গুজরাতের বরোদায় চালু হল টাটার নয়া বিমান নির্মাণ কারখানা। স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে সোমবার কারখানাটি উদ্বোধন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নয়া এই ‘টাটা এয়ারক্র্যাফ্ট কমপ্লেক্স’-এ ব্যবসায়িক ভাবে তৈরি করা হবে সি-২৯৫ বিমান।
সোমবার বরোদায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘এখানে তৈরি সি-২৯৫ বিমানগুলি ভবিষ্যতে রপ্তানিও করা হবে। আমার বিশ্বাস, টাটা-এয়ারবাসের যৌথ উদ্যোগে বিমান তৈরি শুরু হলে ভারত-স্পেন সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। সেই সঙ্গে পুষ্ট হবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ মিশনও।’’ অনুষ্ঠানে টাটা সন্সের সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান তথা শিল্পপতি রতন টাটার প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টাটা সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরনও। সেখানেই স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো বলেন, ‘‘এই প্রকল্প শুরু হলে এক দিকে যেমন দুই দেশের শিল্প-সম্পর্ক শক্তিশালী হবে, তেমনই ভারতে অন্যান্য ইউরোপীয় সংস্থাগুলির আগমনের নতুন দরজাও খুলে যাবে। আগামী দিনে এই বিমান নির্মাণ কারখানাই হবে দেশের শিল্পের উৎকর্ষের প্রতীক, সমৃদ্ধির চালিকাশক্তি এবং দু’দেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের প্রমাণ।’’
গত বছরেই ভারতীয় বায়ুসেনার মুকুটে নয়া পালক হিসাবে জুড়েছে এই সি-২৯৫ বিমান। ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর স্পেনের বিমান নির্মাতা সংস্থা ‘এয়ারবাস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস’ সেভিল এয়ারফিল্ডে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম সি-২৯৫ বিমানটি বায়ুসেনার হাতে তুলে দিয়েছিল। এর পর ২০ সেপ্টেম্বর গুজরাতের বরোদার বায়ুসেনাঘাঁটিতে স্পেন থেকে প্রথম সি-২৯৫ বিমানটি এসে পৌঁছয়। সে সময়েই বিমানের নির্মাতা সংস্থা জানিয়ে দেয়, অদূর ভবিষ্যতে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে ভারতেই তৈরি হবে এই বিমান। সহযোগী সংস্থা হিসাবে থাকবে ‘টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড’। গুজরাতের বরোদায় তৈরি করা হবে বিমান নির্মাণের কারখানা। সেই কারখানারই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল সোমবার।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ৫৬টি সি-২৯৫ বিমানের জন্য এয়ারবাসের সঙ্গে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার চুক্তি করেছিল নয়াদিল্লি। সেই মতো স্পেন থেকে ১৬টি বিমান আমদানি করা হয়। স্থির হয়, বাকি ৪০টি বিমান বানানো হবে ভারতেই। মাঝারি শক্তির এই পরিবহণ বিমান ছোট রানওয়েতে ওঠানামা করতে পারে। ফলে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি যে সব অঞ্চলে বড় বিমান অবতরণ করতে পারে না, সেখানেও অনায়াসে নামতে পারবে সি-২৯৫। প্রয়োজনে এই বিমান শত্রুপক্ষের উপর নজরদারির কাজেও ব্যবহার করা যায়। এক সঙ্গে ৭১ জন সেনা, প্রয়োজনীয় অস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম-সহ ৫০ জন প্যারাট্রুপার কমান্ডোকে নিয়ে পাড়ি দিতে পারে সি-২৯৫।