ক্রিকেটের পাশাপাশি পড়াশোনাকেও সমান গুরুত্ব দেন বেঙ্কটেশ আয়ার। এমবিএ করেও থামেননি কলকাতা নাইট রাইডার্সের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। এখন তিনি পিএইচডি করছেন। অর্থশাস্ত্রে গবেষণা করছেন তিনি।
বেঙ্কটেশকে এ বার ধরে রাখেননি কেকেআর কর্তৃপক্ষ। তা নিয়ে নিজের কষ্ট গোপন করেননি মধ্যপ্রদেশের অলরাউন্ডার। দুঃখে চোখের জলও ফেলেছিলেন। আবার তাঁকেই নিলামে ২৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছে কেকেআর। আগামী আইপিএল শুরু আগেই তাঁর নামের আগে যুক্ত হতে পারে ‘ডক্টর’ উপাধি। আইপিএল খেলতে পারেন ডক্টর বেঙ্কটেশ আয়ার হিসাবে।
পড়াশোনায় ছোট থেকেই ভাল বেঙ্কটেশ। এমবিএ করার পর ২০১৮ সালে দেশের অন্যতম বড় অ্যাকাউন্টিং সংস্থার লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। পুরো দমে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্যই চাকরি করতে চাননি ২৯ বছরের ক্রিকেটার। চাকরি করতে হলে তাঁকে বেঙ্গালুরুতে থাকতে হত। তিনি ইন্ডোর ছাড়তে চাননি ক্রিকেটের স্বার্থে। তবে পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেননি। পিএইচডি শুরু করেন। আগেই গবেষণা পত্র জমা দিয়েছেন। বেঙ্কটেশের আশা, আগামী আইপিএলের আগেই পেয়ে যাবেন ডিগ্রি।
এক সাক্ষাৎকারে বেঙ্কটেশ বলেছেন, ‘‘আমার মতে ক্রিকেটারদের উচিত নিজেদের শিক্ষিত করা। শুধু ক্রিকেটীয় জ্ঞান নয়, সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধিও জরুরি। কেউ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করার সুযোগ পেলে, অবশ্যই করা উচিত। যেমন আমি অর্থশাস্ত্রে পিএইচডি করছি। পরের বার আমাকে ডক্টর বেঙ্কটেশ আয়ার বলে সম্বোধন করতেই পারেন।’’
নিজের পড়াশোনার ব্যাপারে কেকেআরের ক্রিকেটার আরও বলেছেন, ‘‘আমি বেশ রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছি। মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকেরা চান না সন্তানেরা শুধু খেলা নিয়ে থাকুক। তা ছাড়া ছোট থেকে পড়াশোনায় খারাপ ছিলাম না। বাবা-মা চাইতেন পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটও মন দিয়ে চালিয়ে যাই। মধ্যপ্রদেশ দলে নতুন কেউ এলেও আমি প্রথমে জানতে চাই, সে পড়াশোনা করছে কিনা। পড়াশোনা এমন একটা জিনিস, যেটা সারা জীবন আপনাকে সঙ্গ দেবে। ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কেউ ক্রিকেট খেলতে পারে না। ক্রিকেটের পরেও জীবন রয়েছে। জীবনে সত্যিই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে চাইলে, শিক্ষিত হতেই হবে।’’
ক্রিকেটীয় ব্যস্ততার মধ্যে কী ভাবে পিএইচডি করছেন? বেঙ্কটেশ বলেছেন, ‘‘খেলা থেকে দূরে থাকার সঠিক সুযোগ আমাকে করে দেয় পড়াশোনা। আমি সব সময় মোটেও ক্রিকেট নিয়ে ভাবি না। ক্রিকেট নিয়ে থাকিও না। তাতে অযথা চাপ তৈরি হয়। তা ছাড়া এক সঙ্গে দুটো চালিয়ে যেতে পারলে ক্ষতি কী? আমি নিজেকে সব সময় শিক্ষিত করতে চেয়েছি। পড়াশোনা করার জন্য খেলার সময় মাঠে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেও সুবিধা হয় আমার। অনেক সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে ক্রিকেটীয় দক্ষতার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় কোনও সিদ্ধান্ত।’’
গত মরসুমে আইপিএলে ৩৭০ রান করেছিলেন বেঙ্কটেশ। এ বার তিনি কেকেআরের নেতৃত্বের দায়িত্ব পেতে পারেন। ২০২৩ সালে তিনি ছিলেন দলের সহ-অধিনায়ক। ২০২১ সাল থেকে তিনি কেকেআরের হয়ে খেলছেন। দেশের হয়ে দু’টি এক দিনের ম্যাচ এবং ন’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন বেঙ্কটেশ।