জম্মু ও কাশ্মীরের আখনুরে সেনার অ্যাম্বুল্যান্সে হামলার নেপথ্যে ছিল জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠী। নিরাপত্তা বাহিনীর আধিকারিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বুধবার এ কথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। জঙ্গিরা সম্প্রতি পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে আখনুরে প্রবেশ করেছিল। ভারতীয় ভূখণ্ডে বড়সড় নাশকতার ‘ছক’ ছিল তাদের। মৃত জঙ্গিদের থেকে একটি ওয়্যারলেস যন্ত্রও পাওয়া গিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ওই যন্ত্র থেকেই হামলার নেপথ্যে জইশ-যোগের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন আধিকারিকেরা।
সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ বাহিনীর অ্যাম্বুল্যান্সে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। মোট তিন জন জঙ্গি ছিল। প্রথমে এলাকার একটি মন্দিরের কাছে লুকিয়ে ছিল জঙ্গিরা। সেই সময়েই সেনার দু’টি গাড়িকে এগিয়ে আসতে দেখে গুলি ছুড়তে শুরু করে তারা। জঙ্গি হামলার প্রাথমিক ধাক্কা সামলেই পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেন জওয়ানেরা। বাহিনীর অ্যাম্বুল্যান্সে গুলি চালানোর পর নিকটবর্তী জঙ্গলে প্রবেশ করেছিল জঙ্গিরা। সেই জঙ্গলের ভিতরে এবং আশপাশের এলাকায় জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছিল। সোমবারই বাহিনীর গুলিতে এক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালের মধ্যে বাকি দুই জঙ্গিরও মৃত্যু হয়।
জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে একের পর এক জঙ্গি কার্যকলাপের ঘটনা ঘটছে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন জম্মু ও কাশ্মীরের নতুন সরকার এবং কেন্দ্রও। আখনুরে সেনার অ্যাম্বুল্যান্সে হামলা হয়েছিল গত সোমবার। গত সপ্তাহে গুলমার্গেও সেনার গাড়িতে হামলা চলেছিল। তাতে দু’জন জওয়ান এবং বাহিনীর দুই মালবাহকের মৃত্যু হয়েছিল। সম্প্রতি সোনমার্গের কাছে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপরেও হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। এক চিকিৎসক-সহ সাত জনের মৃত্যু হয়েছিল ওই হামলায়। সোনমার্গের হামলার দায় স্বীকার করেছিল ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে এক জঙ্গি গোষ্ঠী। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার প্রভাব রয়েছে এই নতুন জঙ্গি গোষ্ঠীতে। পর পর ঘটনাগুলি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দাদের কপালেও।
পিটিআই জানিয়েছে, সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করে জম্মু-কাশ্মীরের তরুণদের নিয়োগের চেষ্টা করছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা এবং জঙ্গি সংগঠনগুলি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার ফলে এখন জঙ্গি সংগঠনে নতুন নিয়োগের জন্য সরাসরি যোগাযোগ করা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় তাই সরাসরি যোগাযোগের বদলে, সমাজমাধ্যমগুলিকে ব্যবহার করছে তারা। আধিকারিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআইয়ের সংবাদে উল্লেখ— ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস্অ্যাপ, এক্স, টেলিগ্রামের মতো সমাজমাধ্যম ব্যবহার করছে সংগঠনগুলি। পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে ভুয়ো প্রোফাইল। ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-ও ব্যবহার করা হচ্ছে।