অবশেষে ১৬ দিনের অনশন ভাঙলেন সোনম ওয়াংচুক। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, লাদাখ সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের তরফে মুখোমুখি আলোচনায় বসার আশ্বাস মিলতেই ভুখ-হরতাল শিথিল করেছেন বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’।
কলকাতায় যে সময় নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে অনশন চলছিল, ঠিক তখনই দেশের আর এক প্রান্তে পৃথক দাবিদাওয়া নিয়ে অনশন বসেছিলেন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুক। লাদাখ সংক্রান্ত একাধিক দাবিতে গত ৬ অক্টোবর থেকে দিল্লির লাদাখ ভবনের সামনে অনশনে বসেছিলেন সোনম। মাঝে অনশনস্থল থেকে তাঁদের থানাতেও তুলে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। তবু পিছু হঠেননি সোনমরা। অনশনও ভাঙেননি। সোমবার অনশনের ষোড়শ দিনে সোনমদের সঙ্গে দেখা করতে যান জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের জয়েন্ট সেক্রেটারি প্রশান্ত লোখাণ্ডে। সে সময়েই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পাঠানো একটি চিঠি সোনমের হাতে তুলে দেন প্রশান্ত। চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩ ডিসেম্বর লাদাখের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের তরফে লিখিত প্রতিশ্রুতি মেলার পরেই অনশন ভেঙেছেন সোনম।
কলকাতায় জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর ঠিক এক দিন পরেই লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া-সহ একাধিক দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসেন ওয়াংচুকও। প্রথমে দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে প্রতিবাদে বসতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে অনুমতি না মেলায় লাদাখ ভবনের সামনেই অনশনে বসে পড়েন সোনমরা।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই লড়ছেন সোনম। তাঁর বক্তব্য, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হোক। লাদাখের জন্য একটি পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা হোক। সেই সঙ্গে লেহ এবং কার্গিল জেলার জন্য পৃথক পৃথক লোকসভা আসনের বন্দোবস্ত করা হোক। এমনই নানা দাবি নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন বাস্তব জীবনের ‘র্যাঞ্চো’। গত মাসেও সোনম কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, দাবি না মানা হলে ২৮ দিনের জন্য অনশনে বসবেন তিনি। এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে ২১ দিনের অনশনে বসেছিলেন ওয়াংচুক। শুধু নুন-জল ছাড়া কিছুই মুখে তোলেননি ওই ২১ দিন। দাবি ছিল একটাই, লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিতে হবে। সেই দাবিগুলিকেই আবার দিল্লির দরবারে পৌঁছে দিতে সম্প্রতি অনুগামীদের নিয়ে লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা করেন সোনম। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানার কাছে সেই পদযাত্রা থেকে সোনম-সহ অনেককে আটক করে দিল্লি পুলিশ। পরে ২ অক্টোবর রাতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পরেই অনশনে বসেছিলেন সোনমেরা।