‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ২ কোটি ৭০ লক্ষ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু: ইডি

আটটি স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছিল আগেই। প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত মামলায় এ বার ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর অস্থাবর সম্পত্তির দিকে ‘নজর’ দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে মঙ্গলবার আদালতকে জানানো হয়েছে, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর দু’কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি অ্যাকাউন্ট।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর আটটি স্থাবর সম্পতি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। যাক আনুমানিক মূল্য ছিল সাত কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। আদালতকে ইডি জানিয়েছে, এ বার যে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করার জন্য দিল্লিতে ‘অ্যাডজুকেটিং অথরিটি’ (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক)-র কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, সেগুলিতে সরাসরি নিয়োগ দুর্নীতির টাকা জমা পড়েছিল। প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিটের ৬৭ এবং ৬৮ নম্বর পাতায় এই বিষয়টি জানানো হয়েছে ইডির তরফে।

পঞ্চম চার্জশিটে ইডির অভিযোগ ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর ওই একটি অ্যাকাউন্টে ব্যবসায় ভুয়ো ইনভয়েসের মাধ্যমে টাকা জমা পড়ত। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু সক্রিয় ভাবে ওই লেনদেনের প্রক্রিয়া দেখভাল করতেন বলেও আদালতকে জানিয়েছে ইডি। প্রসঙ্গত, ‘লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার সিইও পদে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সুজয়কৃষ্ণকে ইডি নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার করেছিল। তল্লাশি করেছিল সংস্থার ঠিকানাতেও।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট গত বছর ‘লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার ছ’জন ডিরেক্টরের নাম, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ, সংস্থার লেনদেন, তার মূল্য, এই সংস্থার কারা উপভোক্তা, তাঁদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সংস্থার রোজকার কাজ কে দেখতেন, তৎকালীন সিইও অভিষেকের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, সংস্থার সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কারা, কবে সংস্থায় যোগ দিয়েছেন, কেন সংস্থার ঠিকানা পরিবর্তন এবং তদন্ত নিয়ে কার কাছে ইডি সাহায্য চায়, তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল। এ বিষয়ে অভিষেকের কাছে নথি চাওয়া হলে তিনি ইডিকে ‘লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংক্রান্ত তথ্য জমা দিয়ে এসেছিলেন।

প্রসঙ্গত, লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার জন্যই অভিষেককে তলব করেছিল ইডি। সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। মূলত সংস্থার আর্থিক কাজকর্ম দেখাশোনা করতেন তিনি। পরে সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। তখন সংস্থার ডিরেক্টরের পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিটে ‘লিপ‌্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’কে অভিযুক্ত করেছে ইডি। ‘অভিযুক্ত’ হিসাবে লক্ষ্মী সাইকেল প্রাইভেট লিমিটেডে এবং নবীনকুমার গুপ্তর নামও রয়েছে। ওই সংস্থা এবং নবীনকুমারের ব্যবসায়িক লেনদেনে ‘অসঙ্গতি’ মিলেছে বলেও চার্জশিটে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.