বহির্বিশ্বে আরব থেকে মিশর, তুরস্ক এমন কি রাশিয়া চিন সর্বত্র ভারতীয় বা ইন্ডিয়ান কথার চল নেই বললেই হয়। স্তালিন ভারতীয়দের হিন্দু বলতেন। কে পি এস মেনন বা বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিতের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি সর্বক্ষন ভারতীয়দের, এমন কি হিন্দি ভাষাকেও হিন্দু বলেছিলেন। চার্চিলতো হিন্দুস্তান ছাড়া বলতেন ই না।
চীনারা ভারতীয়দের ইন্দু বলে। এই হিন্দু শব্দের মধ্যে মুসলিম,সনাতনী, ব্রাহ্মন্যবাদী, শিখ, বৌদ্ধ,পার্সী, খ্রিষ্টান, বনবাসী,আন্দামানী, সেন্টিলীজ, কমিউনিস্ট(রাশেলের মতে ধর্ম) এমন কি নাস্তিক পর্যন্ত সকলকেই বোঝায়।
এটাই আর এস এসের ভাবনা। অর্থাৎ হিন্দু তারাই যারা এই মহাভারতের ভূগোলে বাস করে। গোল বাধলো জিন্নার নতুন ভাবনা প্রসূত তাঁরই ভাষায় মথ ইটেন পাকিস্তান গঠনের পর। পঞ্চাশের ছাব্বিশে জানুয়ারির পর পাশ্চাত্ত প্রভাবে ইন্ডিয়া হওয়া ও আরও স্পষ্ট করে বললে সম্পূর্ণ বিলেতী শিক্ষা ও ভাবনার ফসল নেহেরুর হাতে ইউরোপীয় ‘সেকুলারিজমের’ হাইব্রিড বীজ বপনের পর হিন্দুস্তান হিন্দুত্ব হারাল ও সেই সঙ্গে হিন্দু শব্দের অর্থ এক শ্রেণীর লোকের কাছে শিব বিষ্ণু দ্বৈত অদ্বৈত মনসা সন্তোষিমা রামকৃষ্ণ লোকনাথের সমার্থক হয়ে গেল। চিকাগোর বিখ্যাত কালজয়ী ভাষনের পরতে পরতে বিবেকানন্দ নিজেকে সেই হিন্দু বলেই ঘোষনা করেছিলেন যে হিন্দুস্তানের সন্তান স্যার ডেভিড এজরার মত ইহুদি, টাটার মত পার্শি,কিপলিং, অ্যালিউইন,অরওয়েল, করবেটের মত খ্রিস্টান। কিংবা গালিব,আমির খসরু,নজরুল,খুদাবক্স খাঁ,নুরুদ্দীন নুরানী থেকে আবদুল কালামের মত মুসলিম।
নতুন নাগরিকত্ব আইনে মুসলমান বিতারণের পথ প্রশস্ত হচ্ছে বলে কিছু হতাশ, জ্ঞানপাপী ও ইরফান হাবিবের মত পেশাগত নৈরাশ্যবাদী চিল চিৎকার করছেন। এঁদের মধ্যে অনেক রাজনীতিজীবীর অতীত যারপরনাই অস্বচ্ছ।
তিন হাজার বছরের মহাভারতীয় ইতিহাসে এক হাজার বছরের ইসলাম এই দেশের মতোই সত্য। এই বাস্তবকে কোন বোধবুদ্ধিসম্পন্ন রাজনৈতিক দল অস্বীকার করতে পারে না। করা সম্ভব নয়। ভূভারতের শাসকদল সেটা যথেষ্ট বোঝে।তাই মূল সমস্যা থেকে দৃষ্টিকে সরাতে চাইলে আর একটা পনের ই আগস্টের মত দেশ ভাগ দিবস না এসে যায়। তেমন দিন এলে জিন্নার মত ঘোলা জলে মাছ ধরা বর্তমান ইতালিয় প্রজন্ম বা কাঁসর বাজানো নেতারা পরে হাজার অনুতাপের সুযোগটুকুও পাবে কিনা সন্দেহ।জিন্না নাকি বলেছিলেন, পাকিস্তান গড়া আমার বৃহত্তম ভুল। গান্ধি তেমনটি বলার সুযোগও পাননি।