১৯৫০ সালের শুরতে পাকিস্তান সরকারের মদতে নতুন নতুন এলাকায় হিন্দু
নিধন শুরু হয়। এই নিধন কর্মসূচিতে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল, ফরিদপুর
জেলায় পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। ফলে আবার পশ্চিমবঙ্গমুখী
উদ্বাস্তুর ঢল নামে। সে সময়। কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় তৎপরতা সীমাবদ্ধ
ছিল পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত পঞ্জাবের। উদ্বাস্তুদের নিয়ে। সমস্ত
বাঙ্গলায় উদ্বাস্তু সমস্যা দেখার জন্য ডেপুটি কমিশনার স্তরের। একজন মাত্র
আধিকারিককে নিযুক্ত করা হয়েছিল। ১৯৫০ সালের ২ মার্চ সে সময়ের কেন্দ্রীয়
পুর্বাসন কমিশনার মোহনলাল সাকসেনা পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, বিহার,
ওড়িশা সরকারের প্রতিনিধিদের নিয়ে কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ে বৈঠক করেন।
খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. মেঘনাথ সাহাও এই বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন। এই বৈঠকে
মোহনলাল সাকসেনা বাঙ্গলায় উদ্বাস্তুদের নিয়ে কেন্দ্রের জওহরলাল নেহরুর
সরকারের নীতি ব্যাখ্যা করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব। পাকিস্তান থেকে
আগত উদ্বাস্তুদের শুধু মাত্র ত্রাণ দেবে কোনোরকম স্থায়ী পুনর্বাসনের
ব্যবস্থা করবে না এবং সরকার আশা করে পরিস্থিতি শান্ত হলে উদ্বাস্তুরা নিজ
নিজ এলাকায় ফিরে যাবে। ড. মেঘনাথ সাহা সেদিন ক্ষোভ উগরে দিয়ে
উদ্বাস্তুদের প্রতি নেহরুর দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে
কেন্দ্রীয় সরকারের এই অমানবিকনীতির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। পশ্চিম
পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের স্থায়ী পুনর্বাসন নীতি ঘোষণা করলেও বাঙ্গালি
উদ্বাস্তুদের প্রতি কেন্দ্রের বৈমাত্রেয় আচরণের একটিই ব্যাখ্যা হতে পারে
যে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বাঙ্গালিদের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ ।
করতেন। কারণ ছেচল্লিশের গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং, নোয়াখালির দাঙ্গার মতো
সংগঠিত নরসংহারের পর হিন্দুদের আবার পাকিস্তানে ফিরে যেতে বলার অর্থ যে
ওদের আবার নেকড়ের মুখে ঠেলে দেওয়া। নেহরুর মতো বিচক্ষণ রাজনীতিবিদের তা
বোঝার ক্ষমতা নেই এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।অবশেষে জওহরলাল নেহরু
বাঙ্গালি উদ্বাস্তুদের নেকড়ের মুখে ঠেলে দেওয়ার পাকা পোেক্ত ব্যবস্থা
করলেন। ভারতমুখী উদ্বাস্তুর স্রোত বন্ধ করে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের
প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের সঙ্গে ঠাণ্ডা ঘরে বসে দীর্ঘ আলোচনার পর এক
চুক্তি স্বাক্ষর করলেন। ঠিক হলো ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যারা দেশ
ছেড়ে চলে গিয়েছে উভয় দেশ তাদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবে এবং সংশ্লিষ্ট
দেশের সরকার তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এই চুক্তিই নেহরু-লিয়াকত
চুক্তি নামে খ্যাত। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর আশঙ্কাগ্রস্ত হয়ে যে।
সমস্ত মুসলমান পশ্চিমবঙ্গ, অসম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তারা সবাই আবার ভারতে
ফিরে এসে বহাল তবিয়তে বসবাস করতে লাগলেন। কিন্তু পাকিস্তান ছেড়ে আসা
হিন্দুরা খোলা আকাশের নীচে, রাস্তার ধারে, নদীর চরে, শ্বাপদ সংস্কুল
এলাকায়, বসবাসের অযোগ্য ত্রাণ শিবিরে থেকে গেলেন কিন্তু পাকিস্তান নামক
বধ্যভূমিতে কেউ ফিরে গেলেন না। জওহরলাল নেহরু এখানেই থামলেন না ১৯৫০ সালের
১৫ অক্টোবর পাশপোর্ট ব্যবস্থা চালু করলেন। ভবিষ্যতে আর যাওয়া যাবে না এই
ভয়ে নতুন করে উদ্বাস্তুর স্রোত ভারতমুখী হতে লাগলো।
নেহরু-লিয়াকত
চুক্তির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করলেন শ্যামাপ্রসাদ
মুখার্জি। পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে ১৯৫০ সালের ১৯ এপ্রিল সংসদে দাঁড়িয়ে
বলেছিলেন—…আমাকে পদত্যাগ করতে যা বাধ্য করেছে তা হলো পাকিস্তানে, বিশেষত ।
পূর্ববঙ্গে সংখ্যালঘুদের প্রতি পাকিস্তানি আচরণ। একটা কথা বলে রাখা
প্রয়োজন, বাঙ্গলার এই সমস্যা কোনো প্রাদেশিক সমস্যা। নয়। এই সমস্যা থেকে
কিছু সর্বভারতীয় বিষয় উঠে এসেছে, যার সমাধানের উপর গোটা দেশের শান্তি ও
সমৃদ্ধি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি সবই নির্ভর করছে। এ দেশের বেশিরভাগ
মুসলমান ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ চেয়েছিলেন, যদিও একথা আমি আনন্দের সঙ্গে
স্বীকার করি যে একটি ছোট্ট অংশ যারা দেশপ্রেমিক এবং দেশের মঙ্গল কামনা করেন
তারা চাননি এবং এজন্য তাদের কষ্ট স্বীকারও করতে হয়েছিল।
অপর পক্ষে
হিন্দুরা কেউ দেশ ভাগ চাননি। যখন দেখা গেল দেশভাগ অবশ্যম্ভাবী তখন আমি
বাঙ্গলা ভাগ করার কাজে একটা বিশাল ভূমিকা পালন করেছিলাম। এর কারণ তা না
করলে গোটা বাঙ্গলা এবং সম্ভবত অসমও পকিস্তানে চলে যেতে। তখন আমার কোনো
ধারণাই ছিল না যে আমি কেনোদিন দেশের প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সদস্য
হতে পারি। (সেই সময়) আমি ও অন্য অনেকে পূর্ববঙ্গের হিন্দুদের আশ্বাস
দিয়েছিলাম যে যদি পাকিস্তান সরকার তাদের উপর অত্যাচার করে, যদি তাদের
মৌলিক নাগরিক অধিকার না দেওয়া হয়, যদি তাদের জীবন ও মান-সম্মান বিপর্যস্ত
হয় বা তাদের উপরে আক্রমণ হয় তাহলে স্বাধীন ভারত চুপ করে তাবসে
দেখবেনা—ভারতের সরকার জনগণ তাদের ব্যাপারে সাহসের সঙ্গে তৎপর হবে। গত আড়াই
বছরে তারা যে যন্ত্রণা পেয়েছে তা যথেষ্ট ভয়াবহ এবং আজকে আমার স্বীকার না
করে উপায় নেই যে তাদের যে আশ্বাস আমি দিয়েছিলাম আমি তা বহু চেষ্টা
সত্ত্বেও রাখতে পারিনি এবং শুধু এই জন্যই বর্তমান সরকারে থাকবার কোনো নৈতিক
অধিকার আমার আর নেই।
অতি সম্প্রতি পূর্ববঙ্গে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা অবশ্য
তাদের গত আড়াই বছরের অত্যাচার ও অপমানকে ম্লান করে দিয়েছে। আমরা যেন
ভুলে না যাই যে পূর্ববঙ্গে হিন্দুদের ভারতের কাছ থেকে সাহায্য পাবার যে
অধিকার আছে তা শুধু মানবিক কারণে নয়। তারা দেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও
বৌদ্ধিক প্রগতির জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে স্বার্থহীন ভাবে কাজ করে
গেছেন। যে সমস্ত দেশনেতা আজ আমাদের মধ্যে নেই এবং যেসব যুবক হাসতে হাসতে
ফাঁসির মঞ্চে আরোহণ করেছেন তারা আজ সম্মিলিত কণ্ঠে ন্যায় বিচার চাইছেন।…
পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ও মূলনীতিই হচ্ছে একটি ইসলামি রাষ্ট্র তৈরি করা এবং
সেখান থেকে সমস্ত হিন্দু ও শিখকে বিতাড়িত বা হত্যা করা এবং তাদের সমস্ত
সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। এই মূল নীতির জন্যই পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের জীবন
হয়ে দাঁড়িয়েছে‘বিপদসঙ্কুল, বীভৎস ও সংক্ষিপ্ত। ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না
যাই। ভুলে গেলে তা আমাদের সর্বনাশ ডেকে আনবে।… সমস্যাটা কিন্তু
সাম্প্রদায়িক নয়, সমস্যাটা রাজনৈতিক। যে চুক্তি করা হলো তাতে ইসলামীয়
রাষ্ট্রের মূলস্বরূপটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে…।
১৯৫১ সালের ৩০ মার্চ
সংসদে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা চলছিল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করে।
শ্যামাপ্রসাদমুখার্জি সরকার পক্ষকে উদ্বাস্তুদের প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি
স্মরণ করিয়ে দিয়ে পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ কর ধার্য করার প্রস্তাব রাখেন।
এই প্রস্তাবের স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে বলেন, এই পুনর্বাসন একটি সাধারণ
সামাজিক সমস্যা নয়, এটি একটি সাধারণ অর্থনৈতিক সমস্যা নয়— এটি একটি বড়ো
রাজনৈতিক সমস্যা, একটি মানবিক সমস্যা, এই সমস্যা সমাধান করা ভারত সরকারের
নৈতিক দায়িত্ব। উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সংসদের সাব কমিটির সদস্য হিসেবে
সুচেতা কৃপালনী দেশের পূর্ব সীমান্তে বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির পরিদর্শন করে
প্রত্যক্ষ ভাবে বুঝতে পারেন যে উদ্বাস্তু শিবিরগুলিতে পরিস্থিতি এতটাই
ভয়াবহ যে উদ্বাস্তুরা বাধ্য হচ্ছে পাকিস্তানে ফিরে যেতে। তিনি বলেন, সরকার
শতমুখে তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে উদ্বাস্তুরা
পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু আমি জানি তারা কেন ফিরে যাচ্ছে— তারা
ভালোবেসে পাকিস্তানি নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য ফিরে যাচ্ছে এমন নয়।
উদ্বাস্তু শিবিরগুলির ভয়াবহ পরিস্থিতিজনিত হতাশা থেকে মুসলমান হয়েই তারা
সেখানে বসবাস করবে এটা নিশ্চয় করেই তারা পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছে। সুচেতা
কৃপালিনী সেদিনের আবেগ ভরা ভাষণে বলেন, এই উদ্বাস্তুদের কখনই বিদেশি হিসেবে
দেখা উচিত নয়। এদের এখানের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে স্থানীয় জনসাধারণ ও
অর্থনীতির সঙ্গে একাত্ম করার কথা ভাবতে হবে। (Parliamentary Debates
Volume IX).
বাঙ্গালি উদ্বাস্তুদের প্রতি জওহরলাল নেহরু ও সে সময়ের
কংগ্রেস নেতৃত্বের সংবেদনশীলতা ও সহমর্মিতার অভাব পরবর্তীকালের কংগ্রেস
নেতৃত্বের মধ্যেও দেখা যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের। স্বাধীনতা যুদ্ধ ও
বাংলাদেশের জন্মের পর আবার ভারতমুখী উদ্বাস্তুর ঢল নামে। পিতা জওহরলাল
নেহরুর মতো ইন্দিরা গান্ধীরও বাংলাদেশে হিন্দুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববার
সময় বা সংবেদনশীলতা কোনোটাই ছিল না। ভারতীয় সেনার রক্তের বিনিময়ে
স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হলেও পাকিস্তানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া
নোয়াখালি, ভৈরব ব্রীজের নরসংহার খ্যাত একটি মুসলমান সংখ্যাগুরু দেশের
অমুসলমানরা কেমন থাকতে পারে ইন্দিরা গান্ধী সে সম্পর্কে ইতিহাস থেকেও
শিক্ষা নিলেন না, চিন্তাও করলেন না, নবজাত বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য
কোনোরকম রক্ষাকবচের ব্যবস্থাও করলেন না। নেহরু লিয়াকত চুক্তির ২৪ বছর পর
১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত হলো ইন্দিরা মুজিব চুক্তি। এই চুক্তিতেও আবার
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাসের কথা উঠে এল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
অর্থনীতির অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাতের গবেষণা বলছে ৩০ বছর পর বাংলাদেশে আর
কোনো হিন্দু থাকবে না। তিন দশকের গবেষণার ফলাফল হিসেবে ড. বারাকাত
দেখিয়েছেন বাংলাদেশের জন্মের আগে হিন্দুদের দেশত্যাগের হার ছিল প্রতিদিন
৭০৫ জন। ২০০১-২০১২ সালে এটা বেড়ে হয়েছে ৭৭৪ জন। স্পষ্টতই জওহরলাল নেহরুর
ভুলের পুনরাবৃত্তি করলেন কন্যা ইন্দিরা গান্ধী।
ইন্দিরা মুজিব চুক্তির
১১ বছর পর ইন্দিরা পুত্র রাজীব গান্ধী ১৯৮৫ সালে অসমের আঞ্চলিক দলগুলির
সঙ্গে স্বাক্ষর করলেন উদ্বাস্তু হিন্দু বাঙ্গালি বিরোধী অসম চুক্তি। এই
চুক্তিতে বলা হলো ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের মধ্যে যারা অসমে প্রবেশ করেছে
একমাত্র তারা অসমের বাসিন্দা হিসেবে ভারতের নাগরিকত্ব পাবে। এর পরে যারা
এসেছে তারা। বিদেশি বলে গণ্য হবে। অসমে সদ্য হওয়া এনআরসি-র জেরে লক্ষ লক্ষ
হিন্দু উদ্বাস্তুর রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার ঘটনাও কিন্তু রাজীব গান্ধী
সম্পাদিত অসম চুক্তির ফসল। জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী
ভারতের এই তিন প্রধানমন্ত্রীই ধারাবাহিক ভাবে উদ্বাস্তু হিন্দুরা যাতে কোনো
ভাবেই ভারতে অধিকার কায়েম করতে না পারে সেই লক্ষ্যে বড়ো বড়ো সিদ্ধান্ত
নিয়ে গেছেন। অতি সম্প্রতি কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান সরকার একই পরিবারের ২১
জন পাকিস্তানি হিন্দু শরণার্থীকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেওয়ার অর্থাৎ
পাকিস্থানে ফেরত পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছিল। বিষয়টি কেন্দ্রের বিজেপি
সরকারে নজরে আসতেই গত ২৭ নভেম্বর জয়পুরে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এদের
হাতে। ভারতীয় নাগরিকত্বেরশংসা পত্র তুলে দেওয়া হয়। এর থেকে বলা যায়
শুধু গান্ধী পরিবার নয়, উদ্বাস্তু হিন্দু বিরোধী পরম্পরা কংগ্রেস দলের
ডিএনএতে।
স্বাধীনতার সাত দশক পর বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার
নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে উদ্বাস্তু হিন্দুদের নাগরিকত্ব প্রদানের উদ্যোগ
নিয়েছে। এখন জওহরলাল নেহরু নেই, কিন্তু নেহরুর দল কংগ্রেস ও মমতার মতো
ভাবশিষ্যরা আবার উঠে পড়ে লেগেছে উদ্বাস্তু হিন্দুদের ভাগ্য নির্ধারণ
ঘটানোর জন্য।
বিশেষ অধিকার বাতিল করে কাশ্মীরের ভারত ভুক্তির প্রক্রিয়া
সম্পূর্ণ করা এবং উদ্বাস্তু হিন্দুদের প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার
স্বপ্ন বুকে নিয়ে শহিদের মৃত্যুবরণ করা— এই সংকল্প নিয়ে শ্যামাপ্রসাদ
মুখার্জির ভাবশিষ্যরা বিগত সাতদশক ধরে কঠোর তপস্যা করে এসেছে। ৩৭০ ধারা
বাতিল, রামমন্দির নির্মাণের মতো দুটি অসাধ্য সাধনের মতো ঘটনায় ইতিমধ্যেই
প্রমাণিত যে দীর্ঘ তপস্যার ফলে বলিয়ান শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ভাবশিষ্যরা
এখন অপ্রতিরোধ্য।
এহেন অপ্রতিরোধ্য শক্তির সামনে উদ্বাস্তু হিন্দুদের
ভাগ্য বিপর্যয় রুখে দেওয়ার লক্ষ্যে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের (ক্যাব)
উদ্যোগের পথে কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
সাধন কুমার পাল
2019-12-13