ডিএ, ওবিসি সংরক্ষণ এবং এসএসসি, সুপ্রিম কোর্টে একই দিনে বাংলার তিন মামলার শুনানির সম্ভাবনা!

দেশের শীর্ষ আদালতে একই দিনে বাংলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানির সম্ভাবনা। মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের ডিএ এবং এসএসসি-র ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলা উঠতে পারে সুপ্রিম কোর্টে। একই দিনে ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত মামলারও শুনানি হতে পারে। যদিও আদালতের একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, তালিকায় এলেও ওবিসি শংসাপত্র এবং ২৬ হাজার চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলা ওঠার সম্ভাবনা কম। ডিএ মামলার শুনানি হতে পারে মঙ্গলবারই।

Advertisement: 0:22Close Player

২০২২ সালে ১৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বার ওঠে ডিএ মামলা। গত বছর ১ ডিসেম্বর মামলাটির শেষ বার শুনানি হয়েছিল। ওই বছর নভেম্বরের ৩ তারিখ সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে আরও বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। তার পরে সময়ের অভাবে মামলাটির আর শুনানি হয়ে ওঠেনি। কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএর দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ২০২২ সালের ২০ মে উচ্চ আদালত রাজ্যকে কর্মচারীদের কেন্দ্রের সমতুল ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টে জয়ী হয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরাম এবং সরকারি কর্মচারী পরিষদ। কিন্তু হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় সে বছরের ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙঘভি। তাঁর সওয়াল ছিল, হাই কোর্টের রায় মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। যার আর্থিক বোঝা ওই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন বলে জানানো হয়। অন্য দিকে, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কয়েক দফায় ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে হতে পারে। শেষ শুনানিতে শীর্ষ আদালত মূলত যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করার উপরে জোর দেয়। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করা হবে, না কি যোগ্য এব‌ং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের আলাদা করা তা বিবেচনা করা হবে। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা না-গেলে পুরো প্যানেল বাতিল বাতিল করতে হবে।” গত শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাইয়ে তাদের সম্পত্তি রয়েছে কি না।

অন্য দিকে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের দেওয়া কয়েক লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে গিয়েছে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। শীর্ষ আদালত ওই নির্দেশে এখনও পর্যন্ত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। ফলে ‘ওবিসি সার্টিফিকেট’ ব্যবহার করতে পারছেন না বহু মানুষ। গত ডিসেম্বরে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, রঙ্গনাথ কমিশন মুসলিমদের সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। যার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে কারও সংরক্ষণ পাওয়া উচিত নয়।

এসএসসি এবং ওবিসি মামলায় রাজ্যের তরফে একই আইনজীবীদের নিয়োগ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে একই দিনে দুই মামলার শুনানি হবে কি না, দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.