রোজ ১০০০০ পা হাঁটাহাঁটি, বেশি করে জল খাওয়া, ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিনের মাত্রা বাড়ানো— আজকের তরুণ প্রজন্ম কিন্তু অনেক বেশি স্বাস্থ্যসচেতন। এখন তাঁরা জলখাবারও বাছাই করছেন বুঝেশুনে। সম্প্রতি ভারতে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স তৈরির এক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয়রা এখন স্ন্যাক্স বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন হয়েছেন। ভারতীয়দের এখন পছন্দ ফ্যাটমুক্ত, প্রিজ়ারভেটিভ মুক্ত স্ন্যাক্স। ৩৬ শতাংশ ভারতীয়রা বলছেন তাঁদের প্রিয় স্ন্যাক্স হল রোস্টেড ড্রাই ফ্রুট্স, পাশাপাশি ১৯ শতাংশ বলছেন মাখানাই নাকি তাঁদের অসময়ে পেট ভরানোর প্রিয় খাবার। দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে মূলত বিহার প্রদেশের এই শুকনো খাবার।
সম্প্রতি বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের গিয়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মাখানার প্রসঙ্গ টেনেছেন। মোদী বলেন, ‘‘তাঁদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাজারে মাখানার দাম বেড়েছে, যার ফলে উপকার পাচ্ছেন বিহারের চাষিরা।’’ এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার নানা সভা, সাক্ষাৎকারে মাখানার পুষ্টিগুণের ব্যাপক প্রচার করেছেন মোদী।
সাধারণ মানুষের চাহিদা বুঝে সরকারও মাখানা উৎপাদনে বিশেষ উৎসাহ দেখিয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে মাখানা চাষিদের উন্নয়নের জন্য বিশেষ বোর্ড গড়ার কথাও ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মাখানায় রয়েছে ভাল মানের ফাইবার, যা অন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে মাখানায়। যেহেতু মাখানায় ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, তাই হার্ট ভাল রাখতেও সাহায্য করে এটি। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর মাখানার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। তাই ডায়াবেটিকদের জন্য এই খাবার নিরাপদ। কেন বাড়ছে এই খাবারের জনপ্রিয়তা?
১) প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট রয়েছে মাখানায়। কিম্পফেরল নামক এক ধরনের উপাদান থাকায় মখানা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরিও বটে।

২) মাখানার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই যাঁদের রক্তে শর্করা বেশি, তাঁরাও নির্ভয়ে খেতে পারেন। আবার, এতে ট্রান্স ফ্যাট নেই, তাই কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। উল্টে পটাশিয়াম থাকায়, তা হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে।
৩) পদ্মবীজের খই বা মাখানায় আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকায় তা রক্তাল্পতার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য স্বাস্থ্যকর এই খাবার।
৪) প্রত্যেক দিন অল্প পরিমাণে মাখানা খেলে অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর হয়। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা।
৫) বিপাকহার ভাল রাখতেও পদ্মফুলের বীজ থেকে পাওয়া খই বা মাখানার ভূমিকা রয়েছে।

