ময়নাতদন্তের পর কৃষ্ণনগরের বাড়িতে কাচের শববাহী গাড়িতে করে আনা হয়েছিল তরুণীর দেহ। কন্যার সেই দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন বাবা। তার পরেই তিনি জ্ঞান হারান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ রয়েছেন তরুণীর বাবা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ শ্মশানের উদ্দেশে দেহ নিয়ে রওনা হয় তরুণীর পরিবার। রাত ৮টার আশপাশে ওই শ্মশানেই শেষকৃত্য হয় তাঁর।
বুধবার কৃষ্ণনগরের এক মণ্ডপের কাছে তরুণীর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার পরেই কৃষ্ণনগরে তরুণীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। সেখানে কন্যার দেহ দেখে জ্ঞান হারান তাঁর বাবা। নবদ্বীপ শ্মশানে শেষকৃত্য হয়েছে তরুণীর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গার ধারে শ্মশানে মৃতার শেষকৃত্য করতে চেয়েছিল বলে কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপে দেহ নিয়ে যায় তারা।
মৃত তরুণীর মায়ের দাবি, গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁরা। আঙুল তুলেছেন তরুণীর প্রেমিকের দিকে। ওই যুবককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালত সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে তাঁকে। ধৃত যুবক যদিও তরুণীর মায়ের অভিযোগ মানেননি। যুবকের মা-ও সেই দাবি খারিজ করে জানিয়েছেন, ঘটনার রাতে, মঙ্গলবার তাঁর ছেলে সিনেমা দেখে এসে বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। সিটের নেতৃত্বে রয়েছেন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার নেপথ্যে সব সম্ভাব্য কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি। সিআইডির সাহায্য নিচ্ছি। ঘটনাস্থলে এডিজি (সিআইডি) এসেছেন দল নিয়ে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞেরা এসেছেন। আমরা আশাবাদী, সত্য প্রকাশ পাবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল (জেএনএম) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করে বেরিয়ে চিকিৎসক সৌম্যজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জীবিত অবস্থায় তরুণীকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। তবে অ্যাসিড বা অন্য কোনও রাসায়নিক ঢেলে তরুণীকে পোড়ানো হয়েছিল বলে প্রমাণ মেলেনি। আরও কিছু তদন্ত বাকি আছে, জানান ওই চিকিৎসক।