ইয়ামালকে টেক্কা বুড়ো রোনাল্ডোর, নেশনস লিগের ফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল

১৭ বছরের লেমিনে ইয়ামালকে টেক্কা দিলেন ৪০ বছরের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। রবিরার মিউনিখে উয়েফা নেশন্‌স লিগের ফাইনালে স্পেনকে টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে জিতল পর্তুগাল। নির্ধারিত সময় খেলার ফলাফল ছিল ২-২। অতিরিক্ত সময়ে কোনও গোল হয়েনি। অবশেষে টাইব্রেকারে জেতে পর্তুগাল। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার নেশন্‌স লিগ জিতলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা।

সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে খেলতে নেমেছিল স্পেন। অন্য দিকে, পর্তুগাল হারিয়েছিল আয়োজক দেশ জার্মানিকে। রবিবার দুই দলের খেলায় কে মাঝমাঠ দখল নিতে পারে তার দিকে চোখ ছিল। পাশাপাশি, এই লড়াইকে ইয়ামালের সঙ্গে রোনাল্ডোর দ্বৈরথ বলে বর্ণনা করা হচ্ছিল। সেই দ্বৈরথে শেষ হাসি হাসলেন রোনাল্ডো। গোটা ম্যাচে একটি মাত্র গোলের অবদান ছাড়া সে ভাবে খুঁজেই পাওয়া যায়নি ইয়ামালকে। নুনো মেন্দেস তাঁকে গোটা ম্যাচে কড়া মার্কিংয়ে রেখেছিলেন। অন্য দিকে, রোনাল্ডো ৮৭ মিনিট পর্যন্ত খেললেন। একটি গোল করলেন। একটি গোলের পিছনে অবদান রাখলেন। পাশাপাশি মাঠে ইয়ামালের থেকে বেশ কয়েক বার বলও ছিনিয়ে নিলেন।

২১ মিনিটে স্পেনকে এগিয়ে দেন মার্টিন জ়ুবিমেন্ডি। ডান দিক থেকে এগিয়ে এসে বল ভাসিয়েছিলেন ইয়ামাল। পর্তুগালের ডিফেন্স সেই বল ক্লিয়ার করতে পারেনি। রুবেন দিয়াজ়ের পায়ে লেগে বল যায় জ়‌ুবিমেন্ডির দিকে। তিনি হালকা টাচে পর্তুগালের জালে বল জড়ান। সমতা ফেরাতে মাত্র ৫ মিনিট নেয় পর্তুগাল। বাঁ দিক থেকে পেড্রো নেটোর পাস পেয়ে স্পেনের বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন মেন্দেস। বল স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমোনের পাশ দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। স্পেন এর পরে মাঝমাঠের দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। পেদ্রি, ইয়ামাল ও ওয়ারজাবাল পর্তুগালকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিচ্ছিলেন না। আক্রমণের সময়ে দ্রুত গতিতে উঠে যাচ্ছিল স্পেন। সেই আগ্রাসনের ফলও পায় তারা। ৪৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে স্পেন। পেড্রি পাস দেন ওয়ারজাবালকে। কিছুটা সময় নিয়ে ডান পায়ের শটে গোল করেন স্পেনের ফুটবলার।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই পর্তুগালের আগ্রাসন বাড়তে থাকে। ব্রুনো ফের্নান্দেসের একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ৬১ মিনিটে সমতা ফেরায় পর্তুগাল। বাঁ দিক থেকে মেন্ডেসের ক্রস জ়ুবিমেন্ডির পায়ে লেগে উঠে যায়। স্পেনের গোলের ঠিক সামনেই ছিলেন রোনাল্ডো। বিপক্ষের ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। এর পর দুই দলই গোলের বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল। বিশেষ করে স্পেনের ইস্কোর শট ঝাঁপিয়ে পড়ে পর্তুগালের গোলকিপার ডিয়োগো কোস্তা না বাঁচালে নির্ধারিত সময়েই হেরে যেত পর্তুগাল। ৮৭ মিনিটে রোনাল্ডোকে তুলে নেন পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ়। তবে নির্ধারিত সময়ে আর গোল হয়নি। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়েও দুই দলের গোল করার মরিয়া প্রয়াস ছিল। স্পেনের একটি পেনাল্টির আবেদনও নাকচ হয়। কোনও দলই গোল করার খুব কাছাকাছি আসতে পারেনি।

পেনাল্টি শুটআউটে পর্তুগালের হয়ে গোল করেন গনসালো রামোস, ভিটিনহা, ব্রুনো ফের্নান্দেস, নুনো মেন্দেস এবং রুবেন নেভেস। স্পেনের হয়ে মিকেল মেরিনো, অ্যালেক্স বায়েনা এবং ইস্কো গোল করলেও চতুর্থ শটে আলভারো মোরাতার প্রয়াস বাঁচিয়ে দেন পর্তুগালের গোলকিপার। পঞ্চম শটে নেভেস গোল করতেই নেশন্‌স লিগ জিতে নেয় পর্তুগাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.