বেলাগাম গোরুদের নিয়ে চিন্তিত উত্তর প্রদেশ সরকার। গোরুদের রক্ষণাবেক্ষন এবং সুরক্ষার বিষয়টিকে উন্নতিতে গুরুত্ব দিয়ে এবার ‘কাউ সাফারি’ শুরু করছে রাজ্য। গো-সুরক্ষায় নজর দিয়ে রাজ্যের প্রাণীসম্পদমন্ত্রী লক্ষ্মী নারায়ণ চৌধুরী যোগী সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন।
রাজ্যের প্রাণীসম্পদমন্ত্রী জানিয়েছেন, “যোগী সরকার গো-রক্ষায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং গোরুদের রক্ষা করা ও সুরক্ষার দিকটিকে দেখা আমাদের সকলের দায়িত্ব”। কাউ সাফারির পরিকল্পনার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “বারাবাঙ্কি এবং মহারাজগঞ্জের মতন আর যেখানে বিস্তীর্ণ খালি জায়গা আছে সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে সেখানে সাফারি তৈরি করতে চাই। অন্তত ১৫০০০ থেকে ২৫০০০ গোরুদের একসঙ্গে রাখা যাবে”।
তিনি আরও বলেন, “আমি এমন সাফারি বানাতে চাই যেখানে শক্তি উৎপন্নের জন্য বায়ো-গ্যাস প্ল্যান্ট ইউনিট তৈরি করা সম্ভব হবে এবং গোরুর বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে পুনরায় নতুন কিছু করা যাবে”। তিনি বলেছেন গোরুরা বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে এই বিষয়টিকে মুখ্যমন্ত্রীর নজরেও এনেছেন তিনি।
নভেম্বরের ২৪ তারিখ জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগেই গোরুর জন্যও পোশাক কেনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল অযোধ্যা প্রশাসন। পবিত্র এই শহরের বিভিন্ন জায়গায় আশ্রিত গোরুদের শীতের পোশাক হিসেবে পাটের তৈরি কোট কিনবে অযোধ্যা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।
অযোধ্যার মিউনিসিপ্যাল কমিশনার নীরজ শুক্লা জানিয়েছেন, “গোরুদের শীত থেকে বাঁচাতে কোটগুলি আমরা কিছুদিনের মধ্যেই হাতে পাব। তিন অথবা চার দফাতে এই কোটগুলি বিতরণ করা হবে। প্রথম ধাপে বৈশিংপুর গোশালা যেখানে প্রায় ৭০০ ষাঁড় সমেত ১২০০ গবাদি পশু থাকে। শুরুতে ১০০টি বাছুরের জন্য কোটের অর্ডার দেওয়া হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে শুক্লা আরও বলেন, “নভেম্বরের শেষ নাগাদ প্রথম ধাপের পাটের তৈরি কোট গুলি পাওয়া যাবে। প্রতিটি কোট তৈরি করতে খরচ পড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বাছুরদের জন্য তিনটি স্তরে তৈরি করা হচ্ছে এই কোটগুলি। পোশাক প্রস্তুতকারকদের বলা হয়েছে, বাছুরদের পোশাকের ভেতরের অংশে একেবারে নরম কাপড় ব্যবহার করতে। পাট শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করবে।”
অযোধ্যার কমিশনার আরও জানিয়েছেন, ষাঁড় এবং গোরুদের কোটগুলির নকশাও একে অপরের থেকে একদমই আলাদা। নকশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ষাঁড়দের জন্য কোটগুলি শুধুমাত্র পাটের তৈরি হবে যেখানে গোরুদের জন্য কোটগুলিতে দুটি করে স্তর থাকবে।” গোরুর গা থেকে বারবার যাতে কোট পরে না যায় সেইজন্য কোটগুলিকে সেলাই করার ভাবনা আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুধুমাত্র পোশাক নয়, পাশাপাশি আগুন পোহানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে গোশালায়। নীরজ শুক্লা বলেছেন, “গোশালাগুলিতে অত্যধিক শীত থেকে বাঁচতে গরুদের জন্য আগুনের উত্তাপের বন্দোবস্ত থাকবে। আর যেখানে বসার জায়গা করা হবে, সেখানে উত্তাপ ধরে রাখতে নিচে খড় বিছিয়ে দেওয়া হবে।”