ট্রাম্পের নির্দেশে পানামা খাল দখলের জন্য সেনা অভিযান? পেন্টাগনকে ‘পথ’ খুঁজতে বলল হোয়াইট হাউস

পানামা খালে মার্কিন সেনার উপস্থিতি জোরদার করার জন্য পেন্টাগনকে নির্দেশ দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা গিয়েছে আমেরিকা ফৌজের সদর দফতরে! সেই সঙ্গে, ওই ‘অন্তর্বর্তিকালীন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলগত নির্দেশিকা’য় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য সমস্ত রকম ‘সামরিক বিকল্প’ পর্যালোচনা করারও নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর।

প্রেসিডেন্ট ভোটে জয়ের পরেই পানামা খাল দিয়ে যাওয়া আমেরিকান জাহাজগুলি থেকে অন্যায় ভাবে ফি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ট্রাম্প। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মাঝখান দিয়ে প্রশান্ত এবং অতলান্তিক মহাসাগরকে সংযুক্ত করা এই গুরুত্বপূর্ণ খালটি পরিচালনার ক্ষেত্রে চিন ‘প্রভাব’ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়েছিলেন, ওয়াশিংটনের স্বার্থের পরিপন্থী কোনও পদক্ষেপ হলে বলপ্রয়োগেও পিছু হটবেন না তিনি। এ বার কার্যত সেই প্রক্রিয়ারই সূচনা হল বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন সামরিক তৎপরতার আবহে কিন্তু পানামা সরকার নতি স্বীকারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও পানামা খালের সুরক্ষায় তারা দৃঢ় অবস্থানে থাকবে। ফলে সংঘাত কার্যত অনিবার্য বলে মনে করছেন অনেকে। বিশ্ববাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ জলপথ হল পানামা খাল। গত শতকের গোড়ায় আমেরিকাই প্রশান্ত এবং আটলান্টিক মহাসাগরের সংযোগরক্ষাকারী এই খালটি খনন করেছিল। তাদের হাতেই পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ছিল। পরে ১৯৯৯ সালে মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার হাতে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছিল ওয়াশিংটন। ১৯৭৭ সালে আমেরিকার ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের আমলে সই হওয়া চুক্তির ভিত্তিতেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছিল।

কিন্তু এখন ট্রাম্পের দাবি মেনে দখল ছাড়তে রাজি নয় পানামা। বরং চিনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সে দেশের সরকার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে বলেও আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি। গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনের চাপের মুখে চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিল পানামা। যদিও সম্প্রতি পানামার বিদেশমন্ত্রী হ্যাভিয়ের মার্টিনেজ় আচা আমেরিকার হাতে খালের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে বলেছিলেন, ‘‘শুধু পানামার জনগণের হাতে এই খালের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং তাদের হাতেই এই খালের নিয়ন্ত্রণ থাকবে।’’ হোয়াইট হাউসের নতুন নির্দেশিকার প্রেক্ষিতে আচা শুক্রবার বলেন, ‘‘আমি শুধু বলতে চাই, নিজেদের ভূখণ্ড, খাল ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষায় পানামা দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখবে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.