রাশিয়ার পার্লামেন্টে নতুন আইন পাশ হয়েছিল মাস চারেক আগেই। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের সেই নতুন আইন অনুসরণ করে এ বার আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের উপর থেকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা প্রত্যাহার করে নিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট।
২০০৩ সালে তালিবানকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রাশিয়া। এত দিন পর্যন্ত ওই গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ রাখা রাশিয়ার আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ ছিল। কিন্তু আর সেই প্রতিবন্ধকতা না থাকায় এ বার কাবুলের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে মস্কো। আশির দশকে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ এবং গৃহযুদ্ধের তিক্ত ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত রাশিয়া। ১৯৮৯ সালে সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে কাবুলের সঙ্গে দূরত্বই বজায় রেখেছে মস্কো।
রাশিয়ার পার্লামেন্টে পাশ হওয়া নতুন আইন অনুযায়ী কোনও সংগঠন ‘সন্ত্রাসবাদী’ কি না, তা নির্ধারণের ভার থাকবে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের হাতে। ২০২৪ সালের মে মাসে রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক এবং বিচার মন্ত্রক তালিবানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব নিয়েছিল। চলতি মাসের গোড়ায় প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় সুপ্রিম কোর্টে সেই প্রস্তাব জমা দেয়। সেই প্রস্তাব মেনে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তালিকা থেকে তালিবানকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন আইন কার্যকর হওয়ার ফলে সিরিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠী হায়াত তাহবির আল-শাম (এইচটিএস)-এর উপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ২০২১ সালের অগস্টে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার চলাকালীনই গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছিল তালিবান। তবে এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ অধিকাংশ দেশ আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এই আবহে রাশিয়া আইনের বলে তালিবানকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় নতুন পরিস্থিতির সূচনা হতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ।