কক্সবাজার প্রতিনিধি:
২ বছর আগে উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা এবার হুম-কি দিচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারা স্থানীয় লোকজনকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বলছে। তা না হলে যে কোনো সময় হাম-লা চালিয়ে খু-ন করা এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুম-কি দিচ্ছে।
টেকনাফের জাদিমুরা রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের সন্ত্রা-সী রোহিঙ্গারা গত ২২ আগস্ট রাতে ওই এলাকার যুবলীগ নেতা ওমর ফারুককে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে নির্ম-মভাবে হ-ত্যা করে। এ হ-ত্যাকাণ্ডের পর নিহত ফারুকের ভাই আমীর হামজাকেও গুলি করা হয় জানাজায় অংশ নিতে গেলে।
ফারুক হ-ত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ রোহিঙ্গা এরই মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ক্রসফা-য়ারে নিহত হয়েছে। এর পর থেকে এ হ-ত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক রোহিঙ্গারা নিহত যুবলীগ নেতা ওমর ফারুকের বাবা আবদুর মোনাফ ও ভাই আমীর হামজাকে হ-ত্যা এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুম-কি দিয়ে আসছে।
হামজা গতকাল বুধবার বলেন, রোহিঙ্গাদের হুম-কির মুখে আমরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছি। তবে পুলিশ টহল রয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের আশপাশের এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাতে তারা নিজেরা পাহারার ব্যবস্থা করেছে।
রোহিঙ্গা সন্ত্রা-সীদের হুম-কির বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এলাকায় পুলিশের টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পলাতক সন্ত্রা-সীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উখিয়া উপজেলার বালুখালী ২ নম্বর শিবিরের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে শিবিরটির দায়িত্বে নিয়োজিত ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) রোহিঙ্গাদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এক নারীকে হুম-কি দিয়ে যাচ্ছেন। ওই এলাকার থাইংখালী গৌজুঘোনা এলাকার বাসিন্দা ফরিদ আলমের স্ত্রী আমিনা খাতুন এক লিখিত আবেদনে এমন অভিযোগ করেছেন।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমিনা খাতুন গতকাল তার পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার চেয়েছেন। ওই লিখিত অভিযোগের কপি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়সহ আরো কয়েকটি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আমিনা খাতুন অভিযোগ করেছেন, ২ বছর আগে আসা রোহিঙ্গারা তার ৪ একর জমি দখলে নিয়ে বসতি স্থাপন করেছে। তার নিজস্ব মালিকানাধীন জমির ফলদ গাছগুলোর ফলও রোহিঙ্গারা এরই মধ্যে নিয়ে গেছে। এখন তারা গাছগুলোও কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি গত মঙ্গলবার দুপুরে জানানোর জন্য বালুখালী ২ ও ১১ নম্বর শিবিরের সিআইসির কাছে যান তিনি।
ঘটনা জানিয়ে প্রতিকার চাইলে সিআইসি ক্ষিপ্ত হয়ে তার জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হন। এক পর্যায়ে সিআইসি আমিনাকে গালাগাল করে ওই জায়গায় আর না আসার নির্দেশ দেন। এর পরও যদি আমিনা সেখানে যান তাহলে তাকে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুম-কি দেন সিআইসি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে গত রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে ওই সিআইসির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।