রাজনৈতিক যতই বিরোধিতা থাকুক না কেন প্রস্তাবিত নয়া অযোধ্যা নগরী গড়তে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পাশে চান রামলালার শহরের মেয়র ঋষিকেশ উপাধ্যায়। যুগশঙ্খকে এমনটাই জানালেন তিনি।
অযোধ্যার সীতাকুন্ড এলাকার ২৪ নম্বর ওর্য়াডে থাকেন মেয়র ঋষিকেশ উপাধ্যায়। দুই বছর আগে শহরে বিজেপির বোর্ড জিতে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ইচ্ছায় মেয়র পদ সামলানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। শনিবার সকালে তাঁর বাসভবনে বসে কথা হচ্ছিল। একান্ত আলাপচারিতায় বলছিলেন,‘ আমায় বড় দায়িত্ব দিয়েছেন যোগীজি। আদালতের রায়ের পর নয়া অযোধ্যা গড়ার কাজ কত তাড়াতাড়ি ভালো ভাবে শেষ করা যায় এটাই এখন আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।’
বাংলায় জয় শ্রীরাম ধ্বনি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন রেগে যান প্রশ্ন করে তিনি নিজেই বললেন,‘ আমি মমতা দিদিকে বলছি একবার অযোধ্যায় আসুন। আমরা যে নয়া অযোধ্যা গড়ছি তাতে দিল্লির বঙ্গভবনের মতো বাংলার পূণ্যার্থীদের জন্য বঙ্গভবন গড়ুক তৃণমূল সরকার। আমি জমির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’
অযোধ্যাকে ভারতের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে ‘অযোধ্যা তীর্থ উন্নয়ন বোড’ গঠন করতে চলেছেন যোগী সরকার। আড়াইশো কোটি টাকা এসেছে এই নগরীর পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজাতে। আর ২০০ কোটি টাকার প্রস্তাব রয়েছে বলে জানালেন ঋষিকেশবাবু।
অযোধ্যার মেয়র বলেন,‘ স্বচ্ছ ভারতের ভাবনায় এখানে প্রতিটি ঘরে জল, পাকা সড়ক, সৌর বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে। শহরের নীচ দিয়ে সব বিদুৎতের তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গ্যাসের পাইপ লাইন হচ্ছে। মোট ৮০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠছে রামায়ণ নগরী। শ্রীরাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দশরথ মেডিক্যাল কলেজ, আন্তর্জতিক মানের ফুডপ্লাজা, বিশাল পার্কি প্লেস, আন্তরাজ্য বাসস্ট্যান্ড, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু শ্রীরাম মূর্তি, রামকথা পার্ক সহ একধিক দশর্নীয় স্থান তৈরি করা হচ্ছে। অযোধ্যা রেলস্টেশনের আধুনিকীকরণ চলছে। সরযু নদীর পাড়কে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হচ্ছে দেশি-বিদেশি পর্য্টকদের জন্য। শুধু তাই নয় ১০টি বড় ফাইভ স্টার হোটেলও হচ্ছে। এক কথায় রামলালার অযোধ্যা নগরীর পুনর্নির্মাণ হচ্ছে মোদি-যোগীর ইচ্ছায়।’
এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে উপকৃত হবেন অযোধ্যার গরিব মানুষ সহ বেকার যুবকরা। এমনটাই মনে করেন ঋষিকেশবাবু। তিনি বলেন,‘ রামজন্মভুমি মুক্তি আন্দোলনে ছিলেন যোগীজি। প্রতিমাসে একবার করে উনি এখানে আসেন। ওনার মনের ইচ্ছা ছিল, মোদিজি যা সার্থক করেছেন।’
রাম জন্মভূমির আন্দোলন করতে গিয়ে কলকাতার বড়বাজারের কোঠারি পরিবারের দুই ভাইয়ের বলিদান হয়েছিল মুলায়ম সরকারের পুলিশের গুলিতে। সে কথা স্মরণ করে অযোধ্যার মেয়র বলেন,‘ রাম ও শরদের বোন পূর্ণিমা কোঠারি প্রতি বছর আসেন। আমার সঙ্গে দেখা হয়। ওই দুই ভাই ছাড়াও যাঁরা রাম জন্মভূমির ধন্য বলিদান দিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকের স্মৃতি স্মারক হবে অযোধ্যায়।‘
জানা গিয়েছে, অযোধ্যার উন্নয়নে পিছিয়ে নেই উত্তরপ্রদেশের পর্যটন দফতরও। তারা ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মাণ করবেন। এই পুরো রাস্তাতেই শ্রীরামের জীবনী আঁকা থাকবে। সুরযু নদীতে ভাসবে একটি বিলাসবহুল ক্রুজ। এই পুরো কাজ শেষ করতে সব মিলিয়ে ১০ বছর সময় লাগবে বলে জানালেন মেয়র ঋষিকেশ উপাধ্যায়।