জগদ্ধাত্রী পুজোও রাজনীতির প্রভাবে বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশে পুরুলিয়া শহরে জগদ্ধাত্রী পুজো করবে বর্তমান কমিটি, মুখ থুবড়ে পড়ল শাসক দল। আজ কলকাতা উচ্চ আদালত শ্রী শ্রী জগদ্ধাত্রী পুজো পুরুলিয়া কমিটিকে পুজো করার জন্য আদেশ দেয়। ওই কমিটির সভাপতি তথা বিজেপি নেতা গৌতম রায় জানান, “মন্দিরে পুজো করার দায়িত্ব আমাদের কমিটির হাতেই থাকল। একই সঙ্গে পুলিশকে আইন শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখার জন্য বলে আদালত। যথারীতি পুজোর উদ্বোধন ৮ তারিখ হবে।”
পুরুলিয়া শহরে জগদ্ধাত্রী পুজো বন্ধের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। অনুমতিতে গড়িমসি করে প্রশাসন, বলে অভিযোগ করেন শ্রী শ্রী জগদ্ধাত্রী পুজো পুরুলিয়া কমিটির অন্যতম সদস্যা পম্পা রায়। শাসক দলের হস্তক্ষেপে প্রশাসনের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ পুরুলিয়া শহরের ওই পুজে কমিটি। পুজোর অনুমতির জন্য বুধবার দুপুরে স্মারকলিপি দেয় হিন্দু সচেতনতা মঞ্চ। সঙ্গে ছিল পুজো কমিটির সদস্যরা। পুরুলিয়া সদর মহকুমা শাসকের কাছে এই চিঠি দিয়ে অনুমতির আবেদন তাঁদের।
পুরুলিয়া শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সরকার পাড়া দুর্গা মন্দিরে অনুষ্ঠিত জগদ্ধাত্রী পুজো এবার ১১ বছর পেরিয়ে ১২- তে পদার্পণ করল। পুজোর মূল উদ্যোক্তা জেলা বিজেপির সহ সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ গৌতম রায়। তিনি প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ছিলেন। আর এই নিয়েই মূলত তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির লড়াই শুরু হয়েছে। মূর্তি গড়া হয়ে গিয়েছে। দু’দিন পরই উদ্বোধন হওয়ার কথা মণ্ডপের। আর এই নিয়েই হতাশা জন্মেছে এলাকাবাসীর। সরকার পাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির অন্তর্গত একটি নতুন কমিটি গড়া হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে সরকার পাড়া সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি। সেই কমিটির বিরুদ্ধে মূলত বাধ সাধার অভিযোগ। ওই কমিটির সম্পাদক স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বৈদ্যনাথ মন্ডল ঘনিষ্ঠ রাজীব ব্যানার্জি।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা অনুমতি দিতাম। তা করেনি। তাই দুর্গাপূজা কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য একটি কমিটি গড়া হয়েছিল। প্রয়োজনে মন্দিরে আমরাই পুজো করতাম।” সম্প্রতি দুই পক্ষ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। পুজো হবে কি না সবটাই আদালতের নির্দেশের উপর নির্ভর করছিল। অবশেষে শ্রী শ্রী জগদ্ধাত্রী পুজো পুরুলিয়া কমিটি তাঁদের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হল উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে।