নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনের বিরোধিতা করে প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশের মিরাটে যে হিংসাত্মক প্রতিবাদ হয়েছিল, তার স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রকাশ করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নীল রঙের জ্যাকেট পরে, কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে একটি রিভলভার নিয়ে হাঁটাচলা করছে এক ব্যক্তি।

পুলিশ জানিয়েছে, ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এমনই ছিল হিংসার ধরণ। গত সপ্তাহে এর জেরেই বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে শুধু মিরাটেই ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বহু মানুষ গুলির আঘাতে আহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করেছে, প্লাস্টিক ছররা ও রাবার বুলেট ছাড়া তারা অন্য কোনও ধরনের গুলি চালায়নি। তারা কেবলমাত্র বিজনৌরে গুলি চালিয়েছে, সেখানে ২০ বছর বয়সী এক তরুণেকর মৃত্যু হয়, যিনি সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন।

কোথায় কোথায় হিংসাত্মক প্রতিবাদ হয়েছে, সে সংক্রান্ত রিপোর্টও তৈরি করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কোথায় কোথায় ভাঙচুর করা হয়েছে ও সম্পত্তিহানি করা হয়েছে রিপোর্ট সে কথা বিস্তারিত ভাবে দেওয়া হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দিনেশ শর্মা দাবি করেছেন, পুলিশেরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, “২১টি জেলায় যে হিংসাত্মক প্রতিবাদ হয়েছে তাতে ২৮৮ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬২জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে।” তিনি দাবি করেছেন, নিষিদ্ধ তালিকায় পড়ে এই ধরনের ৫০০টি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

লখনৌয়ে অটলবিহারী বাজপেয়ী মোডিক্যাল ইউনিভার্সিটির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “উত্তরপ্রদেশের তাণ্ডবের সঙ্গে যারা যুক্ত আমি সেইসব মানুষকে বলতে চাই, তাঁরা যেন নিজেকে জিজ্ঞাসা করেন যে তাঁরা এ কাজ করে ঠিক করেছেন কিনা।” হিংসা বন্ধ করার জন্য উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে বাহবা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

উত্তরপ্রদেশে যারা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছে, তাদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা শুরু করেছে পুলিশ। অন্তত ৬০ জনকে চিহ্নিত করে নোটিস পাঠিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের জন্য তাঁরা অর্থ না দিলে তাঁদের সম্পত্তি বিক্রি করে সরকার সেই টাকা আদায় করবে। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে হাতিয়ার করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

সম্প্রতি নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন হয়েছে দেশে। সেই আইন অনুযায়ী, যাঁরা ধর্মীয় নিপীড়নের জন্য প্রতিবেশী দেশ থেকে ভারতে এসেছেন, এমন অমুসলমানদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এরই প্রতিবাদ হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.