অধ্যাপকদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন! সমর্থন করে না যাদবপুর, বিবৃতি দিয়ে কড়া বার্তা উপাচার্যের

আন্দোলনের নামে অধ্যাপকদের হেনস্থা, তাঁদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাকে অনুমোদন করেন না কর্তৃপক্ষ, একটি বিবৃতিতে এমনটাই জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, কর্তৃপক্ষ তার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগ গত কয়েক দিন ধরে শিরোনামে। সেখানে খাতা না দেখে নম্বর বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে। গত সোমবার ওই বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা তালা ঝুলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের দাবি, তাঁর আমলেই খাতা দেখা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বিভাগের অন্দরে। খাতা না দেখে নম্বর বসানোর অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক অভিষেক দাসের বিরুদ্ধেও। তাঁর ঘরেও তালা ঝোলানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের শোকজ় করেছেন। শুক্রবারের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে দু’জনকেই।

অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করলেও তাঁদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া অনুমোদন করেননি কর্তৃপক্ষ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার তরফে ছাত্রছাত্রীদের এই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার উপাচার্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই উপাচার্যের বিবৃতি এল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের দুই শিক্ষকের ঘরে আন্দোলনের নামে কিছু ছাত্রের তালা লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা কোনও ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করেন না। আগামী দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, কর্তৃপক্ষ তার ব্যবস্থা করবেন।’’

এর আগে মঙ্গলবার উপাচার্যকে দেওয়া জুটার চিঠিতে ছাত্রদের এই ধরনের আচরণের বিরোধিতা করা হয়েছে। জুটার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনকে সম্পূর্ণ রূপে বেসামাল করে তোলা এই ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্য। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে সার্বিক ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

পরীক্ষার ফলপ্রকাশে দেরি নিয়ে যাদবপুরের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগে বিতর্কের সূত্রপাত। ২০২৩-২০২৫ ব্যাচের পড়ুয়ারা ফলপ্রকাশে দেরি হওয়ায় বিভাগে গিয়ে খাতা দেখতে চেয়েছিলেন। তখনই তাঁরা দেখেন, খাতা না দেখে নম্বর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সরব হন পড়ুয়ারা। অভিযুক্ত অধ্যাপকদের সাসপেন্ড করার দাবি জানান তাঁরা। অধ্যাপকদের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চলে দীর্ঘ ক্ষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.