ভারতে খেলতে এসে, চোখের জলে বিদায় নিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর বাংলাদেশ। টেস্টের পর টি-২০ আই সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ক্রিকেট পাগল পদ্মাপারের দেশ। এই ফলাফলের পর আর কোচকে রেয়াত করল না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (BCB)। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের (Chandika Hathurusingha) পত্রপাট বিদায় দিল তারা। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সংবাদ বৈঠক করে নতুন কোচের নাম ঘোষণা করে দিলেন। হাথুরুসিংহের জুতোয় পা গলালেন ফিল সিমন্স (Phil Simmons)। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। আগামী সপ্তাহে শুরু হতে চলা দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে বাংলাদেশের দায়িত্ব নেবেন সিমন্স।
কোচ হিসেবে সিমন্সের বায়োডেটা বেশ লম্বা। ক্রিকেট ছাড়ার পর সিমন্সের কোচিং কেরিয়ার শুরু হয়েছিল জিম্বাবোয়ের হারারের একটি অ্যাকাডেমিতে। এরপর ২০০৪ সালে জিম্বাবোয়ের কোচ হন তিনি। এর পরের বছর আগস্টে চাকরি যায় তাঁর। জিম্বাবুয়ে কোচের পদ থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর দীর্ঘ বিরতি নেন সিমন্স। ২০০৭ বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব নিয়েছিলেন আয়ারল্যান্ডের। ২০১৫ সাল পর্যন্ত তাঁর অধীনে ২২৪ ম্যাচ খেলে আইরিশরা। যা কোনও জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে দায়িত্ব পালনের রেকর্ডও। সিমন্সের অধীনেই আয়ারল্যান্ড আইসিসির প্রতিটি ইভেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১১ বিশ্বকাপে তাঁর সময়েই ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড।
এর চার বছর পর ২০১৫ বিশ্বকাপে আইরিশদের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর সময়েও কোচ ছিলেন সিমন্স। ২০১৫-১৬ পর্যন্ত নিজের দেশেই কোচিং করান। পরের বছরই টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের কোচিংও করিয়েছেন তিনি। তাঁর কোচিংয়েই আফগানরা প্রথম টেস্ট জেতে। রশিদ খানদের সঙ্গে দুই বছর কাটিয়ে ২০১৯ সালে ফের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ হন সিমন্স। ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ৬১ বছরের কোচ ছিলেন পাপুয়া নিউগিনিতে। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। এখন দেখার সিমন্স বাংলাদেশের ভাগ্য় বদলাতে পারেন কিনা!
নয়ের দশকের প্রাক্তন ওপেনার সিমন্স। ভিভ রিচার্ডসের নেতৃত্বাধীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তাঁর অভিষেক হয়েছিল। আহামরি ক্রিকেটার তিনি কোনও কালেই ছিলেন না। মন্দের ভালো বলা যায়। ২৬ টেস্টের কেরিয়ারে ৪৭ ইনিংসে বেশির ভাগ সময়ই ওপেন করেছেন। ১ সেঞ্চুরি ও ৪টি ফিফটি-সহ ২২.২৬ গড়ে করেছেন ১০০২ রান করেছেন। বোলিংয়ে মাত্র ৪ উইকেট। ওয়ানডেতে অবশ্য রেকর্ড কিছুটা ভালো তাঁর। ১৪৩ ম্যাচে ১৩৮ ইনিংসে ২৮.৯৩ গড়ে ৩৬৭৫ রান করেছেন। ৫ সেঞ্চুরি ও ১৮ ফিফটি রয়েছে তাঁর। ১০৩ ইনিংসে বোলিং করে নিয়েছেন ৮৩ উইকেট।