বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তৃণমূল-কংগ্রেস, নির্দেশিকা জারি বিজেপির

সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন(সিএএ) নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে কংগ্রেস, তৃণমূল-কংগ্রেস এবং সিপিএম। তাই এই তিনটি দলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামার ডাক দিয়েছেন বিজেপি কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা। রবিবার একটি নির্দেশিকা জারি করে রাজস্থান, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তিসগড়, কেরালা এবং পাঞ্জাবে দলীয় নেতৃত্বকে পথে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলায় এনআরসি হবে না বলে আগেই হুঙ্কার দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে সারা ভারতে এনআরসি হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন অমিত শাহ। এরপরেই নাগরিক সংশোধনী বিল বা ‘সিএবি’ বিরোধিতায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। এর মাঝেই তখন অন্যদিকে এটির সমর্থনে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত শহর পরিক্রমা করে বিশাল মিছিল করল বিজেপি। শনিবার সন্ধ্যায় বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কয়েক হাজার বিজেপি সমর্থকরা সিএবি আইনের সমর্থনে এই মিছিল বের করেন। ক্যাব আইনের সমর্থনে বিজেপির এই মিছিলে বিজেপি কর্মীরা উদ্বাস্তু দের সাজে, উদ্বাস্তুদের সমস্যা, এবং তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি গুলি বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডের মাধম্যে এই মিছিলের মধ্য দিয়ে তুলে ধরেন।

মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির সমস্ত বিরোধী দলই চক্রান্ত করে বিশেষ গোষ্ঠীকে প্ররোচিত করছে। বৃহৎ এই চক্রান্তের মদত দিচ্ছে মূলত তৃণমূল। কখনই কোনও বিশেষ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্যাব আইনে কিছু বলা হয়নি।” এদিকে হাওড়ার উলুবেড়িয়াতে শুক্রবার যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তার দায় তিনি সরাসরি চাপিয়েছেন তৃণমূলের উপর। একদিকে ক্যাবের সমর্থনে মিছিল। অন্যদিকে, এই মিছিলের মধ্য দিয়েই বিজেপির বিরোধী দল গুলিকে বিষোদগার করেন তিনি। এর মাঝে এই নির্দেশিকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইন হিসাবে পাশ হওয়ার পর থেকেই অশান্তি ছড়িয়েছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। গত শুক্রবার মুর্শিদাবাদ এবং হাওড়া থেকে অশান্তির সূত্রপাত তিন দিন বাদেও তা কমার কোনও লক্ষণ নেই।

রবিবারও সকাল থেকে দেখা যায় রাজ্যের নতুন নতুন জায়গায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে এবং সেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়াচ্ছে। রবিবার থেকে মালদহ জেলার বিভিন্ন অংশে রেলপথ এবং জাতীয় সড়ক অবরোধের খবর সামনে আসে। একই রকম ভাবে বীরভূম জেলার মুরারইয়ের দুটি ব্লকেই বিক্ষোভ হয়।

পর পর রেল এবং সড়ক পথ অবরোধ, বিক্ষোভ চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মল্লিকপুর, বারুইপুর, মহেশতলা, হটুগঞ্জে। অন্যদিকে এ দিন সকাল থেকে অভিযোগ ওঠে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখা হয়েছে। অবরোধ চলার খবর আসে উত্তর ২৪ পরগণায় আমাডাঙার সোনাডাঙা, ধানকল, কামদেবপুরে।

অভিযোগ, মালদহের ভালুকা এবং কুমেদপুর স্টেশনে ভাঙচুর চালায় বিশাল জমায়েত। ট্রেন লাইন অবরোধ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে তাণ্ডব। ফলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের একের পর এক ট্রেন আটকে পড়েছে বিভিন্ন স্টেশনে। বাতিল করা হচ্ছে বহু ট্রেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.