৯ জুলাই না ১ অগস্ট? নতুন হারে শুল্ক কার্যকর কবে থেকে, ট্রাম্পের কথায় বিভ্রান্তি, স্পষ্ট করল মার্কিন প্রশাসন

আমেরিকার নয়া শুল্কনীতি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী বুধবার (৯ জুলাই) সেই স্থগিতকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ৯ জুলাই থেকেই নতুন হারে আমদানি শুল্ক চাপাবে আমেরিকা? সেই জল্পনার মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে আরও একটি তারিখ। ১ অগস্ট। দিন কয়েক আগেই ট্রাম্প জানান, ১ অগস্ট থেকে আমেরিকায় ঢোকা পণ্যে বসছে আমদানি শুল্ক। কোনও দেশের উপর ৭০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হতে পারে! নানা মহলের প্রশ্ন, তবে কি ট্রাম্প স্থগিতাদেশ আরও কিছু দিন বৃদ্ধি করলেন? এই বিভ্রান্তি দূর করলেন আমেরিকার বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক।

বিভ্রান্তের সূত্রপাত ট্রাম্পের কথাতেই! শুল্কনীতি স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন ৯ জুলাই থেকেই কি নতুন হারে বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক ধার্য করবে আমেরিকা? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘শুল্ক আরোপ হতে চলেছে। আমি মনে করি ৯ জুলাইয়ের মধ্যে বেশির ভাগ দেশ কাজ (বাণিজ্যচুক্তি) শেষ করে ফেলবে।’’ তবে কেন ১ অগস্টের কথা বলা হল? সেই গুঞ্জন শুরু হতেই আমেরিকার বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘‘নতুন হারে শুল্ক ১ অগস্ট থেকেই কার্যকর হবে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন থেকেই শুল্ক হার এবং চুক্তি চূড়ান্ত করবেন।’’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নয়া হারে শুল্ক ধার্য করে বিভিন্ন দেশকে চিঠি পাঠানো হবে। সেই প্রক্রিয়া সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, যে সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে, তাদের কাছেও চিঠি যাবে। তবে সেই চিঠির বয়ান থাকবে চুক্তি সংক্রান্ত।

গত ২ এপ্রিল আমেরিকার বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর ‘পারস্পরিক শুল্কে’র কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তালিকায় চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি ভারত বা ইজ়রায়েলের মতো আমেরিকার ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ও ছিল। ভারতের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল আমেরিকা। এ ছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০%, ভিয়েতনাম ৪৬%, জাপান ২৪%, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫%, যুক্তরাজ্য ১০%, তাইল্যান্ড ৩৬% এবং সুইৎজ়ারল্যান্ডের উপর ৩১% শুল্ক চাপানো হয়েছিল। কিন্তু নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (যদিও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়)।

এই তিন মাসে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমেরিকার। ইতিমধ্যেই চিন, ব্রিটেন এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলেছে তারা। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনা এখনও চলছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিরাও আমেরিকায় পৌঁছে গিয়েছেন। ভারত-সহ বেশ কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক বোঝাপড়া চালাচ্ছে ট্রাম্পের প্রশাসন। ট্রাম্প মনে করেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। আলোচনা ইতিবাচক পর্বেই রয়েছে। তবে যে সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি হবে না, সেই সব দেশকে চড়া হারে আমদানি শুল্ক দিতে হবে, এমনই জানান ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত ১ অগস্ট পর্যন্ত আলোচনার পথ খোলা থাকছে। তার পর থেকেই কার্যকর হবে নতুন হারে শুল্ক। তবে ১ অগস্টের পরেও যদি কোনও আলোচনায় বসতে চায়, তবে তাতে রাজি আমেরিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.