‘এক দেশ, এক ভোট’ (ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন) নীতি কার্যকর করার পথে আরও এগোতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সূত্রের খবর, সংসদে চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল পেশ করতে পারে কেন্দ্র। যদিও এই বিল নিয়ে আলোচনার পথ খোলা রাখছে সরকার। বিলটি খতিয়ে দেখতে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (জেপিসি) পাঠাতে পারে তারা। কেন্দ্র চাইছে এই বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা হোক। সেই আলোচনায় বিরোধীদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাবে সরকার।
গত সেপ্টেম্বর মাসেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ‘এক দেশ, এক ভোট’ প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। সে সময় অনেক সূত্রই দাবি করেছিল শীতকালীন অধিবেশনই মোদী সরকার বিলটি সংসদে আনতে পারে। তবে এ ব্যাপারে সংসদে বিলটি পেশ করার আগে কেন্দ্র ‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে ঐক্যমত তৈরি করতে আগ্রহ দেখিয়েছিল।
‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে বিজেপি অনেকদিন ধরেই আগ্রহী। কেন্দ্রও এই ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে একাধিক পদক্ষেপ করেছে। এই নিয়ম কার্যকর হলে সারা দেশে একসঙ্গে লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে মোদী সরকারের যুক্তি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হয়, তা কমে যাবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না এবং তার সঙ্গে সরকারি কর্মীদের উপর থেকেও ভোটার তালিকা তৈরি ও ভোট সংক্রান্ত নানা কাজকর্মের চাপ কমবে।
‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালু করা কতটা বাস্তবসম্মত, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। গত মার্চেই সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। তার পরই কোবিন্দ কমিটির প্রস্তাব পাশ হয় মোদীর মন্ত্রিসভায়।
যদিও ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি তুলছে বিরোধী শিবির। তাদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী বলেও বিরোধী নেতৃত্বের অভিযোগ। সেই আবহেই এ বার সংসদে আসতে পারে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল।