লিখতেই হবে।। বামপন্থী দের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে, বামপন্থী দের অসততার বিরুদ্ধে চুপ থাকাটাই পাপ। এরা দিন কে রাত করতে পারে আবার রাত কেও দিন করতে পারে শুধু মাত্র ক্ষমতায় ফেরার জন্য, ভোটের জন্য।। এরা মরিচঝাপিতে উদ্বাস্তু শরনার্থি দের উপরে নির্বিচারে গুলি চালায়, উজাড় করে দেয় একটা আস্ত জনপদ, পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে দেয় গৃহ হীন, ভিটে মাটি হারানো দেশ ভাগের বলি হাজারো হিন্দুর স্বপ্পের ইমারত।
আবার এরাই প্রতিনয়ত ভিক্টিম কার্ড খেলে, আর কিচ্ছু না ক্ষমতার স্বপনে বিভোর হয়ে থাকে। ক্ষমতার বাইরে থাকলেই এরা ছটফট করতে থাকে,ক্ষমতায় ফেরার জন্য এরা ধর্মের তিলক কাটতেও পিছপা হয়না। এদের মিথ্যাচার দেখলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যেবাদীও লজ্জায় ঘরে ঢুকে যাবে। আর এরা মিথ্যার ফুল ঝুড়ি সাজায় খানিক টা গোয়েবলসীয় কায়দায়। আপনার কানের সামনে একই মিথ্যা ঘ্যান ঘ্যান করতে থাকবে। যাতে আপনি কোন এক সময় ভাবতে শুরু করেন এটাই হয়ত সত্য। অতি নাটকীয় মিথ্যের মোড়ক উপস্থিত করবে যে কোন মুহুর্তে আপনার সামনে।
সেদিন, এই গত সপ্তাহেই হবে হয়ত। আনন্দবাজার হাতে এল কিভাবে যেন।সব থেকে নাকি বেশী বিক্রি হয় এই কাগজ টা।জানিনা মানুষ হয়ত মিথ্যাতেই বেশী আকৃষ্ট হয়।তো সেই পেপারের ফ্রন্ট পেজের হেড লাইন ” মুসলিম দের কেন নাগরিকত্ব দেব?”
এই সেই খবরের কাগজের দল, আনন্দ বাজার, বর্তমান যারা পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভোটের ডিউটি করতে যেয়ে খুন হয়ে যাওয়া শিক্ষক রাজকুমার রায়ের মৃত্যু রহস্য নিয়ে পেনের নিবে মোজা পরিয়ে রেখেছিল তারাই কি অদ্ভুত সক্রিয়তায় ভয়ানক লেভেলের মিথ্যাচার করে চলেছে। কোথাও যেন একটা শুনেছিলাম খবরের কাগজ কে নাকি বলা হয় গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। তো মিথ্যা অথবা অর্ধ সত্য খবর পরিবেশন করে এই কাগজ গুলো গনতন্ত্রের পুং মাং সাং করে ছাড়ছে নিরন্তর। বিক্রি হয়ে যাওয়া কলমে এখন আর আগুন ঝরেনা, ঝরে ঝরে পড়ে তোষামোদ আর নির্ভেজাল চাটুকারিতা। ” বাংলাদেশ থেকে আসা ওখানকার সংখ্যা গুরু মুসলিম দের কেন নাগরিকত্ব দেব?” কথা টা আদ্ধেক সেদ্ধ ডিমের মত খবরের পাতায় পরিবেশিত এমন ভাবে যাতে আপনার রক্ত গরম হয়ে যায়, আপনি ক্রোধে অন্ধ হয়ে আপনি ভাঙচুর করতে নেমে পড়েন।
যেটা দিয়ে শুরু করেছিলাম। বামেদের মিথ্যাচার। আনন্দবাজারের অর্ধ সত্য খবর পরিবেশনের সাথে অদ্ভুত মিল আছে এই বামেদের অর্ধ সত্যকে গোয়েবলসীয় স্টাইলে পাব্লিক কে খাওয়ানোর।নিজেদের মগজ কে যেভাবে ধোলাই হতে দিয়েছে ঠিক সেই কায়দায় ওরা পাব্লিকের মগজ ধোলাই এ পি এইচ ডি করে ফেলেছে ইতিমধ্যে।সাইবাড়ি কান্ডের নায়ক রাও আজকাল পাব্লিকের সামনে যখন গনতন্ত্র আওড়ায় তখন মাইরি সত্যি হাসি পায়।
তো যেটা বলছিলাম। আজ সন্ধ্যায় বারাসাত স্টেশনের পাশে চা খাচ্ছিলাম। পাশেই বামদের বামেদের কোন শাখা সংগঠনের স্ট্রিট কর্নার হচ্ছিল বোধ হয়। নারী নির্যাতন আর ধর্ষনের বিরুদ্ধে বড়,বড় পোস্টার থাকলেও বক্তব্যের আসল অভিমুখ সেই CAB, আর NRC। যদিও ওটাকে এখন আর CAB না বলে CAA বলাই ভাল। কারন ওটা এখন আর বিল নয়, ভারতের সংবিধান অনুযায়ী ওটা এখন আইন, এক্ট।তো এক ম্যাডামের বক্তব্য শুনছিলাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। চায়ের কাপে ঠোট আর দিদিমণির বক্তব্যে আমার কান নিবন্ধ। উনি বিজেপি কে ফ্যাসিস্ট( মরিচঝাপির নায়ক রা অন্যকে ফ্যাসিস্ট বললে ভেতরে আলতো যন্ত্রনা হয়), দাঙ্গা বাজ, হাতে রক্ত এসব বিশেষনের পর বিশেষন আউড়ে যাচ্ছিলেন। যেতেই পারেন। গণতান্ত্রিক দেশে শক্তিশালী বিরোধিতা গনতন্ত্রকেই শক্ত করে, পুষ্ট করে বিরোধিদের বক্তব্যের ঝাঝেই শাসক দল নিজেদের ভুল ত্রুটি সামলে নিয়ে সঠিক ভাবে রাজ্য পরিচালনা করতে পারে। এই জন্যেই বিখ্যাত রুশ দার্শনিক ভলটেয়ার একবার বলেছিলেন ” তোমার মতের সাথে আমার মত নাও মিলতে পারে, কিন্তু তুমি যাতে তোমার মত প্রকাশ করতে পারো তার জন্য আমি জীবন ও দিতে রাজী”।
কিন্তু তাই বলে ডাহা মিথ্যা। ওই দিদিমণি তার ভাষনের মাঝে বলছেন” এই দাঙ্গাকারী ফ্যাসিস্ট রা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এনেছে মানুষের সব্বনাশের জন্য।এই ক্যাব চালু হলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে। সেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, এরাই শুধু আবেদন করতে পারবে। আর কেউ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে না।কেন মুসলিম রা কি এদেশের নাগরিক না?”
শুনে মনে হল মিথ্যাচার বামেদের মজ্জাগত।আর্ধেক সত্য বলে মানুষ খেপানোয় ওদের বিশ্বকাপ পাওয়া উচিত। ক্যাবের কোথায় যে বলা আছে ওই সমস্ত কথা ওরাই জানে, ভগবান তো অবশ্যই জানে না।
CAA বা CITIZENSHIP AMMENDMENT ACT নিয়ে যেটুকু পড়াশুনা করলাম তাতে আমি যত টুকু বুঝেছি তা নিম্ন রুপ….
(১) এই বিলের সাথে কোন ভারতীয়র কোন রিলেশন নেই। ভারতীয় হিন্দু, ভারতীয় মুসলিম কারোর সাথেই এই বিলের কোন লেনাদেনা নেই।
( এখানে দয়া করে কেউ NRC র প্রসঙ্গ টেনে আনবেন না।ওটা কবে হবে, আদৌ হবে কিনা আপনি জানেন হয়ত, আমি জানিনা)
(২) প্রতিবেশী তিন টে রাস্ট্র থেকে ধর্মীয় কারনে নিপীড়িত সংখ্যা লঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
এখানে পরিস্কার বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম দের নয়।কারন তারা বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু। তারা কেউ ই ধর্মীয় নিপীড়নের কারনে আসছেন না। যদি এমন কারনে বাংলাদেশের কোন সংখ্যাগুরু এসেও থাকেন তিনিও প্রপার ওয়েতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
( এখানে প্লিজ কেউ সংবিধান কপচাতে আসবেন না,কারন ওটা আমার তর্কের বিষয় নয়।আমার এখানের বলা বক্তব্যের বিষয় মিথ্যাচার)
কেউ বলবেন ওখান থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে অথচ মুসলিমদের দেওয়া হবে না। এরকম করা যায় কিনা? এটা ধর্ম নিরপেক্ষ একটা রাস্ট্র করতে পারে কিনা? এসব নিয়ে বিতর্ক চলুক না। অসুবিধা কোথায়? আমি আপনি কেউ ই সাংসদ, বিধায়ক নই। নিজেদের ভোট দেওয়ার অধিকার ই সুরক্ষিত রাখতে পারিনা, প্রায়শই ভোট কেন্দ্রে যেয়ে দেখি আমার আপ্নার ভোট কেউ না কেউ দিয়ে গেছে। অথবা পাড়ার কোন দাদা বলে দেয় পিসেমশাই এই রোদে কস্ট করে এলেন কেন? বাড়ি যান। আপনার ভোট আমরা দিয়ে দেব।একদম চাপ নেবেন না। তো এই রকম ম্যাঙ্গো পিপল আমরা রাজ্য সভা, লোক সভায় পাস হবার পরে প্রেসিডেন্ট এর সই হয়ে যাওয়া কোন বিষয় নিয়ে তর্ক করে চায়ের কাপে, আর ডালের বাটিতে তুফান তুলতেই পারি, টেবিল ভেঙে ফেলতে পারি থাপ্পড় মেরে। কিন্তু তাই বলে মিথ্যাচার? ” মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেন দেব?” এটা যেমন আনন্দবাজারের মিথ্যাচার তেমন ই লুপ্তপ্রায় বামেরাও নেমেছে এই ঘোলা জলে মাছ ধরার খেলায় ” সবাই নাগরিক্ত্বের আবেদন করতে পারবে, মুসলিম রা পারবে না”। কি জিনিস মাইরি এরা। আরে সত্য টুকু পুরোপুরি বল না রে বাপু। এজন্যেই বোধ হয় সুহেল শেঠ একবার ট্যুইট করেছিলেন…
“If you seee a communist and a snake, save youself from the communist first,snakes have ethics “