দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্যপাল যেন পণ করেছেন!—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার পথ থেকে ফেরাবেনই ফেরাবেন।
নাগরিকত্ব আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে বহু আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু গতকাল সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, আইনের উপর কোনও স্থগিতাদেশ জারি করা হবে না। সে প্রসঙ্গ টেনে এনেই বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেনশন করে তিনি বলেন, এখন যেহেতু সুপ্রিম কোর্টও নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হয়নি এবং এই আইনের বৈধতা বিষয়টি দেখছেন, তাই এ ব্যাপারে আন্দোলন ও বিক্ষোভের পথ থেকে সবাই সরে আসুন। যাতে শান্তি কায়েম হয় ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ হয়।
এরই পাশাপাশি রাজ্যপাল জানিয়েছেন, গতকাল রাজ্যের মুখ্য সচিব ও পুলিশের ডিজি তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে তাঁরা জানিয়েছেন। তাতে তিনি সন্তুষ্ট। কিন্তু এর পরেও হিংসা কবলিত এলাকাগুলোতে যেতে চান তিনি। যাতে সেখানকার মানুষের মধ্যে দ্রুত আস্থা (আইনের শাসন সম্পর্কে) ফিরে আসে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট গতকাল স্থগিতাদেশ তো দেয় নি, বরং প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে সরকারকে মৌখিক ভাবে এও জানিয়েছেন যে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে যেন আরও প্রচার করা হয়। যাতে সংশোধিত আইন সম্পর্কে সবাই জানতে পারেন এবং বিভ্রান্তি দূর হয়। তবে আইনের বৈধতা নিয়ে শুনানি আপাতত চলবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই বক্তব্যকেই সামনে রেখে বিক্ষোভ শান্ত করতে চাইছে বিজেপি তথা কেন্দ্রে শাসক দল। কিন্তু বিরোধীরা তা শুনতে নারাজ। আজ বৃহস্পতিবারও কলকাতায় সমস্ত বিরোধী দলগুলির পৃথক সভা ও মিছিল রয়েছে। কলকাতার রাণী রাসমণি রোডে দুপুর ২ টো থেকে সভা করবে তৃণমূল। বিকেলে ওই মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা ছাড়া বাম, কংগ্রেস এবং যৌথ মঞ্চের প্রতিবাদ সভা ও মিছিলও রয়েছে আজ। যাদের গতকাল তৃণমূলনেত্রী নাম না করে কিচির মিচির পার্টি বলে মন্তব্য করেছিলেন।
সুতরাং রাজ্যপালের কথায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যে কর্ণপাত করবে না তা এখনই বলে দেওয়া যায়। কিন্তু নবান্নের উদ্বেগের কারণ হতে পারে হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখার ব্যাপারে রাজ্যপালের ইচ্ছার বিষয়টি। যে ভাবে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে গতকাল মুর্শিদাবাদে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, রাজ্যপালের সঙ্গেও সেরকম কিছু ঘটে সেই দায় রাজ্যের উপরেই এসে পড়বে। আবার রাজ্যপাল যে এ ব্যাপারে নবান্নের নিষেধ শুনবেন এমন আশাও কম। সবমিলিয়ে জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে।