সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল তিন মাসের মধ্যে পার্ক্সট্রিট গণধর্ষণ মামলার শুনানি শেষ করতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর তিনমাস সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে কবেই। অবশেষে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে উঠতে চলেছে ২০১২ সালের পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলা।
২০১৫ সালে এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় পার্কস্ট্রিটের নির্যাতিতা সুজেট জর্ডনের। তারপর থেকে তাঁর পরিবার আদালতের দিকেই তাকিয়ে বসে রয়েছে মেয়ের বিচারের আশায়। সোমবার সেই মামলা উঠতে চলেছে হাইকোর্টে।
২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান মহিলা সুজেট জর্ডনের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় কয়েকজন যুবক। ধর্ষণ করে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। সরকারের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে বলা হয়েছিল ‘সাজানো ঘটনা।’ তখন সবেমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস সরকারে এসেছে। বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার সোজাসুজি বলে দিয়েছিলেন, “খদ্দেরের সঙ্গে ঝামেলাকে ধর্ষণ বলে চালানো হচ্ছে!”
কিন্তু সরকারের সে সব দাবি উড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে তৎকালীন কলকাতা পুলিশের অন্যতম আধিকারিক দময়ন্তী সেন বলে দিয়েছিলেন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কাকতালীয় ভাবে তারপরই দময়ন্তীকে বদলি করে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গে।
প্রথম দিকে কিছুটা আড়ালে থাকলেও পরে জনসমক্ষে আসেন ধর্ষিতা। সরাসরি বলে দেন, “আমি কেন মুখ লুকিয়ে বাঁচব? আমি তো অপরাধ করিনি!”
এই সময়ে ধর্ষণ বিতর্কে উত্তাল দেশ। হায়দরাবাদ, উন্নাও, ভোপাল– একের পর এক গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে মানুষ। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে সারা দেশের মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে। এর মধ্যেই আগামী কাল ৭ বছরের পুরনো পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলার শুনানি হতে চলেছে কলকাতা হাইকোর্টে।