এ যেন ব্যতিক্রমী সত্যের জয়। সিনেমার স জানে না, ছবি তোলার ক্যামেরা নেই, ভালো সংলাপ লেখার না ছিল অভ্যাস, না ছিল অভিজ্ঞতা তবুও হৃদয়ের আকুতি নিয়ে প্রথম উপস্থাপনায় বাজিমাত। এবারও সাড়া ফেলে দিল ঝাড়গ্রামের চিঁচড়ার গ্রাম্য যুবক তমাল চক্রবর্তী।

সেবার তাঁর শর্টফিল্ম “নিঃশব্দ ঘাতক” শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম শিরোপা পেয়েছিল। এবারও হাজার হাজার মানুষের হৃদয় মন জয় করে নিল তাঁরই ছবি “এক বিন্দু প্রাণ”।

এই ধরনের হৃদয়বান মর্মস্পর্শী ব্যাক্তিদের গভীর উপলব্ধি কে তুলে ধরার মঞ্চ “চিত্রভারতী”। সংস্থার অন্যতম কর্ণধার দেবাশিস আইয়ারের বক্তব্য, গত বছর আমাদের শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সমকালীন বিষয়ের গুরুত্ব নিয়ে ছবি করার জন্য এক ঝাঁক নবীন প্রতিভাবানদের আগ্রহ করা হয়েছিল । তাতে তমাল বর্তমান বিশ্বের ভয়াবহ সমস্যা “প্লাস্টিক দূষণ” নিয়ে ছবি বানিয়ে রীতিমতন আমাদের সকলের মন ছুঁয়েছিল। বিচারকদের বিচারে ওর শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকৃত হয়েছিল । আমরা ওর মর্ম বোধকে প্রকাশ করেছিলাম। সুষ্ঠুভাবে সমাজের স্বার্থে তা যেন বিকশিত হয় তার জন্য সমস্ত ধরনের প্রয়াস করা হয়েছিল। ওর ভাব ওর কর্মদক্ষতা যে সঠিক ছিল এবার তার নতুন ছবি “এক বিন্দু প্রাণ” তা প্রমাণ করে দিল। বাস্তবতার গভীরে গিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় জয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো সেদিন ওর এ পথে আসা এবং তার স্বীকৃতি দুটোই সঠিক ছিল।

গত 5 ই জানুয়ারি বরিবার ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমির “রং মাটি মানুষ” উৎসবের প্রাঙ্গণে দেখানো হলো তাঁরই পৌনে এগারো মিনিটের ছবি “এক বিন্দু প্রাণ(A Drop Of Life)”। এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিদয় গুপ্ত, সৌমকান্তি সাহু , সায়ক মজুমদার , চন্দ্রিমা গুপ্ত ও আরো অনেকে। একটি ছোট্ট গান দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন সুন্দরদেব চক্রবর্ত্তী ও সৌমজিৎ চ্যাটার্জি,সিনেমাটোগ্রাফার স্বপ্নিল মজুমদার,সম্পাদনা করেছেন অভিজিত পাল । বিশেষ ভাবে সহযোগিতা করেছেন গিধনী এলোকেশী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দেবলীনা দাশগুপ্ত, সেবাভারতী মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ এর বিভাগীয় প্রধান সমিত মাইতি , বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ্ ড.মৃন্ময় হোতা( প্রধান শিক্ষক ,দহিজুড়ি মহাত্মা বিদ্যাপীঠ), রনজিৎ পানি,অভিষেক রায় ও বিশাখা সরকার (English Subtitle) ও ঝাড়গ্রামের ভূমিপুত্র বৈজ্ঞানিক ডঃ শান্তনু ভৌমিক।

ছবি সম্পর্কে বলতে গিয়ে পরিচালকের বক্তব্য ইউটিউবে লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখলে তার পরিণামে যতটুকু সচেতনতা তাদের মধ্যে সৃষ্টি হবে সেখানেই এই ছবি সার্থকতা অর্থাৎ বাণিজ্যিক লাভ বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যের দিকে তেমন আগ্রহী নয়, সামাজিক সচেতনতা ও চেতনার জাগরণ-ই মূল লক্ষ্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.