জুনিয়র ডাক্তারদের ‘আমরণ অনশন’কে সংহতি জানিয়ে রবিবার ঘরে ঘরে অরন্ধনের ডাক দিলেন ডাক্তারেরাই। নবমীর রাতে ধর্মতলার সমাবেশে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করেছেন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত কর।
শুক্রবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে ধর্মতলায় ‘মহাসমাবেশে’র ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’, জুনিয়র ডাক্তারদের মিলিত মঞ্চের তরফে শুক্রবার সকালে আন্দোলনকারী চিকিৎসক দেবাশিস হালদার নাগরিক সমাজকে সংহতির বার্তা নিয়ে আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ধর্মতলার অনশনমঞ্চ সংলগ্ন অঞ্চলেই সমাবেশের ডাক দেন তাঁরা। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সন্ধ্যা থেকেই হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান ধর্মতলায়। সেই মঞ্চ থেকে শুক্রবার রাতে চিকিৎসক অনিকেত উপস্থিত জনগণকে অনুরোধ করেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে আগামী রবিবার, একাদশীর দিন আপনারা ঘরে ঘরে অরন্ধন কর্মসূচি পালন করুন।’’ এ ছাড়া, রবিবার সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) -র বেঙ্গল শাখাও কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাক্তার দ্বৈপায়ন মজুমদার জানিয়েছেন, আগামী রবিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গোটা রাজ্যে জুড়ে এই অনশন চলবে। তিনি আরও জানান, এর পরেও কোনও সুরাহা না হলে বিকল্প পন্থা ভাববেন তাঁরা। সেই সঙ্গে আগামী সোমবার থেকে আংশিক কর্মবিরতি পালন করবেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীরাও। রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মীদের পাশে দাঁড়াতেই তাঁদের এই উদ্যোগ।
১০ দফা দাবিতে গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছ’জন চিকিৎসক। পরদিন যোগ দেন অনিকেত মাহাতো, কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে আরজি করে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার থেকে অনিকেতের অবস্থা খানিক স্থিতিশীল হলেও এখনও পর্যবেক্ষণেই রয়েছেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে স্নিগ্ধারও। কিন্তু মনোবল কমেনি কারোরই। বরং শুক্রবার রাতে নতুন করে অনশনে যোগ দিয়েছেন আরও দুই জন। তাঁরা হলেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। পরিচয় শিশুমঙ্গল হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। তিনি ওই হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি-র দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। আর কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রথম বর্ষের পিজিটি আলোলিকা। অর্থাৎ বর্তমানে ওই মঞ্চে অনশনরত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট। এ ছাড়া, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই জুনিয়র ডাক্তারও ‘আমরণ অনশন’ করছেন।