সিসিটিভি ফুটেজ বলছে গাড়ির গতি স্বাভাবিক ছিল, দেহরাদূন-কাণ্ডে ধড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন কী ভাবে?

দেহরাদূনে গাড়ি দুর্ঘটনায় ছয় ছাত্রছাত্রীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানা দাবি ঘুরছে। তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে। ওই ছাত্রছাত্রীরা ‘লং ড্রাইভে’ বার হওয়ার আগে মদ্যপান করেছিলেন, গাড়ি ঝড়ের গতিতে চালাচ্ছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু পুলিশ বলছে, সব কিছুই এখন তদন্তসাপেক্ষ। এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ছাত্র সিদ্ধেশ আগরওয়াল যত ক্ষণ না কথা বলার মতো অবস্থায় ফিরছেন, তত ক্ষণ আসল ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানা সম্ভব নয়।

তবে সিসিটিভি ফুটেজে ওই ছাত্রছাত্রীদের গাড়ির গতিবিধি খতিয়ে দেখে পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার রাত, অর্থাৎ ১১ নভেম্বরের সেই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাজপুর রোড, সহরানপুর চওক, কাম্বলি রোড, বল্লীবালা থেকে বল্লুপর পর্যন্ত স্বাভাবিক গতিতেই ছিল ছাত্রছাত্রীদের গাড়ি। যে ট্রাকে ধাক্কা মেরেছিল গাড়িটি, সেই ট্রাকের গতিবিধিও সিসিটিভি ফুটেজে খতিয়ে দেখে পুলিশ। সেখানে দেখা গিয়েছে, কিসাননগর চওক থেকে ওএনজিসি চওক পর্যন্ত স্বাভাবিক গতিতেই ছিল ট্রাকটিও। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে এই ভয়ানক দুর্ঘটনা, তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। দুর্ঘটনার পর যে ভাবে দেহ রাস্তায় পড়েছিল, যে ভাবে মাথা কেটে আলাদা হয়ে গিয়েছে দু’জনের, সেই দৃশ্য দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, গাড়ির গতি বেশি ছিল। আর এখানেই পরস্পরবিরোধী একটি তথ্য খাড়া হচ্ছে। আর এই উত্তর খুঁজতেই এখন মরিয়া পুলিশ।

এই দুর্ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিচয় জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। মৃতেরা হলেন, কামাক্ষী (২০), গুনিত (১৯), ঋষভ জৈন (২৪), নভ্য গয়াল (২৩), অতুল আগরওয়াল (২৪) এবং কুণাল কুকরেজা (২৩)। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গাড়িটি ছিল অতুলের। ধনতেরসের সময় তাঁর বাবা গাড়িটি কিনেছিলেন। সেই গাড়ি নিয়েই রাতের শহর ঘুরতে বেরিয়েছিলেন ওই ছাত্রছাত্রীরা। অসমর্থিত এক সূত্রের দাবি, অতুলরা নতুন গাড়ি কেনায়, তাঁর বন্ধুরা পার্টি দিতে বলেছিলেন। নতুন গাড়িটি নিয়ে সেই পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন অতুল। সকলে সেখানেই ছিল। মদ্যপানের পর ‘লং ড্রাইভে’ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অতুলেরা। দুর্ঘটনার সময় ওই ছাত্রছাত্রীরা মত্ত ছিলেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

দেহরাদূনের এই ঘটনা নিয়ে যখন চার দিকে নানা তত্ত্ব ঘুরছে, সিদ্ধেশ আগরওয়ালের বাবা এক টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে আবেদন জানান, বাইরে নানা রকম তত্ত্ব ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেমন, অন্য একটি গাড়ির সঙ্গে রেষারেষি করতে গিয়ে দুর্ঘটনা, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন ইত্যাদি। এই সব তত্ত্বে কেউ যেন বিশ্বাস না করেন। কিন্তু বিপিনের দাবি, এই সব তত্ত্ব সম্পূর্ণ ভুল। পুলিশ তদন্ত করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.