খাঁচার চারপাশ ঘুরেও টোপ গিলছে না জ়িনত! হতাশায় বন দফতর, বসানো হচ্ছে স্মার্ট ট্র্যাপ ক্যামেরা

জঙ্গলে পেতে রাখা খাঁচার কাছাকাছি এসেছিল জ়িনত। চারপাশ ঘুরেও দেখছে। কিন্তু খাঁচার ভিতর সে ঢুকছেই না! ফলে সোমবার রাতেও অধরা থেকে গেল ওড়িশার বাঘিনি।

গত চার দিন এই ধরে ‘বাঘবন্দি খেলা’ চলছে ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ার জঙ্গলে। তার পরেও জ়িনতকে বাগে আনতে না-পারায় কার্যত হতাশায় ভুগছেন বনকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে জ়িনতের গতিবিধির উপর নজরদারি আরও বৃদ্ধি করতে সোমবার পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড় স্মার্ট ট্র্যাপ ক্যমেরায় ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছ বন দফতর। রাতে বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখতে থাকছে ইনফ্রারেড ক্যমেরা যুক্ত ড্রোনের ব্যবস্থাও।

শনিবার রাতে ঝাড়গ্রামের তেলিঘানার জঙ্গল থেকে বনপথে প্রায় ১২-১৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে হাজির হয়েছিল জ়িনত। রবিবার দিনভর সেখানেই লুকিয়ে ছিল বাঘিনি। বন দফতরের আশঙ্কা ছিল, রবিবার রাতেই হয়তো সে ঝাড়খণ্ডের দলমা পাহাড়ের দিকে চলে যেতে পারে। তার সম্ভাব্য সমস্ত রাস্তায় রাতভর নজরদারিও চালায় বন দফতর। কিন্তু রবিবার রাত তো দূর, সোমবারও জ়িনতের গতিবিধি রাইকা পাহাড়েই সীমাবদ্ধ ছিল।

বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার থেকে রাইকা পাহাড়ে একাধিক খাঁচা পেতে টোপ দিয়ে অপেক্ষা করেছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু বাঘিনি সেই খাঁচায় ধরা পড়েনি। রবিবার রাতে খাঁচার কাছাকাছিও এসেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টোপ গেলেনি সে।। বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বাঘিনির যাতায়াতের সম্ভাব্য রাস্তায় জঙ্গলের নিরিবিলি এলাকায় এই খাঁচা পাতা হচ্ছে। খাঁচার বেশ কিছুটা দূরে গাছে চড়ে নজরদারিও চালাচ্ছেন বনকর্মীরা। বাঘিনি খাঁচার কাছাকাছি এলে তাকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করার সব রকম প্রস্তুতিও থাকছে। কিন্তু বন দফতরের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ করে বাঘিনি কিছুতেই খাঁচামুখো না-হওয়ায় ক্রমশই চিন্তা বাড়ছে বন দফতরের। বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে যথেষ্ট সংখ্যক বুনো শুকর রয়েছে। ফলে বাঘিনির খাবারের তেমন অভাব হচ্ছে না। সে কারণেই খাঁচায় থাকা ছাগল বা মহিষের টোপ সে ভাবে কাজে লাগছে না।

বন দফতরের মুখ্য বনপাল বিদ্যুৎ সরকার বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে আটটি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এই ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে বাঘিনির উপর। বাঘিনি খাঁচার কাছাকাছি এলে ঘুমপাড়ানি গুলি করে তাকে ধরার চেষ্টা করা হবে। ইতিমধ্যেই বাঘিনি এক বার খাঁচার কাছাকাছি এসেও টোপের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু খাবারের লোভ দেখিয়ে তাকে ধরা ছাড়া আমাদের কাছে আর অন্য কোনও রাস্তা নেই।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.