পাকিস্তানের সংখ্যালঘু অর্থাৎ হিন্দু ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর গত তিন দশক ধরে চলছে নিপীড়ণ। পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের অবস্থা সংকটজনক। এবার এই অভিযোগ নিয়ে পাক সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলো রাষ্ট্রপুঞ্জ।
রাষ্ট্রপুঞ্জের কমিশন অন দ্য স্টেটাস অফ ওম্যান বা সি এস ডব্লিউর তরফে পেশ করা একটি রিপোর্টে পাকিস্তানের বর্তমান শাসক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের বৈষম্যমূলক কার্যকলাপকে সেই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব সংকটের জন্য দায়ী করা হয়েছে কমিশনের রিপোর্টে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে পাকিস্তানে হিন্দু এবং খ্রিস্টান ধর্মের মানুষের অবস্থা সংকটজনক।
রিপোর্টে বলা হয়েছে এই সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলাদের অবস্থা আরোও খারাপ। চলতি মাসে প্রকাশিত ৪৭ পাতার ওই রিপোর্টের শিরোনাম “আক্রমণের মুখে পাকিস্তানের ধর্মীয় স্বাধীনতা”নামাঙ্কিত এই শীর্ষক ধারি
রিপোর্টে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পাকিস্তানের বর্তমান হিংসা ও নৈরাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে নানা ধরনের ধর্মীয় ও আহমেদিয়া বিরোধী আইন প্রয়োগ করে সেখানকার সংখ্যালঘুদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।রাজনৈতিক ফায়দার জন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের একঘরে করা হচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রতিবছর অসংখ্য মুসলিম মেয়েদের পাকিস্থানে অপহরণ করা হয়। তারপর তাদের ধর্মান্তরিত করে জোর করে মুসলিম পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ মেয়েরাই আর কোনভাবে বাড়ি ফিরতে পারে না। তার কারণ পুলিশের সদিচ্ছার অভাব, দুর্বল বিচারব্যবস্থা এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণ।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে পাকিস্তানের সংখ্যালঘুরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হয়েছে। ২০১৯ সালের মে মাসের রমেশ কুমার নামে এক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে তিনি কোরানের একটি পাতায় মুড়ে ওষুধ বিক্রি করছেন। সেই অভিযোগে তার দোকান সহ আশেপাশের হিন্দুদের দোকানপাট বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানে শরিয়ত আইন ব্যবহার করে চরমপন্থাকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে।নষ্ট করা হচ্ছে সৌহার্দের পরিবেশ। অনেক সময় মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে অমুসলিমদের। এমনকি উন্মত্ত জনতা আইন হাতে তুলে নিচ্ছে যার ফল হচ্ছে সাংঘাতিক।
কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে পাঞ্জাব, সিন্ধ অঞ্চলে ১৮ বছরের কম বয়সী অমুসলিম মেয়েদের অপহরণ করে জোর করে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। কারণ এইসব মেয়েরা আর্থিক এবং সামাজিক ভাবে অনেকটাই পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর অংশ।