দেশের চারটি বিমানবন্দরে আকস্মিক পরিদর্শনে (সারপ্রাইজ়’ ভিজ়িট) গিয়েছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ-র আধিকারিকেরা। তুরস্কের বিমানসংস্থা টার্কিশ এয়ারলাইন্সের গুচ্ছ গুচ্ছ গাফিলতি খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। বুধবার কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক থেকে একটি বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের কী কী গাফিলতি ধরা গিয়েছে, তা-ও জানিয়েছে সরকার। অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডিজিসিএ-নির্ধারিত নিয়ম মানে না তুরস্কের ওই সংস্থা। অবিলম্বে এ বিষয়ে তাদের পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের বিবৃতি অনুযায়ী, ২৯ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত সময়ে দেশের চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন ডিজিসিএ-র আধিকারিকেরা। তার মধ্যে ছিল বেঙ্গালুরু, দিল্লি, হায়দরাবাদ এবং চেন্নাই। এই বিমানবন্দরগুলিতে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বিমান হামেশাই ওঠানামা করে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণের নিয়ম মেনেই এই বিমানবন্দরগুলি পরিদর্শন করা হয়েছিল। আকাশপথে যাত্রী এবং মালপত্র পরিবহণের সময়ে নিরাপত্তায় কতটা জোর দেওয়া হয়, ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম কোন ক্ষেত্রে কতটা মেনে চলা হয়, তা খতিয়ে দেখা ছিল ডিজিসিএ-র অন্যতম লক্ষ্য
কেন্দ্র জানিয়েছে, টার্কিশ এয়ারলাইন্সের অন্যতম প্রধান গাফিলতি ধরা পড়েছে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে। সেখানে এই সংস্থার হয়ে যে ব্যক্তি মাটিতে নামার পর বিমান পরিচালনা করেন, তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্তই নন বলে অভিযোগ। তাঁর কাছে তাঁর দক্ষতার প্রমাণস্বরূপ প্রয়োজনীয় কার্ডটিও ছিল না। এ ছাড়া, বিমানের অবতরণ সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করার কথা দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে সেই কাজে সাধারণ টেক্নিশিয়ানকে নিয়োগ করেছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স। ডিজিসিএ-র পরিদর্শনের সময়ে অনুমোদনপ্রাপ্ত পরিষেবা প্রদানকারীও উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের মালবহন পরিদর্শন করতে গিয়েও ধাক্কা খেতে হয়েছে ডিজিসিএ আধিকারিকদের। অভিযোগ, ‘বিপজ্জনক’ মালপত্র, এমনকি বিস্ফোরক পদার্থও তাদের বিমানে পরিবহণ করা হয়। এর জন্য ডিজিসিএ-র কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রয়োজনীয় নথিপত্রও কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল না।
যে পদ্ধতিতে টার্কিশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ মাটি থেকে বিমান পরিবহণ পরিচালনা করেন, তা-ও ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে হয়েছে ডিজিসিএ কর্তাদের। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের হয়ে এই কাজ পরিচালনা করে গ্লোব গ্রাউন্ড ইন্ডিয়া নামক এক সংস্থা। অভিযোগ, হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে এই সংস্থার সঙ্গে তুরস্কের বিমান সংস্থার আনুষ্ঠানিক কোনও চুক্তিই হয়নি। এ ছাড়া, মই, ট্রলি, পাওয়ার ইউনিটের মতো সরঞ্জামের কোনও নির্দিষ্ট রেকর্ড পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। ডিজিসিএ জানিয়েছে, আগামী দিনে এই ধরনের আকস্মিক পরিদর্শন আবার করা হবে। কারণ, যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।