চতুর্দশ দিনে অনশনে স্নিগ্ধা, সায়ন্তনী, অর্ণবেরা! ‘আমরণ অনশনে’ থাকা এই মুহূর্তে ৮ জন, কে কেমন আছেন?

টানা ১৩ দিন ধরে ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’ চালাচ্ছেন স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা এবং অর্ণব মুখোপাধ্যায়েরা। দিনে দিনে শরীর ভাঙছে তাঁদের, কিন্তু এখনও নিজেদের দাবিতে অনড় তাঁরা। শুধু ধর্মতলায় নয় উত্তরবঙ্গেও ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অনশনমঞ্চে অসুস্থ হয়ে কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলেও ‘শূন্যস্থান’ পূরণে অন্য কেউ অনশন শুরু করছেন। বর্তমানে মোট আট জন অনশন চালাচ্ছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই।

গত ৫ অক্টোবর থেকে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছিলেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছয় জুনিয়র ডাক্তার। তাঁরা হলেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। তার পরের দিনই অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোও। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১০ অক্টোবর রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই ডাক্তার সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অলোক বর্মাও অনশন শুরু করেছিলেন। তবে বর্তমানে দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুষ্টুপকে। পেটে যন্ত্রণা হচ্ছিল তাঁর। রবিবার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন হন পুলস্ত্য। সোমবার তনয়াকেও হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এর মাঝে ১১ অক্টোবর রাতে নতুন করে অনশনে যোগ দিয়েছেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। আর মঙ্গলবার থেকে অনশনে বসেছেন রুমেলিকা কুমার এবং স্পন্দন চৌধুরী। উত্তরবঙ্গে সন্দীপ মণ্ডল নামে এক জুনিয়র ডাক্তার সোমবার থেকে অনশন করছেন।

শুধু জল খেয়ে দিন কাটছে অনশনকারীদের। ১৩ দিন ধরে এক টুকরো খাবারও মুখে তোলেননি স্নিগ্ধা, সায়ন্তনী, অর্ণবেরা। শরীর দুর্বল, মাথা ঘুরছে। কখনও কখনও উঠে বসতে পারছেন, কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই দুর্বলতার কারণে শুয়েই কাটচ্ছে তাঁদের দিন। স্নিগ্ধাদের পাশাপাশি অন্য অনশনকারীদের শরীর ভাঙছে। আপাতত দিনে দু’বার করে অনশনকারীদের রক্তচাপ, নাড়ির গতি, ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ (সিবিজি) মাপা হচ্ছে। রোজকার মতো শুক্রবারও অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। তবে সেই রিপোর্ট যথেষ্টই আশঙ্কাজনক।

অনশনকারীরা কে কেমন আছেন?

অর্ণব মুখোপাধ্যায়: এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগের পিডিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া

রক্তচাপ: ১২৮/৮৬

নাড়ির গতি: ৬৬

সিবিজি: ৬৪

মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি

সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা: কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া

রক্তচাপ: ১০৪/৭০

নাড়ির গতি: ৮৮

সিবিজি: ৬১

মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি

স্নিগ্ধা হাজরা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার

রক্তচাপ: ১০০/৭৪

নাড়ির গতি: ৮৮

সিবিজি: ৬২

মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি

পরিচয় পণ্ডা: ভিআইএমএস (শিশুমঙ্গল) হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র

রক্তচাপ: ১৩৪/৯০

নাড়ির গতি: ৮০

সিবিজি: ৬৩

মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি

আলোলিকা ঘোড়ুই: কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগে পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্রী

রক্তচাপ: ১১০/৭২

নাড়ির গতি: ৯৬

সিবিজি: ৬৩

মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি

রুমেলিকা কুমার: অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্‌থের পভার্টি মেডিসিনের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া

রক্তচাপ: ১১৪/৭৮

নাড়ির গতি: ৮৪

সিবিজি: ৬৯

মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি

স্পন্দন চৌধুরী: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র

রক্তচাপ: ১১২/৮৬

নাড়ির গতি: ৬৬

সিবিজি: ৬৪

সন্দীপ মণ্ডল: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি (নাক, কান, গলা সংক্রান্ত) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র

রক্তচাপ: ১১৬/৮০

নাড়ির গতি: ৮৮

সিবিজি: ১১৭

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.