চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ পলাশে মহানন্দা নদীর চর বিক্রি হচ্ছে। প্লট বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধ কারবার চলছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই কারবারের পেছনে রাজনৈতিক মদত রয়েছে। যদিও এই বিষয়ে সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই বলে দাবি করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রিনা রায়। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে এলাকায় রাজনীতির কোনো যোগ নেই। ওরা জমির কারবারই করে থাকে। আমরা বহুবার ওদের আটকানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু একদিকে আটকাতে গেলে ওরা অন্যদিকে বাড়ি তুলে দিচ্ছে। প্রশাসনকেও চিঠি দিয়েছি। প্রশাসন আরও সহযোগিতা করলে এই কারবার বন্ধ করা যাবে। চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়ে প্রধান সংগীতা চিকবড়াইক বলেন, বহুদিন ধরেই এলাকায় এই চর দখল চলছে। পঞ্চায়েত সদস্যের কাছ থেকে বিষয়টি শুনে আমি বহুবার ওই এলাকায় গিয়েছি। তবু কোথাও না কোথাও চরে ঘর তৈরি হচ্ছে। মাটিগাড়ার বিডিও রুনু রায় বলেন, আমরা ওই এলাকায় বেশ কিছু দখলদারকে সরিয়েছি। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে সেটা ভূমি ও ভূমিরাজস্ব দপ্তর এবং সেচ দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দক্ষিণ পলাশে বিশাল এলাকাজুড়ে মহানন্দা নদীর চর রয়েছে। একসময়ে এই চর এলাকা খালি থাকলেও বর্তমানে সেখানে জায়গায় জায়গায় টিনের ছোটো-বড়ো বাড়ি নজরে পড়বে। কিন্তু কীভাবে দখল হচ্ছে নদীর চর? স্থানীয় যুবক হিসেবে পরিচয় দেওযা দালালরা জানাল, জমি কেনার জন্য চরের জায়গা নিজেদের চিহ্নিত করতে হবে। বড়ো জায়গা নিতে চাইলে কাঠা প্রতি আশি হাজার টাকা হিসেবে জমির দাম থাকছে। সতর্কতা হিসেবে নির্দিষ্ট জায়গায় ঘর তৈরির এক সপ্তাহ পর থাকতে শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আশি হাজার কাঠা দাম থাকলেও চেনা পরিচিত হলে পঞ্চাশ হাজারেও জায়গা বিক্রি করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দালালচক্রের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের ছত্রছাত্রায় রয়েছে। তাই প্রকাশ্যে চর বিক্রি করা হলেও কারও মাথাব্যথা নেই। পরিবেশ বাঁচাও কমিটির সদস্য প্রদীপ নাগ বলেন, একটা চর তো আর একদিনে বিক্রি হচ্ছে না। ওই এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। তাঁর সামনে কীভাবে সবকিছু চলছে? রাজনৈতিক মদত রয়েছে বলে প্রশাসনেরও দেখা মিলছে না। আর পাঁচটা দখল হওয়া এলাকার মতো এই এলাকাতেও কয়েকদিন পর বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে রাস্তাঘাট-সবই হবে।