বিক্ষোভের আবহতেই এই শহরে এসে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওল্ড কারেন্সি ভবনে শনিবার প্রদর্শনীর উদ্বোধনের পর বাংলায় ‘আমার সোনার বাংলা’ বলে অভিভূত করলেন সকলকে। এভাবে খানিকটা বাঙালির আবেগকে ছুঁতে চাইলেন তিনি। এরপরই তিনি ঘোষণা করলেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের তিন নম্বর গ্যালারির নাম ‘বিপ্লবী ভারত’ রাখা হবে। একই সাথে জানালেন, ওই গ্যালারিতে বিশেষ জায়গা দেওয়া হবে স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রাণ হারানো বাঙালি বিপ্লবীদের।
এদিন কলকাতায় এসে তিনি স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছেন তা জানালেন। বললেন, “সংস্কৃতির বাতাবরণে ভরা কলকাতায় এলে আমার মন ভরে যায়। নিজেকে ব্যাপ্ত করতে ইচ্ছে হয়। অনেক পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায়, বেলুড়মঠের স্মৃতি আমাকে এখানে টেনে নিয়ে আসে”।প্রধানমন্ত্রী জানান, “ভারতের কলা সংস্কৃতি হেরিটেজ কে সংরক্ষিত করতে তা আবার মেরামত করার অভিযান পশ্চিমবঙ্গের মাটি থেকে শুরু হল।” পরম্পরা ও পর্যটন শিল্পের সাথে ভারতবাসীর আবেগ যুক্ত বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের ভারতের সংস্কৃতিকে দুনিয়ার সামনে নতুন রূপে হাজির করার প্রচেষ্টার কথা জানান তিনি। দুনিয়ার দরবারের কাছে ভারতের হেরিটেজ ট্যুরিজম যে একটি নিদর্শন রাখতে পারে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চেষ্টা করছে। এর ফলে রাজ্যসহ দেশের আয় বাড়বে বলেই মত নরেন্দ্র মোদীর। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য রবীন্দ্র সেতুকে নবরূপে আলো ও মিউজিকের সাহায্যে সাজানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, অরবিন্দ ঘোষ, ক্ষুদিরাম বসু থেকে শুরু করে বিনয়-বাদল-দীনেশদের অগ্নিযুগের বিপ্লবী সংগ্রামের ইতিহাস ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের তিন নম্বর গ্যালারিতে তুলে ধরা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নেতাজির নামের লালকেল্লায় মিউজিয়াম হয়েছে। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ এর নাম করা হয়েছে তার নামে।” একই সাথে কার অভিযোগ, “ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া হয়নি এতদিন। চারটি গ্যালারি দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে পড়েছিল। চাই সেগুলি আবার নতুন করে শুরু হোক। ভারত সরকারের কলকাতায় যে টাকশাল রয়েছে সেখানেও কয়েনের মিউজিয়াম শুরু হোক।”ভিক্টোরিয়া হল, মেটাকাফ হাউস বিল্ডিং সহ ন্যাশনাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আশেপাশে নতুন দশকে বাংলাকে নতুন সম্মান দেওয়া হবে বলেও এদিন তিনি জানান।সঙ্গে বলেন, কলকাতা দিল্লি, মুম্বাই, আমেদাবাদ, বারাণসীতে নতুন মিউজিয়াম তৈরি করা হবে। যাতে আন্তর্জাতিক মানের প্রদর্শনী গ্যালারি, থিয়েটার, ড্রামার ব্যবস্থা থাকবে। ইতিমধ্যেই এই সব জায়গায় মিউজিকের জন্য জরুরী ও অত্যাধুনিক যন্ত্র লাগানোর কাজ শুরু হচ্ছে বলে জানান তিনি।এদিন শহরে যেখানে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের স্লোগান ও কালো পতাকা ছেয়ে গেছে গোটা শহর| সেখানে দাঁড়িয়ে একটিও রাজনৈতিক কথা না বলে বাঙালির আবেগ ও ঐতিহ্যকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাধারণ মানুষের মনের আবেগকে ছুঁতে সক্ষম হলেন বলেই মনে করছেন অনেকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.