‘আমরণ অনশন’-এ থাকতে থাকতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে কমবেশি সকলেরই। আপাতত ধর্মতলার অনশনমঞ্চে সাত জন জুনিয়র ডাক্তার অনশনে রয়েছেন। পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এক জন জুনিয়র ডাক্তার ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যাচ্ছেন। কলকাতা ও শিলিগুড়ি দুই জায়গাতেই একাধিক জুনিয়র ডাক্তার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কারও কারও শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বটে, কিন্তু হাসপাতাল থেকে এখনও কেউ ছাড়া পাননি। কলকাতার চার জন এবং উত্তরবঙ্গের দু’জন জুনিয়র ডাক্তার বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদেরও শরীর ক্রমশ ভাঙতে শুরু করেছে। দুর্বল হচ্ছে শরীর। বুধবার রাত ৮টায় ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’-এ বসে থাকা সাত জন জুনিয়র ডাক্তারের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে।
কলকাতার ধর্মতলায় বসে থাকা অনশনকারীরা কে কেমন আছেন?
অর্ণব মুখোপাধ্যায়: এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
রক্তচাপ: ১২০/৯০
নাড়ির গতি: ৮৮
সিবিজি: ৬৪
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা: কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া
রক্তচাপ: ১১০/৭৮
নাড়ির গতি: ৮০
সিবিজি: ৬৪
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
স্নিগ্ধা হাজরা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার
রক্তচাপ: ৯৮/৭৮
নাড়ির গতি: ৮২
সিবিজি: ৬৩
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
পরিচয় পণ্ডা: ভিআইএমএস (শিশুমঙ্গল) হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র
রক্তচাপ: ১২৬/৮০
নাড়ির গতি: ৮৪
সিবিজি: ৭৩
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
আলোলিকা ঘোড়ুই: কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগে পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্রী
রক্তচাপ: ১০০/৭০
নাড়ির গতি: ৯২
সিবিজি: ৬৪
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
রুমেলিকা কুমার: অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থের পভার্টি মেডিসিনের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া
রক্তচাপ: ১০০/৭০
নাড়ির গতি: ৭০
সিবিজি: ৮৬
স্পন্দন চৌধুরী: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র
রক্তচাপ: ১০৮/৮২
নাড়ির গতি: ৭২
সিবিজি: ৮৪
স্পন্দন এবং রুমেলিকা দু’জনেই মঙ্গলবার বিকেল থেকে অনশনমঞ্চে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের দু’জনকে বাদে বাকি পাঁচ জনের মূত্রেই কিটোন বডি মিলেছে। যা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে আন্দোলনকে সমর্থন জোগানো নাগরিক সমাজ। যদিও অনশনকারীরা এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড়। ১০ দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শরীর দুর্বল হলেও মনোবলে খামতি নেই। স্নিগ্ধা, অর্ণব এবং সায়ন্তনী অনশনমঞ্চে একে বারে শুরুর দিন থেকে রয়েছেন। ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা থেকে ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন তাঁরা। এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন। বুধবার তাঁদের অনশনের দ্বাদশ দিন। আলোলিকা ও পরিচয় ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন ১১ অক্টোবর থেকে।
এ ছাড়া অনিকেত মাহাতো, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, পুলস্ত্য আচার্য, তনয়া পাঁজাও অনশনে বসেছিলেন। তাঁরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও অনশনে বসেছিলেন দুই জুনিয়র ডাক্তার অলোক বর্মা এবং সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরাও এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গত ১৪ অক্টোবর থেকে শিলিগুড়িতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ মণ্ডল। বুধবার দুপুরের তথ্য অনুযায়ী সন্দীপের রক্তচাপ ১৩০/৭৮, নাড়ির গতি ১০২ এবং সিবিজি ৪৮ ছিল।