মিলেনিয়াম পার্ক থেকে শনিবার সন্ধেয় জলপথে বেলুড় মঠে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ বেলুড় মঠেই রাত কাটাবার কথা তাঁর। রবিবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। আগামীকাল সকালে সেখানে ধ্যানে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, বেলুড় মঠের আন্তর্জাতিক অতিথিশালায় রাত কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী।
বেলুড় মঠের বর্ষীয়াণ মহারাজ স্বামী অলকেশানন্দ মহারাজজি জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদীই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি বেলুড় মঠে রাত কাটাবেন। এর আগে অন্য কোনও প্রধানমন্ত্রীকে পেলুড় মঠে রাত্রিযাপন করতে দেখা যায়নি।
রাজভবন নয়, স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি বিজড়িত বেলুড় মঠেই রাত কাটাতে চান তিনি, এমন ইচ্ছা আগেই জানিয়েছিলেন মোদী। সেই মতো মঠ কর্তৃপক্ষদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অতিথিশালা ফাঁকা করার কাজও শুরু করে দেন মঠ কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল, রবিবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী। মঠের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে ভোরবেলা প্রধানমন্ত্রী ধ্যানে বসবেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেলুড় মঠে থাকাকালীন কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা মঠ ঘিরে রেখেছে এসপিজি। মঠের বাইরে রাজ্য পুলিশের তরফেও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কলকাতায় আসার আগে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রয়াত অধ্যক্ষ স্বামী আত্মস্থানন্দর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইটও করেন মোদী। টুইটারে তিনি লেখেন, “আমি আনন্দিত ও উৎসাহিত যে আজ এবং আগামী কাল আমি পশ্চিম বঙ্গে কাটাবো। স্বামী বিবেকানন্দর জন্ম জয়ন্তীর পবিত্র সময়ে আমার রামকৃষ্ণ মিশনে যাওয়ার সৌভাগ্য হবে। বেলুড় মঠ সর্বদাই একটি বিশিষ্ট জায়গা।”
মনের আনন্দ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বিষণ্ণতার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোথাও একটা শূণ্যতা থাকবে তাঁর মনে। কারণ শ্রদ্ধেয় স্বামী আত্মস্থানন্দজি এখন আর নেই। রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে তাঁর পবিত্র সান্নিধ্য না পাওয়াটাই দুঃখের। মোদী বলেন, রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বহুদিনের। এক সময় রামকৃষ্ণ সঙ্ঘে সন্ন্যাসী হিসেবে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে নিরস্ত করেছিলেন স্বামী আত্মস্থানন্দ। তিনিই বলেছিলেন, এ পথ তাঁর জন্য নয়। পরবর্তীকালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেব শপথ গ্রহণের আগেও তিনি দেখা করে গিয়েছিলেন স্বামী আত্মস্থানন্দের সঙ্গে। এবার সেই সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হবেন তিনি।
শনিবার বিকেলে কলকাতায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিংয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধনের পর এদিন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, মেটকাফে হাউস, বেলভেডার বিল্ডিং-সহ মোট চারটি ঐতিহ্য সম্পন্ন বিল্ডিংকে ন্যাশনাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেন মোদী। রাজ্য জোড়া বিক্ষোভের মাঝেই শনিবাসরীয় বিকেলে রাজভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে রাজভবনে ফের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিনহা প্রমুখ নেতারা।