এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সরকারের প্রধানদের সঙ্গে বিচারপতিদের বৈঠক মানেই, কোনও ‘বোঝাপড়া’ হচ্ছে, এমনটা নয়।’’ অবসরের আগে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় তাঁর বাড়িতে গণেশ উৎসবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতি নিয়ে আবার মুখ খুললেন। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আমি মনে করি, এতে কোথাও, কোনও ভুল ছিল না।’’
রাষ্ট্রপতি ভবনে ২৬ জানুয়ারি বা ১৫ অগস্টের কর্মসূচি এবং বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের ভারত সফরের সময় সরকারি অনুষ্ঠান এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির অবসর ও দায়িত্বগ্রহণ কর্মসূচিতেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আগামী ১১ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় অবসর নেবেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। তার আগে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই সাক্ষাৎগুলির সঙ্গে আমরা যে মামলাগুলির সিদ্ধান্ত নিই, তার কোনও সম্পর্কও নেই। এতে জীবন ও সমাজের বিষয় জড়িত।’’
গত ১১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের দিল্লির সরকারি বাসভবনে আয়োজিত গণেশ পুজোয় অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত সেই গণপতি পুজোর ছবিতে দেখা গিয়েছে, প্রজ্বলিত প্রদীপের থালা হাতে আরতি করছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বাঁ দিকে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। ডান দিকে প্রধান বিচারপতির স্ত্রী কল্পনা দাস। প্রধান বিচারপতির বাড়ির পুজোয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে সে সময় সমাজমাধ্যমে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। মোদী বিষয়টি নিয়ে দুষেছিলেন কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের।
অন্য দিকে, প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় গত ২৭ অক্টোবর আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’-এর প্রতিবেদককে বলেছিলেন, “আমরা (বিচারপতিরা) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলি। কারণ তাঁরা বিচারবিভাগের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেন। এই অর্থ কিন্তু বিচারপতিদের জন্য বরাদ্দ করা হয় না। আমরা যদি সাক্ষাৎ না করে শুধু চিঠির উপরে ভরসা করি, তবে আমাদের কাজ হবে না।”
একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য ছিল, “আমার অভিজ্ঞতায় আমি কোনও সরকার প্রধানকেই অমীমাংসিত মামলার বিষয়ে কথা বলতে দেখিনি।” সোমবার প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘বোঝার জন্য রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পরিপক্বতা থাকতে হবে। আমরা যে কাজ করি তা আমাদের লিখিত শব্দ দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়। আমরা যা কিছু সিদ্ধান্ত নিই, অন্য অনেক ব্যবস্থার মত, তা গোপন রাখা হয় না। তা প্রকাশ্যে যাচাই করা হয়।’’ ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর তিনি সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষপদের দায়িত্ব নেওয়ার পরে, অভিযুক্তদের জামিন দেওয়ার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, জামিনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, কারণ জামিন ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে সম্পর্কিত।’’