নাগরিকত্ব সংশোধনী বিধি নিয়ে ইসলামিক পণ্ডিত সৈয়দ রিজওয়ান আহমেদ -এর স্পষ্ট মন্তব্য : A bold talk by Dr. Rizwan on CAB #IndiaSupportsCAA

ইসলামিক পণ্ডিত সৈয়দ রিজওয়ান আহমেদ নিজের স্পষ্ট মন্তব্য এবং জাতীয়তাবাদী আদর্শের নিমিত্ত সুবিখ্যাত। এঁরই খুড়তুতো ভাই হলেন অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহ। নাসিরউদ্দিন যখন ভারতে থেকে নানা প্রকার অসহিষ্ণু কথা বলছিলেন তখন ড. রিজওয়ান প্রতিবাদ করেন। ভারতের সম্পর্কে মিথ্যা আখ্যান নির্মাণ এবং সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করার বিরুদ্ধে ড. রিজওয়ান ভারতের নাগরিক হিন্দু মুসলিম সম্পর্ক নিয়ে এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিধি নিয়ে সাম্প্রতিককালে নিজের মূল্যবান মত প্রদান করেছেন।

A bold talk by Dr. Rizwan appealing why Muslims have no moral right to oppose CAB. And respect India and spirit of Hindus.

https://www.facebook.com/drsyedrizwanahmed/videos/2160121060961203/

আসুন দেখে নিই তিনি কী বলছেন?
ভারতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষরা যখন একত্রে শান্তিপূর্ণ ভাবে সহাবস্থান করেন তখন শৈশবকাল হতে মুসলিমদের মধ্যে দেশের প্রতি ও দশের প্রতি অসঙ্গতি ও অসহিষ্ণুতার বীজ বপন করা হয়। ১৯৪৭ সালের নোংরা দেশবিভাগের পর ভারতীয় নেতারা যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকুন না কেন, তাঁরা কিন্তু নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ রাখতেই পছন্দ করতেন। একই সঙ্গে ওই সময়ের ভারতীয় হিন্দুরাও বিষয়টি সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন। ঐতিহাসিক ভাবে যেকোনো বিশ্বাস দ্বারা প্রদর্শিত সহিষ্ণুতার এটি একটি দুর্লভ উদাহরণ ছিল। এবার প্রশ্ন হল মুসলিমরা এর বদলে হিন্দুদের কe দিয়েছে? দুঃখের বিষয় হল তারা এর পরিবর্তে কিছুই দেয়নি। আর যখন মনুস্মৃতিকে বাতিল করা হল, সুপ্রাচীন হিন্দু আইনকে পরিবর্তিত করে আধুনিক আইনে পরিণত করা হল, জওহরলাল নেহেরুর সেই রাজনৈতিক বিষ মুসলিমদের বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করেছিল। তখন থেকে এমন বহু ঘটনা ঘটল যেমন শাহবানু মামলা, কাশ্মীরী পণ্ডিতদের গণহত্যা, পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ববঙ্গ হতে হিন্দুদের দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি। উক্ত অন্যায়মূলক ঘটনাগুলিতে মুসলিমরা ইসলামের পক্ষ নিয়ে সব রকম অন্যায় করে গিয়েছিল। তাই মহাকালের নিয়মে কাল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুদের হৃদয়ের পট পরিবর্তনও হওয়া আরম্ভ হল। ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে ধর্মের বিনাশকে হিন্দুরা উপলব্ধি করতে শিখল। ধীরে ধীরে কালের নিয়মে বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠল এবং হিন্দুরা নিজের অধিকারের দাবিতে মুখর ও বিদ্রোহী হয়ে উঠল। তাদের এই অধিকারের দাবিই আজ অসহিষ্ণুতা বলে উল্লেখ করা হয়।
উক্ত অসহিষ্ণুতা হল ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষ এবং কুবুদ্ধি সম্পন্ন মুসলমানদের বানানো মিথ্যা আখ্যান। যদি কোনো মুসলিমের উপর প্রশ্ন তোলা হয় অথবা তার সমালোচনা করা হয় তো সেই ব্যক্তিকে ইসলামিক নিয়মে অনুসারে ধর্মদ্রোহী, কাফের, মুশরিক, মুনাফেক ইত্যাদি আখ্যা দেওয়া হয়।
আমার কাছে অসহিষ্ণুতা বলতে কিছুই নেই। এসব শব্দগুলো খুব মিথ্যা মনে হয়। নাসিরউদ্দিনের মন্তব্য অতীব মিথ্যা ও কাল্পনিক। ওর চিন্তা শূন্যের উপর ঘর বাঁধার মতো।
সংখ্যালঘু নাম দিয়ে এলে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের প্রেম ভালোবাসা দান আমাদের দেশের কিছু ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের স্বভাব হয়ে গেছে। যদি কোনো ব্যক্তি এসব নিয়ে প্রতিবাদ করে, প্রশ্ন তোলে তাহলেই সে অসহিষ্ণু হয়ে যায়।

মুসলিমরা আসলেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় অসুরক্ষিত। তাই তারা বোধ হয় বনিহাল সুড়ঙ্গ দিয়ে জম্মু কাশ্মীর বেল্টে প্রবেশ করে। দুর্ভাগ্যবশতঃ যেখানে তারা অল্পসংখ্যক সেখানে ভালো থাকলেও সেখানে তাদের দিব্য ইসলাম খতরে মে হ্যায় ইত্যাদি সৃষ্টি করে নিজেদের অসুরক্ষিত প্রমাণ করতে চায়।

মুসলিম ও ধর্মনিরপেক্ষরা ইসলামের উৎপত্তির কথা ভুলে গেছে হয়ত। ইসলামের উৎপত্তি সেই ১৪০০ বছর আগে আরবের মরুভূমিতে হয়েছিল। সেই প্রাচীন রূপকেই এখনো সঙ্গী করে বর্তমান ইসলাম ও ইসলামিক মৌলবিরা জীবিত থাকতে চায়। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে ধর্মের সংস্কারের প্রয়োজন হয়। যেটা না করে তারা সেই ১৪০০ আগের সেই কুসংস্কারকে বিশ্বাসের রূপ দিয়েছে। ১২ থেকে ১৩ শতাব্দীর মধ্যে এই ব্যাপারটি ভয়াল রূপ নেয় । এবং তখন থেকে যে যে ইসলামের উপর প্রশ্ন তুলেছে, সমালোচনা করেছে তারা ধর্মত্যাগী কাফের বলে পরিচিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত এ ক্ষেত্রে দুজন মুসলিমদের সর্বনাশের জন্য দায়ী। তার মধ্যে তো এখন এক জন উলেমা অন্য এক জন অবশ্য শিক্ষিত কিন্তু ১৪০০ বছর আগের চিন্তাকে সমর্থন করে। ভারতীয় মুসলমাদের মূল সমস্যা হল তারা শিক্ষিত হয়েও মৌলবাদের সাথে যুক্ত হয় ও তাদের দ্বারা মগজ ধোলাই হয়। ফলে তারাও নিজ ফলে তারাও নিজ ধর্ম ও সম্প্রদায়ের ভিতর সংশোধনের চেষ্টাকে সমর্থন করে না।

তিন তালাক ইসলামের অঙ্গ নয়। এটা নিজেদের সুবিধার জন্য পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ করেছিল এবং ইসলামের অংশ করেছিল। যেকারনে ইসলামিক দেশগুলিতে এই তিন তালাক আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমান আধুনিক মুসলিম মহিলাদের নিকট তিন তালাক অবাঞ্ছিত বলেই উপলব্ধি হয়। অধিকাংশ মুসলিম পুরুষেরও এটাই মনে হয়। কিন্তু শ্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী যখন উক্ত নিয়ম রোধ করতে গেলেন তখন কেবল বিরোধীতা করার জন্যই বিরোধিতা করে মুসলিমদের মধ্যে একটি ঋণাত্মক চিন্তা পোষণ করেছে এবং নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারছে।
সমস্ত শরিয়া আদালতের একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা উচিত এবং সুপ্রিম কোর্টে ট্রিপল তালকের একই আবেদনের অধীনে একটি হলফনামা জমা দেওয়া উচিত, শরিয়া অনুসারে, তালাক-ই-বিদ্দাতও আছে। যখনই অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এটি করবে, বিলটি পূর্বনির্ধারিতভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। আইন নিজের স্থান হতে নড়বে না কারণ আইন এবং শরিয়া একই মঞ্চে থাকবে। তাই তারা কখনো এগুলো করবে না । তাই মোদীজিকে তার প্রয়াস নিতেই হয়েছে।

ভারতীয় মুসলমানদের সমস্যা হ’ল মুসলমানদের শিক্ষিত শ্রেণি মোল্লা মৌলবীদের সাথে একত্রিত হয়েছে এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সংস্কারকে সমর্থন করেনি। মুসলিম বুদ্ধিজীবী শ্রেণি যদি স্বাধীনতার পরে এই সম্প্রদায়কে চ্যালেঞ্জ জানাত এবং সম্প্রদায়কে মূল স্রোতে আলিঙ্গনের জন্য ঠেলে দিত তবে আজকের পরিস্থিতি একেবারেই অন্যরকম হত। মুসলিম বুদ্ধিজীবী ও ধর্মগুরুরা একে অপরের হাত ধরে রয়েছে। এ কারণেই আমি বলি একদিকে কুরআনের ধারণা, আর অন্যদিকে ল্যাপটপ আমার মুসলিম সংস্কারের ধারণার সাথে খাপ খায় না।

মুসলিম ধর্মযাজক ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণি মনে করে যে তারা ‘ভারত মাতা কী জয়’ বা ‘বন্দে মাতরম’ জপ করার মুহূর্তে ভারতীয়তার আদর্শের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করে দেবে। তাই তারা এসব বলতে বা করতে চায় না। পরিবর্তে তারা নিজেদের আরব মতাদর্শ বা উম্মতের ধারণাকে বশীভূত পড়েছে। তার বেলায় দোষ নেই। ইসলাম একটি সম্প্রদায় এই লাইনটিই মুসলিমদের জাতীয়তাবাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।

আমি একটি জিনিস যোগ করতে চাই যে রাজনৈতিক দলগুলি সর্বদা মুসলমানদের কাঁধ ব্যবহার করে এর দিকে গুলি করেছে। তারা সর্বদা শোষণ করেছে, হুমকি দিয়েছে এবং মুসলমানদের উপলব্ধি করিয়েছে যে দক্ষিণপন্থার কারণে ভারতে মুসলিম ও ইসলামের অস্তিত্ব সঙ্কটে রয়েছে। এই হুমকির মাধ্যেমে মুসলমানদের মূলধারায় ফেরানোর পরিবর্তে তাদের মূলধারার বাইরে ঠেলে দিয়েছে।

মুসলিমদের বুদ্ধিমান শ্রেণি এবং ছদ্ম-বুদ্ধিজীবী দলগুলি গড়ে ওঠা মুসলমানদের মন থেকে সন্দেহ ও ভীতি সৃষ্টি করছে। ধর্মীয় পরিচয়ের নামে সম্প্রদায়কে মূলধারার বাইরে ঠেলে দিক।

একজন মুসলিম পণ্ডিত হিসাবে আমি ‘ভারত’ এবং ভারত / হিন্দুস্তানের মধ্যে পার্থক্য দেখতে পাই। আমার জন্য, ভারত ভৌগোলিক সীমানা সম্পর্কে নয়; ভারত হল ঐতিহ্য এবং ভারত হল আদর্শ । ‘সত্যযুগ’ থেকে আজ অবধি সমস্ত কিছু ‘ভারত’ হিসাবে সমান; চিন্তা, সভ্যতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা এবং পূর্বপুরুষদের নিয়ম সব….
যে কোনও ব্যক্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের নিয়মকে উপেক্ষা করবে তাকে মুসলিম বিরোধী হিসাবে গণ্য করা হবে। তাই মোল্লা মৌলবীদের নিকট মোদীজি খুব খারাপ।
রাম মন্দির সম্পর্কে, আমি আমার মুসলিম ভাইদের বলতে চাই একজন দায়িত্বশীল সংখ্যালঘু হিসাবে আমাদের ‘শ্রী রাম কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?’ সেই নিয়ে কোনও বিতর্ক করা উচিত নয়…..যেদিন প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছিল যে বাবরি মসজিদ অধীনে একটি মন্দির কাঠামোর উপর ছিল, সেইদিন মুসলমানদের পক্ষে সেখান থেকে সরে আসা এক সুন্দর মুহূর্ত ছিল। কোথায় রামের জন্ম হয়েছে বা সেখানে রাম মন্দির তৈরি করা হবে কিনা সেটা হিন্দুদের বিশ্বাসের উপর ই রাখা ভালো।
আসলে রাম ও রাম মন্দির হল একটি সনাতনী বিশ্বাস।
আর ওই ২.৭৭ একর জমি হল সেই বিশ্বাসের মূর্ত রূপ। তাই তাকে ত্যাগ করাই মুসলিমদের জন্য মঙ্গলদায়ক।
আরএসএস কীভাবে উঠে এল?
১৯০৬: দ্বি-জাতি তত্ত্ব সহ মুসলিম লীগ; ১৯০৯: মুসলমানদের জন্য পৃথক ভোটার; ১৯১৭: খেলাফত আন্দোলন; ১৯১৯- ২৪: দাঙ্গা / মোপলা গণহত্যা; ১৯২৫: আরএসএস….
১৯৪৭ থেকে ১৯৬২- ১৯৬৭ সাল অবধি ভারত অনেকগুলি যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে। আর এস এস এমন একটি সংগঠন যে সকল বিপদের ভারতীয়দের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেই সময় তারা কোনো ধর্ম জাত বিচার করেন নি।বড় বড় রাজনৈতিক বিবাদে আর এস এস ও মুসলিমরা একত্রে প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে কংগ্রেস রাজসিংহাসনে আরোহণ করার পর ভারত ভয়ঙ্কর দাঙ্গার সম্মুখীন হয়। আর এস এস ও মুসলিমদের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। যা এখনও বহমান। আরএসএসের সাথে গড়ে ওঠা মুসলিমদের বোঝাপড়া ও সামঞ্জস্য বিকাশ শুরু করার সাথে সাথে ছদ্ম-ধর্মনিরপেক্ষতার পুরো ধারণাটি পতিত হবে ফলে বহু রাজনৈতিক দল গত ৭০ বছর ধরে সরকারের অবিসংবাদিত ক্ষমতা উপভোগ করছে তাদের মুখোশ খুলে যাবে। সুতরাং, তারা নিয়মিত আরএসএস এবং মুসলমানদের মধ্যে ফাটল তৈরি করে।
গত চার বছরে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ফাটলের মূল কারণ হলেন মুসলিম ধর্মযাজক, ছদ্ম-ধর্মনিরপেক্ষ দল, মুসলিম বৌদ্ধিক শ্রেণি এবং হিন্দুত্ববাদী উপাদান। নানা ধরনের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা বিশ্বব্যাপী এবং জাতীয়তাবাদী মুসলমানদের মনস্থতে ভারত সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া এত কিছুর পরেও ভারতে মুসলিমদের নিরপেক্ষ ভাবে থাকতে ও ধর্মচারন করতে দেওয়া হচ্ছে। মোদীজি র সবকা সাথ সবকা বিকাশে জাত ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে নতুন ভারত গড়ার কাজে এগিয়ে চলেছেন। নতুন ভারত গঠনের এই কাজে আমাদের সকলকে সঙ্গী হতেই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.