নম্বর-বিতর্ক: গণজ্ঞাপনের ২ অধ্যাপককে সাসপেন্ডের দাবি, সোমে ক্লাস বয়কটের পথে যাদবপুরের পড়ুয়ারা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগে ইন্টারনালের পরে এক্সটারনাল সিমেস্টার পরীক্ষার খাতার মূল্যায়ন নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। পড়ুয়াদের দাবি, একটি বিষয়ের পরীক্ষার খাতা না-দেখেই তাতে নম্বর বসানো হয়েছে। শুক্রবার সিমেস্টারের খাতা দেখার পর ২০২৩-২৫ ব্যাচের পড়ুয়াদের সেই অভিযোগই জোরালো হল। তাঁদের অভিযোগ, একটি বিষয়ের অনেক খাতাতেই নম্বর কেটে নতুন করে তা বসানো হয়েছে, অথচ সেখানে কারও সই নেই। তাঁদের এ-ও অভিযোগ যে, সিমেস্টারে একটি বিষয়ের পরীক্ষার খাতায় গড়ে নম্বর বসানো হয়েছে। আর এ সবের জন্য তাঁরা ওই বিষয়ের অধ্যাপক অভিষেক দাস এবং সহযোগী অধ্যাপক সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলছেন। তাঁদের দাবি, ওই দুই অধ্যাপককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা না-হলে সোমবার থেকে ক্লাস করবেন না স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা। অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছেন, পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

যাদবপুরের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগের পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, ইন্টারনাল পরীক্ষার খাতা না-দেখেই নম্বর বসিয়েছেন শিক্ষক। কখনও আবার ‘রাজনৈতিক রং’ দেখে পরীক্ষার্থীকে নম্বর দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিভাগে গিয়ে তাঁরা খাতা দেখেন। তখনই এই বিষয়টি জানা গিয়েছে বলে দাবি পড়ুয়াদের। এর পরেই পড়ুয়ারা এক্সটারনাল সিমেস্টারের খাতা দেখানোর দাবি তোলেন অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবার সেই খাতা পরীক্ষার্থীদের দেখানো হবে। সেই মতো শুক্রবার বিভাগীয় প্রধান পার্থসারথি চক্রবর্তী সেই খাতা দেখেন। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন পর্যবেক্ষক তথা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী, ডিন এবং পড়ুয়াদের দুই প্রতিনিধি।

শুক্রবার এই খাতা দেখার পরেই ২০২৩-২৫ ব্যাচের পড়ুয়াদের অভিযোগ, বেশ কিছু খাতায় গড়ে নম্বর বসানো হয়েছে। কিছু খাতায় নম্বর কেটে অন্য নম্বর বসানো হলেও তাতে কোনও শিক্ষকের সই নেই। তাঁরা এ সবের জন্য দুই অধ্যাপককে দায়ী করেছেন। ওই দুই অধ্যাপককে সাসপেন্ড করা না-হলে সোমবার থেকে ক্লাস বন্ধ করার কথাও জানিয়েছেন। এক পড়ুয়ার দাবি, অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর সোমবার দুই অধ্যাপককে শোকজ় নোটিস পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও ভাস্কর জানিয়েছেন, ছাত্রদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর থেকে বেশি কিছু তিনি বলতে পারবেন না।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগে নম্বর কারচুপির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। সোমবার অরবিন্দ ভবনে উপাচার্যের দফতরের সামনে এক দফা বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। শেষে রাতের দিকে কর্তৃপক্ষের তরফে শুক্রবারের মধ্যে ফলপ্রকাশের প্রতিশ্রুতি পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেন তাঁরা। ইন্টারনালের পর এক্সটারনাল সিমেস্টার পরীক্ষায় একটি বিষয়ের খাতা দেখাতেও উঠেছে কারচুপির অভিযোগ। এ বার পড়ুয়াদের দাবি, এই বিষয়ের অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপককে সাসপেন্ড করতে হবে। তা করা না হলে সোমবার থেকে ক্লাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.