগুলি হ’ল মহান সঙ্গীতের মতো‚ বিঠোভেনের স্টাইলে বাক্যাংশ গুলির মতো‚ হ্যান্ডেল কোরাসের পদযাত্রার মতো উত্তেজক
– রোঁমা রোঁল্যা, ফরাসী ঔপন্যাসিক

“যদি এমন কোনোদিন আসে‚ যেদিন তুমি কোনও সমস্যার মুখোমুখি হওনি – তবে নিশ্চিত হতে পারো যে তুমি ভুল পথে চলেছ”
– স্বামী বিবেকানন্দ

শীঘ্রই প্রত্যেক ধর্মের পতাকার উপর লেখা হবেঃ ‘বিবাদ নয়, সহায়তা; বিনাশ নয়, পরস্পরের ভাবগ্রহণ; মতবিরোধ নয়, সমন্বয় ও শান্তি। “
-শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের শেষ কথা

ঈশ্বরকে নিজের বাইরে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। আমাদের নিজের আত্মারা আমাদের বাইরে সব রকম ঐশ্বরিক অবদান রাখে। আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ । সমস্যাগুলি হ’ল আমাদের মনের মিথ্যে কল্পনা মাত্র।
– স্বামী বিবেকানন্দ

সাফল্য লাভ করতে হলে প্রবল অধ্যবসায়, প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থাকা চাই। অধ্যবসায়শীল সাধক বলেন, ‘আমি গণ্ডূষে সমুদ্র পান করব। আমার ইচ্ছামাত্রে পর্বত চূর্ণ হয়েযাবে।’ এমন তেজ, এইরূপ সঙ্কল্প আশ্রয় করে খুব দৃঢ়ভাবে সাধন কর। নিশ্চয়ই লক্ষ্যে উপনীত হইবে।
– স্বামী বিবেকানন্দ

“এই পৃথিবীতে সমস্ত পার্থক্য হলো মাত্রার। কারণ আত্মার অনন্ত একত্বই সর্বপ্রকার নীতির মূলভিত্তি।”
– স্বামী বিবেকানন্দ

তোমার মধ্যে ঐশ্বরিকতা প্রকাশ করো। দেখবে সবকিছু তোমার চারপাশে সুসংবদ্ধভাবে সাজানো থাকবে । – স্বামী বিবেকানন্দ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.