স্থায়ী বেতনের লোভ দেখিয়ে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতে প্রতীকী চাবি তুলে দিয়েছিলেন। হেমতাবাদের সভায় ইসলামপুরের চোপড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের এই অখ্যাত মেয়েটির চোখে তখন নতুন স্বপ্ন। এম্বুলেন্স চালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করবে সে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে এম্বুলেন্স পেয়ে চালাতে শুরু করে সুধারানী সিং।


কিন্তু চালকের চাকরি বাবদ মিলবে মাসিক আট দশ হাজার টাকা। এই প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে নগদ এক লক্ষ টাকা তিনি দিয়ে ফেলেন চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য আসমাতারা বেগম এবং তার স্বামী অঞ্চল কমিটির নেতৃত্ব একরামূল হককে। সময় পেরিয়ে গেলেও স্থায়ী কোন বেতন জোটেনি সুধারানীর।
বারবার তিনি ওই দুই প্রভাবশালী শাসক দলের নেতা নেত্রীকে টাকা ফেরতের কথা বলতে থাকেন। কারন ততদিনে তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে আর কোনোভাবেই তার স্থায়ী চালক হিসেবে মাসিক বেতন পাওয়া সম্ভব নয়। দীর্ঘ দুবছর পর তার টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি একটি অডিও রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে গোটা বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে দেন। তার অভিযোগ এরপর থেকেই ওই দুই তৃণমূল নেতা নেত্রী তাকে নানাভাবে হেনস্থা করা শুরু করে। মিথ্যে চুরির মামলা দিয়ে দেবেন বলেও তাকে শাসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মহিলা ওই এম্বুলেন্স চালক। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি এলাকার বিধায়ক হামিদুল রহমানেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন।


বিষয়টি তিনি এলাকার জেলা পরিষদ গোপাল ভৌমিককে জানিয়েছেন। গোপালবাবু জানান, যখন এম্বুলেন্স তুলে দেওয়া হয় তখন তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং এক লক্ষ টাকা দেওয়ার বিষয়টি তার কানে এসেছে। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আসমাতারা বেগমের স্বামী একরামূল হক বিষয়টি স্বীকার করেছে তার কাছে।
এই ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন ওই মহিলার বাবা সুবল সিংহ তিনি বলেন, খুব কষ্ট করেই জমি বিক্রি করে এক লক্ষ টাকা মেয়ের ভবিষ্যত চিন্তা করে তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু এই ঘটনায় তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। কারন তার মেয়েকে ফোনে রীতিমতো হুমকি এবং হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে।


এম্বুলেন্সটি ওই দম্পতি নিয়ে গেলেও তিনি আবার তা নিয়ে আসেন কিন্তু সেটিও তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য একরামূল হক বলেন, তাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে। এমনকী তাকে বদনাম দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তারই দলের জেলা পরিষদ সদস্য গোপাল ভৌমিকের চক্রান্ত বল অভিযোগ এই নেতার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.