India-Bangladesh: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কা! ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত…

ভারতের কেন্দ্রীয় শুল্ক বোর্ড সিবিআইসি বাংলাদেশের (Bangladesh) রপ্তানি পণ্যের জন্য ভারতীয় স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পাঠানোর ট্রানজিট সুবিধা (Transshipment Facility) বাতিল করেছে। এই কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা প্রবল। মনে করা হচ্ছে যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস চিনের সমর্থক হওয়ার পর সরকারের এই পদক্ষেপ । ইউনূস কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর-পূর্ব ভারতের অঞ্চলে চিনা অর্থনীতির সম্প্রসারণের পক্ষে ছিলেন, এটিকে ‘স্থলবেষ্টিত’ অঞ্চল বলে অভিহিত করেছিলেন। সেখান থেকেই এই সিদ্ধান্ত ভারত সরকারের। 

জানা যাচ্ছে, ‘ট্রান্সশিপমেন্ট ফ্যাসিলিটি’র অধীনে, ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন (LCS), বিমানবন্দর এবং জাহাজ বন্দরের মাধ্যমে তৃতীয় দেশে রপ্তানি পণ্য পরিবহন করা যেতে পারে। এখন বাংলাদেশ এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না। যার কারণে এর অর্থনীতিতে ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এই সুবিধাটি ২০২০ সালের জুন মাসে শুরু হয়েছিল। যার কারণে ভুটান, নেপাল এবং মায়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশি রপ্তানি সহজ হয়ে ওঠে। এর আওতায় বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময় অনেক কমে আসত। ​

প্রতিবেদনে ট্রানজিট সুবিধা বাতিলের স্পষ্ট কোনও কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চিন সফরে দেওয়া কিছু মন্তব্য ভারতের উদ্বেগের কারণ হতে পারে বলেই অনুমান রাজনৈতিক মহলের। ইউনূস চিনের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে বলেছিলেন, “ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্য ভূমিবেষ্টিত। আমরা এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। এটি একটি বিশাল সুযোগের দ্বার উন্মেচিত করেছে। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হয়ে উঠতে পারে।” এই মন্তব্য ভারতের কূটনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একে ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’ এবং ‘সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ​

নয়াদিল্লির সঙ্গে যখন ঢাকার সম্পর্কের অবস্থা ভঙ্গুর- তখন চিনকে নতুন কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিত্রিত করাও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে। ট্রানজিট সুবিধা বাতিলের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময় বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে ভুটান ও নেপালের মতো ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি হবে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, সদস্য দেশগুলোকে ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য অবাধ ট্রানজিট সুবিধা নিশ্চিত করতে হয়। ১৯৯৪ সালে সংস্থাটির জারি করা জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফস অ্যান্ড ট্রেড ( জিএটিটি) এর অনুচ্ছেদ পাঁচ অনুসারে, সব সদস্যকে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট প্রদান করতে হবে। এতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা দেওয়া যাবে না এবং পরিবহন শুল্কের আওতায় ফেলা যাবে না। এরই মাঝে ভারতের এই সিদ্ধান্ত। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.