জেএনইউ এর সহিংসতা যা জাতিকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, তা বামপন্থীদের হিংস্র প্রকৃতিটিকেই আবারও প্রকাশ করেছে। ঠিক যেভাবে কেরল এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে বামপন্থীরা হিংসার আশ্রয় নেয় সেইভাবে। ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট এবং মোবাইল ভিডিও ফুটেজ দেখাচ্ছে
যে জেএনইউতে বামপন্থীদের দ্বারা সংঘটিত সর্বশেষ হিংস্রতা এবিভিপির বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত ভাবে সংগঠিত হয়েছে।
ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটগুলিতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে কীভাবে জেএনইউয়ের ভিতরে আক্রমণগুলি নিয়ে বামেরা পরিকল্পনা করেছিল এবং জেএনইউর বাইরের শিক্ষার্থীরাও এর সাথে জড়িত ছিল। এসএফআই, আইআইএসএর সাথে যুক্ত বাম গুন্ডাদের জামিয়া ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে লাঠি এবং অন্যান্য ‘প্রয়োজনীয় জিনিস’ নিয়ে জেএনইউ ক্যাম্পাসে আসতে বলা হয়। গ্রুপ চ্যাটগুলি প্রকাশ করেছে যে প্রায় একশজন কমরেডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল জেএনইউতে ‘সংঘীদের’ (এবিভিপি শিক্ষার্থী) আক্রমণ করার জন্য।
ক্যাম্পাসের ভিতরে তারা জেএনইউ শিক্ষার্থীদের সাহায্যে প্রবেশ করে। এটি 10+ কমরেডের গ্রুপে কার্যকর করা হয়েছিল এবং ভোর 4-5 টার দিকে পরিকল্পনাটি কার্যকর করা হয় । ফাঁস হওয়া চ্যাট অনুসারে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০০ জনেরও বেশি এবং জামিয়া থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীদের আক্রমণ করার জন্য আনা হয়।
.
চ্যাটগুলি আরও জানায় যে তাদের মধ্যে কয়েকজন শীতকালীন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াটির বিরুদ্ধে করা সহিংসতার বিরোধিতা করেছিল। এই গ্রুপের এক সদস্য যিনি সম্ভবত ডিএসএফের সদস্য‚ বলেছিলেন যে আইআইএসএ এবং এসএফআই লাঠি হাতে সশস্ত্র দল গঠন করেছে এবং এবিভিপিকে মারধর করার ইচ্ছায় ঘোরাফেরা করছে। সদস্যটি বলেন, ‘কোনও ডিএসএফ কমরেডের এই কাজে অংশ নেওয়া উচিত নয়। তিনি শান্তির জন্য আবেদন করেন।
ফাঁস হওয়া চ্যাটগুলি দেখাচ্ছে যে কিভাবে বামেরা জেএনইউ সহিংসতার পরিকল্পনা করেছিল। কেবলমাত্র এবিভিপি সদস্যদের আক্রমণ করতে এবং এবিভিপি দ্বারা সহায়তাপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য জেএনইউ তে সহিংসতার পরিকল্পনা করা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে থাকা অন্যান্য ভিডিওতে জেএনএসইউ সভাপতি ঐশী ঘোষকে আক্রমণকারীদের সাথে মুখ ঢেকে থাকতে দেখা গেছে। অন্যান্য কয়েকটি মোবাইল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের কাজে সাহায্যকারী এবিভিপি শিক্ষার্থীদের বিরোধী বাম গুন্ডারা আক্রমণ করে।
জেএনইউ প্রশাসন বাম গুন্ডাদের চেহারা খুলে দিয়েছে
শুরু থেকেই এটি স্পষ্ট ছিল যে বামপন্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার বিরোধিতা করেছিল । বাম গুন্ডারা যখন ম্যানুয়াল প্রক্রিয়াটি জোর করে থামিয়ে দেয়, তখন জেএনইউ প্রশাসন এই প্রক্রিয়াটি অনলাইনে করে দেয়। এতে বাম ইউনিয়নগুলি ক্ষুব্ধ হয়ে সার্ভাররুমে ভাঙচুর করে এবং ক্যাম্পাসে ওয়াই-ফাই বন্ধ করে দেয়। এমনকি তারা সার্ভার রুমের দরজাও করে দিয়েছিলো এবং এই সমস্ত ক্রিয়াকলাপ মুখঢাকা গুন্ডাদের দ্বারা সংঘটিত হয়। তাই এই ভাঙচুরের পেছনে মুখ ঢেকে কারা ছিলেন তা স্পষ্টই প্রমাণিত।
এখন জেএনইউ প্রশাসনও ঘটনার আসল সত্যতা প্রকাশ করেছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রেজিস্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে রেজিস্ট্রেশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই এই হিংসার মূল কারণ ছিল। ভিসি মমিদালা জগদেশ কুমার সকল জেএনইউ শিক্ষার্থীদের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছেন। তিনি একাধিক টুইটের মাধ্যমে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্রিয়াকলাপগুলি চালিয়ে যাওয়ার জন্য পাশে দাঁড়িয়েছে এবং আমরা নিশ্চিত করব যে তাদের শীতকালীন সেমিস্টার রেজিস্ট্রেশন যেন কোনও বাধা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়। তিনি একাধিক টুইটের মাধ্যমে এইকথা বলেছেন।
উপাচার্য আরও টুইট করেছেন যে জেএনইউতে বর্তমান পরিস্থিতির মূল উৎস হ’ল কিছু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হিংসাত্মক হয়ে উঠে আন্দোলনের সাথে সম্পর্কহীন বিপুল সংখ্যক সাথে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমকে বাধা দিয়েছে। প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা শীতকালীন সেমিস্টারের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করতে যোগাযোগের সার্ভারগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। তারা হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে শীতকালীন রেজিস্ট্রেশন করতে বাধা দেয়। সুস্পষ্টভাবে তাদের অভিপ্রায়টি ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত করার লক্ষ্যেই। এটি পুরোপুরি গুন্ডামি এবং জেএনইউয়ের নীতিবিরোধী। এ জাতীয় কোনও ব্যক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ভিসি জানিয়েছেন।
.
মোবাইল থেকে তোলা ভিডিওগুলি এও প্রকাশ করে যে জেএনইউয়ের শীতকালীন রেজিস্ট্রেশন বিরোধীরাই একাডেমিক প্রক্রিয়াটিকে বন্ধ করার জন্য সহিংসতার পিছনে রয়েছে। আর এটি সবারই জানা ছিল যে কেবল বাম ইউনিয়নগুলি নিবন্ধন প্রক্রিয়াটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল এবং জেএনইউ-র এই বিবৃতি জেএনইউ ক্যাম্পাসে সর্বশেষতম সহিংসতার সর্বশেষ পর্বে বামদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করছে।