ফের সংবাদের শিরোনামে উঠে এল ৮০-র দশকে শহর কলকাতায় ঘটে যাওয়া আনন্দ মার্গী হত্যাকাণ্ড (Ananda Margi Massacre)। ২০১১ সালে সরকার গঠনের পরেপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার আনন্দ মার্গী গণ হত্যাকাণ্ডের জন্য কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অমিতাভ লালার (Amitabha Lala) নেতৃত্বে কমিশন গঠন করে ফের তদন্ত শুরু হয়। সম্প্রতি প্রাক্তন বিচারপতি অমিতাভ লালা তাঁর যাবতীয় তদন্ত শেষ করে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর। তারপরেই দাবি উঠেছে ওই গণহত্যায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতাদের শাস্তির।
অমিতাভ লালা কমিশনের কাছে তাদের পক্ষে যাবতীয় তথ্য ও বিবৃতি পেশের দায়িত্বে ছিলেন আনন্দ মার্গী সংগঠনের পক্ষে আচার্য কৃষ্ণসরানন্দ অবধূত।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কমিশনের কাছে আমরা আমাদের কথা তথ্য প্রমাণ সহ জানিয়েছি। এখন রিপোর্ট যখন রাজ্য সরকারের কাছে জমা পড়েছে তা খুবই ভালো কথা। সেই রিপোর্ট অবিলম্বে বিধানসভায় পেশ করার আবেদন জানাচ্ছি।” তাঁর আরও দাবি, “আমরা জেনেছি প্রাক্তন বিচারপতি অমিতাভ লালা তাঁর রিপোর্টে বেশি কিছু সুপারিশ করেছেন। সেই সুপারিশ যেন রাজ্য সরকার অবিলম্বে কার্যকর করেন।”
প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালের এপ্রিল মাসে ঘটে যাওয়া এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দাবি জানিয়ে ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। আনন্দ মার্গী হত্যাকাণ্ড কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের উচিত এবার অন্তত যে সব সিপিএম নেতারা এই গণহত্যায় অভিযুক্ত এবং এখনও জীবিত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অভিযুক্ত সিপিএম নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে, ফের তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।
ঘটনাচক্রে, এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় (Somnath Chatterji)। সেই সময় তিনি যাদবপুর লোকসভার সাংসদ ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রয়াত হয়েছেন। তৎকালীন সিপিএম বিধায়ক শচীন সেন এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন। তিনিও আর বেঁচে নেই। তবে ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় (Kanti Ganguly) এখনও জীবিত। তিনি কমিশনের তলবে হাজিরা দিয়েছিলেন। কিন্তু, কমিশনের কাজ বন্ধ করতে এই সিপিএম নেতা দ্বারস্থ হয়েছিলেন আদালতের। কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এছাড়াও, বর্তমানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আরও এক সদস্য এই ঘটনায় অভিযুক্ত। তাই আনন্দ মার্গী হত্যাকাণ্ড কমিশনের রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জমা পড়ায় বেজায় অস্বস্তিতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।